ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আজ সেই ঐতিহাসিক ছিটমহল মুক্ত দিবস

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১ আগস্ট ২০১৬

আজ সেই ঐতিহাসিক ছিটমহল মুক্ত দিবস

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ দেশের ভেতরে থাকা ১১১ সাবেক ছিটমহলে আজ সোমবার পালন হচ্ছে ঐতিহাসিক ‘ছিটমহল মুক্ত দিবস’। প্রথম ছিটমহল মুক্ত দিবস উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। রবিবার রাত ১২টা এক মিনিটে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে বাংলাদেশের নতুন এই নাগরিকরা অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। এরপর প্রতিটি হিন্দু বাড়িতে মঙ্গলপ্রদীপ ও মুসলিম বাড়িতে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়। একই সঙ্গে প্রতিটি সড়কে বিদ্যুতের আলোও জ্বলে। আকাশে ওড়ানো হয় মঙ্গল ফানুস। রাতভর চলে নাচ-গানসহ নানা অনুষ্ঠান। রাত ১২টা এক মিনিটে প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। সোমবার সকালে প্রতিটি বিলুপ্ত ছিটমহলে জাতীয় সঙ্গীতের পর ওড়ানো হয় জাতীয় পতাকা। এছাড়া দিনব্যাপী থাকছে আলোচনাসভা, আনন্দ র‌্যালি, প্রীতি ফুটবল ম্যাচ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ৬৮ বছরের নাগরিকত্বহীন জীবনের অবসান ঘটানোর প্রতীক হিসেবে দু’দেশের সাবেক ছিটমহলবাসী এসব কর্মসূচীর আয়োজন করে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৬২ ছিটমহল ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে স্থলসীমান্ত ও ছিটমহল বিনিময় চুক্তির অধীনে হস্তান্তর হয়। ৬৮ বছরের ছিটমহল সমস্যার ইতি ঘটে। বাংলাদেশের ভেতরে থাকা ভারতের ১১১ ছিটমহল এখন বাংলাদেশের ভূখ- এবং এর বাসিন্দারা এদেশের নাগরিক। গত এক বছরে মূল ভূখ-ের মানুষ তাদের সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক গড়ে নিয়েছে। একইভাবে ভারতের ভেতরে থাকা ৫১ বাংলাদেশের ছিটমহল ভারতের হয়ে গেছে। ছিটমহল বিনিময় চুক্তিতে উভয় ছিটের মানুষ ভারত ও বাংলাদেশের যে কোন রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নিতে পারত। এই নাগরিকত্ব গ্রহণের সুযোগে বাংলাদেশের ৫৯ ছিটমহল হতে ৯৮৭ নারী-পুরুষ ভারতের নাগরিকত্ব নিয়ে সেদেশে চলে গেছে। কিন্তু ভারতের ভেতরে থাকা ৫১ বাংলাদেশের ছিটমহলের কোন নাগরিক বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেনি। উভয় দেশের সরকার সাবেক ছিটমহলের ভূমি উন্নয়ন ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ব্যাপক কর্মকা- শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিটমহলগুলোর জন্য দুশ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ করে। সেই অর্থে ছিটমহলে ব্যাপক উন্নয়ন শুরু হয়। উন্নয়ন কাজগুলো ছিটমহলে এক বছরে কোন কোন কাজ এখন দৃশ্যমান হয়েছে। ৬৮ বছর পর ছিটমহল সমস্যা সমাধান হওয়ায় রবিবার রাত ১২টা এক মিনিটে দিনটিতে বিলুপ্ত ছিটমহলের প্রত্যেকটি মুসলিম বাড়িতে ৬৮টি মোমবাতি আর হিন্দু বাড়িতে ৬৮টি মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালানো হয়। এর পার গাওয়া হয় জাতীয় সঙ্গীত। ছিটমহলের প্রতিটি সড়ক বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করা হয়। আকাশে ওড়ানো হয় মঙ্গল ফানুস। রাতভর চলে নাচ-গানসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি যৌথভাবে বাংলাদেশের মধ্যে ১১১ ছিটমহলে এবং ভারতে ৫১ ছিটমহলে এসব অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। ৬৮ বছরের নাগরিকত্বহীন জীবনের অবসান ঘটানোর প্রতীক হিসেবে দু’দেশের ছিটমহলবাসী এই অভিনব কর্মসূচী পালন করে বলে জানান ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির বাংলাদেশের গোতামারী বিলুপ্ত ছিটমহলের নেতা মোঃ আজিজুর ইসলাম। পহেলা আগস্ট সূর্য ওঠার পর সকালে বিলুপ্ত ছিটমহলমুক্ত দিবস পালনে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচী পালন করে সাবেক ছিটমহলবাসী। এছাড়া প্রতিটি বিলুপ্ত ছিটমহলে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে এক বছরে প্রশাসনিক কার্যক্রম ও বিলুপ্ত ছিটমহলের উন্নয়নে নেয়া নানা উন্নয়ন কর্মকা- সম্পর্কে আলোচনা হবে। প্রথম বর্ষপূর্তির দিনটি ঘিরে দুদেশেরই বিলুপ্ত ছিটমহলে ব্যাপক অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই ছিল ছিটমহলে বসবাসকারী মানুষের একটি ঐতিহাসিক দিন। ১৯৭৪ সালে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির পর থেকে দু’দেশের ১৬২ ছিটমহলের নাগরিকত্বহীন মানুষ নিজের পরিচয় ও নিজ দেশের নাগরিকত্বর জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিটমহল বিনিময়ের বীজ বপন করে গিয়েছিলেন। তারা কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিটমহলের বন্দী মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সীমান্ত চুক্তি ও ছিটমহল বিনিময় চুক্তির বাস্তবায়ন করে। দীর্ঘদিন ঝুঁলে থাকা একটি সমস্যার সমাধান হয়। সেই কারণে দুদেশের ১৬২ ছিটমহলে বসবাসকারী রাষ্ট্রহীন মানুষগুলো তাদের নাগরিক অধিকার ফিরে পায়। তাই তারা ৩১ জুলাই মধ্যরাতের পরই প্রতিটি ছিটমহলের মানুষ মুক্তদিবস হিসেবে প্রথমবর্ষ পালন শুরু করে। দেশের ১১১ সাবেক ছিটমহলের মধ্যে লালমনিরহাটের ৫৯টির মধ্যে পাটগ্রামে ৫৫, হাতীবান্ধায় দুটি ও লালমনিরহাট সদর উপজেলায় দুটি রয়েছে। গত এক বছরে বিলুপ্ত ছিটের মানুষকে মূলধারার সঙ্গে যুক্ত করতে নানা উন্নয়নমূলক কর্মকা- হাতে নেয়া হয়েছিল। মৎস্য বিভাগ ১১.০২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্প গ্রহণ করে। ১৭৮ পুরুষ ও ৫৭ মহিলাকে মাছচাষে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ঋণদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিলুপ্ত ছিটমহলে মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় ২২টি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করে। যুব উন্নয়ন ৪৭ পুরুষ ও ১০৩ মহিলাকে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়। স্বাস্থ্য বিভাগ বিলুপ্ত ছিটমহলে চারটি ক্লিনিক স্থাপন করে। বিদ্যুত বিভাগ ১৫.২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বিলুপ্ত ৩৫ ছিটমহলে বিদ্যুত লাইন স্থাপন ও সংযোগের কাজ করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ১১৪২.৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বিলুপ্ত ছিটমহল বাঁশকাটার ঘোষপাড়া, দয়ালটারী ও বোস্টারী এলাকায় ধরলা নদীর বাম ও ডান তীর সংরক্ষণ কাজ চলছে। জনস্বাস্থ্য বিভাগ বিলুপ্ত ছিটমহলে ৯৮টি অগভীর নলকূপ ও ৯০টি স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন নির্মাণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ ১২.৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে বিলুপ্ত ছিটমহলে ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করেছে। প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ ২৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে বিলুপ্ত ছিটমহলে চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। এলজিইডি বিলুপ্ত ছিটমহলে ৩৪.৬১৫ কিমি রাস্তা নির্মাণ করে। ছিটমহলে শহীদ নির্মাণ, মসজিদ ও মন্দির নির্মাণ করা হয়। এছাড়াও রোটারী ক্লাব বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে নলকূপ বিতরণ করে, দিয়েছে স্যানেটারি ল্যাট্রিন। পাটগ্রামের শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ১৬নং ভোটমারী ছিটমহলে একটি স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপিত হয়েছে। বাঁশপচাই ভিতরকুটি ছিটমহলের উন্নয়ন কমিটির সদস্য মোঃ আনছার আলী জানান, ছিটের মানুষ নতুন করে স্বপ্ন দেখছে উন্নয়নের। বিদ্যুত এসেছে, কিন্তু এখনও রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়নি। সরকারী চাকরির ক্ষেত্রে ছিটমহলের মানুষের অগ্রাধিকার পাওয়ার সরকারের ঘোষণা বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক জানান, বিলুপ্ত ছিটমহলে প্রথমবারের মতো মুক্তদিবস পালন হতে যাচ্ছে। প্রতিটি ছিটমহলের অনুষ্ঠানে পুলিশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। রাতে পুলিশের টহল অব্যাহত থাকবে। পঞ্চগড় ॥ পঞ্চগড়ের ৩৬ ছিটমহলের ভূখ-ে বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা উত্তোলিত হওয়ার পরপরই প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির সমীকরণে মানুষের আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে এক বছরেই। পূরণ হয়েছে সারাজীবনেই পিছিয়ে থাকা সুবিধাবঞ্চিত এই মানুষগুলোর মৌলিক অধিকারও। এখন স্বাধীন এই ভূখ-ের শিশুরা স্কুলে যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বিদ্যুতসহ সরকারী সকল সুবিধার আওতায় এসেছে এসব ছিটমহলের মানুষ। যুগের পর যুগ অবহেলিত এসব জনপদ এবং বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ শুরু করেছে সরকার। জেলার বিলুপ্ত ৩৬ ছিটমহলে রাস্তাঘাট ও ব্রিজ-কালভার্ট উন্নয়নে এলজিইডি ৮২ দশমিক ৬৬ কোটি এবং জেলা পরিষদ ১৬২ কোটি টাকার ২৫ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে কিছু প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। এছাড়া সরকারী অর্থায়নে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ মসজিদ-মন্দির হয়েছে। বিদ্যুত সুবিধার আওতায় আলোকিত হয়েছে অবহেলিত এই জনপদ। সব মিলিয়ে বেশ খুশি বিলুপ্ত ছিটমহলের নাগরিকরা। ‘প্রত্যাশার ঘর’ প্রাপ্তি দিয়ে ভরে গেছে এক বছরেই। পেয়েছে কলেজ, প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসাসহ সকল ধর্মীয় উপাসনালয়। থ্রিজি ইন্টারনেট ও বিদ্যুতের আলো জ্বলছে ঘরে ঘরে। ছিটমহলের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী। নাগরিক অধিকার কমিটির নেতা মফিজার রহমান জানান, ঐতিহাসিক ছিটমহল বিনিময় চুক্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে নানা আয়োজনে প্রথম বর্ষপূর্তি পালন করা হচ্ছে। গত এক বছরে ৩৬ ছিটমহলে ৩২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে হাইস্কুল ১৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১ এবং কলেজ চারটি। নাজিরগঞ্জ দইখাতায় ইন্দিরা-মুজিব কলেজ, গারাতী ছিটমহলে মফিজার রহমান কলেজ, শালবাড়ি ছিটমহলে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম কলেজ। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থানীয় নাগরিকরা জমি দান করে প্রতিষ্ঠানগুলো স্থাপন করেছেন। মফিজার রহমান কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী, সাবেক ছিটমহলের নাগরিক মাহফুজা আক্তার এবং মনিরা বেগম। তারা জানান, বাংলাদেশ পেয়েছি বলে লেখাপড়া করার সুযোগ পাচ্ছি। না হলে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে লেখা পড়া সম্ভব হতো না। নীলফামারী ॥ দেখতে দেখতে ৩৬৫ দিন অতিবাহিত হলো। ৬৮ বছরের বন্দী জীবনের বঞ্চনার অবসানে মুক্তি পাওয়ার একটি বছর। তাদের এই মুক্তির এক বছরের জয়গানে বিলুপ্ত ছিটবাসীর মনে প্রাণে সেøাগান উঠেছে শেখ হাসিনা আমাদের মা জননী, আমরা তার মুক্তি সেনার দল। ১১১ বিলুপ্ত ছিটমহলের মধ্যে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় চারটি রয়েছে। ৬৮ বছরের মুক্তির আনন্দের প্রথম বর্ষপূর্তিতে দিনটির স্মরণে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী নানা আয়োজনে পালন করছে। গত এক বছরে চার বিলুপ্ত ছিটমহলের চেহারা অনেকটাই পাল্টে দিয়েছে সরকারের ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ। চার ছিটমহলে ১১৯ পরিবারের ৫৪৫ জন বসবাস করে। এই চার ছিটমহল থেকে কেউ ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেনি। এই চার বিলুপ্ত ছিটমহলের সঙ্গে খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের সীমানা জটিলতায় উচ্চ আদালতে রিট মামলা থাকায় এখনও তারা ভোটার হতে পারেনি। তবে উন্নয়ন থেমে নেই। প্রতিটি বাড়িতে স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ও বিশুদ্ধ পানির জন্য নলকূপ স্থাপন করে দেয়া হয়। প্রতিটি পরিবারের বাড়িতে পল্লী বিদ্যুত সমিতির পক্ষে বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া এ পর্যন্ত চার দশমিক ১৬০ কিলোমিটার সড়ক পাকা করা হয়েছে। পানি নিষ্কাশনে নির্মাণ করা হয়েছে ইউ ড্রেন। মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের উদ্যোগে ২৬টি সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। ভিজিডি কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। ভিজিএফে সকল পরিবার চাল পাচ্ছে। একটি বাড়ি একটি প্রকল্প থেকে তিনটি সমিতি তৈরি করে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পল্লী উন্নয়ন বোর্ড ৩০ জনকে শস্য উৎপাদন ও সংরক্ষণের ওপর প্রশিক্ষণ দিয়েছে। উপজেলা সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে ১৮ জনকে বয়স্কভাতা, ছয়জনকে বিধবা ভাতা ও ছয়জনকে প্রতিবন্ধী ভাতা বিতরণ করা হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের উদ্যোগে গাভী পালন ও মুরগী পালনের জন্য ৬০ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। উপজেলা সমবায় বিভাগ দুটি সমবায় সমিতি গঠন করে দিয়েছে। ছিটমহলবাসীদের তথ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য রহমানগঞ্জ বাজারে ডিজিটাল সাবসেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে এক হাজার ৮৬০টি ফলদ ও দুই হাজার ৬শ বনজ চারা রোপণ করে দেয়া হয় প্রতিটি বাড়িতে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, বিলুপ্ত চার ছিটমহলে সরকারীভাবে ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। অনেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। নীলফামারীর জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন বলেন, বিলুপ্ত ছিটমহলের সরকারী সকল সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর ছিটমহলবাসীদের উন্নয়নে সকল বিষয়ে মনিটরিং করছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে ছিটমহলে বিলুপ্ত হবার প্রথম বর্ষপূর্তি পালনে র‌্যালি, আলোচনাসভা, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
×