ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গীদের বিরুদ্ধে ফুঁসছে দেশ, চলছে সভা সমাবেশ

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১ আগস্ট ২০১৬

জঙ্গীদের বিরুদ্ধে ফুঁসছে দেশ, চলছে সভা সমাবেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জঙ্গীদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে পুরো দেশ। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সর্বত্রই প্রতিদিন চলছে সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন। এসব সমাবেশ থেকে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সচেতন থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। জানিয়ে দেয়া হচ্ছে, কোন কারণেই হতাশ হওয়া চলবে না। উগ্রবাদী ও জঙ্গীগোষ্ঠীর প্রধান টার্গেট হতাশাগ্রস্ত তরুণ প্রজন্ম। কেউ কেউ বলছেন, নিজের ধর্ম কর্ম পালন করা ভাল, তবে আকস্মিক অতি ধার্মিক হয়ে ওঠার চেষ্টা বৃথা। আকস্মিক ধার্মিকতা অনেক সময় বিপথের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এসব সমাবেশ থেকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, জামায়াত-শিবির দেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিই এখন জঙ্গীরূপ ধারণ করেছে। তাই জামায়াত-শিবির পরিচালিত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম জনসম্মুখে প্রকাশ এখন সময়ের দাবি। এমনকি এদের সব সম্পত্তি বাজেয়াফতের দাবিও উঠেছে। এদিকে জঙ্গী ও বিএনপি দুটি সমাজের বিষফোঁড়া বলে মন্তব্য করে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘এ বিষফোঁড়া নির্মূলের দক্ষ সোশ্যাল সার্জন হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’ এ সময় বক্তারা বলেন, দেশের মানুষ জঙ্গীদের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে, সম্মিলিত শক্তির কাছে অন্ধকারের পরাজিত শক্তি পুনরায় পরাজিত হতে বাধ্য। এরা নির্মূল হবেই। রবিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘জামায়াত-শিবির পরিচালিত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ ও জঙ্গীদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনে’ বক্তারা বলেন, দেশকে পাকিস্তান বানাতে চায় জামায়াত-শিবির। কিন্তু কোনক্রমেই তারা সফল হবে না। বাংলার মানুষ আজ তাদের রুখে দাঁড়াচ্ছে। বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমে স্বাধীনতা বিরোধী ওই অপশক্তিকে যেকোন মূল্যে নিঃশেষ করে দেয়া হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদবিরোধী শ্রমিক পরিষদের উদ্যোগে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সংগঠনটির সমন্বয়কারী মোঃ ইনসুর আলী বলেন, একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের দল জামায়াত-শিবির দেশে পাকিস্তানী ভাবধারা প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পরিচালনার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আয় করছে। এছাড়া তারা অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে দেশের যুব সমাজকে ব্যবহার করে মানুষ হত্যা ও জঙ্গী হামলার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। তারা দেশকে একটি জঙ্গীবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করতে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মানববন্ধনে বক্তারা জামায়াত-শিবির পরিচালিত সব প্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি জানান। মানববন্ধনে জামায়াত-শিবির পরিচালিত ৯ কোচিং সেন্টার, ৯ এনজিও, ১১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৯ ব্যাংক, হাসপাতাল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ৬ গণমাধ্যম ও প্রকাশনা, ২২ সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের নাম তুলে ধরা হয়। এতে বক্তব্য রাখেনÑ আজহার আলী, নূরুল ইসলাম, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ মোশারফ হোসেন, মোঃ আমির সেন, আর এ জামান, রেজাউল করীম, হারুন-অর-রশীদ। এদিকে জঙ্গী ও বিএনপি দুটিকেই সমাজের বিষফোঁড়া বলে মন্তব্য করেছেন নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। শনিবার এক অনুষ্ঠানে নৌ-পরিবহনমন্ত্রী বলেন, জঙ্গী যেমন সমাজের বিষফোঁড়া, তেমনি বিএনপিও হচ্ছে সমাজের বিষফোঁড়া। আর এ বিষফোঁড়া নির্মূলের দক্ষ সোশ্যাল সার্জন হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীর এফডিসি চত্বরে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলন’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ও সঙ্গীতে কালচারাল এ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, সমাজ থেকে একদিন ইভটিজিং, এডিস-কলেরা নির্মূল হয়েছে। তেমনি একজন দক্ষ সোশ্যাল সার্জন হিসেবে সমাজের বিষফোঁড়া বিএনপি ও জঙ্গীবাদকেও প্রধানমন্ত্রী দক্ষ হাতে নির্মূল করবেন। তিনি বলেন, জঙ্গীবাদ মেকাবেলার জন্য শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাস করে তাদের প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। তাই আজকে সারাদেশে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি জামায়াতই জঙ্গীবাদের মদদদাতা। এই বিএনপিই সারাদেশে জঙ্গী হামলা চালাচ্ছে। জঙ্গীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জঙ্গীরা জান্নাতে যাওয়ার চিন্তা করছে। তাদের জাহান্নামেও স্থান হবে না। জঙ্গীরা বাংলার মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। তারা কাফের। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এজাহিকাফ’র সভাপতি রেদোয়ান খন্দকার, চিত্রনায়ক রাশেদ মোর্শদ, আওয়ামী লীগ নেতা নুর উদ্দিন মোল্লা। অন্যদিকে দেশের প্রতি জেলা-উপজেলায় প্রতিদিনই জঙ্গীবাদ বিরোধী সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জঙ্গীদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিরোধে এগিয়ে আসছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। রবিবার দিনাজপুর থেকে এক অনুষ্ঠানে জঙ্গীবাদ বিরোধী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও অনুষ্ঠিত হয়েছে এক মানববন্ধন।
×