ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

লক্ষ্য মার্কিন রক্ষণশীল খ্রীস্টানদের প্রভাব ঠেকানো

শিশুদের যুক্তিবাদী করছে স্যাটানিক টেম্পল

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ১ আগস্ট ২০১৬

শিশুদের যুক্তিবাদী করছে স্যাটানিক টেম্পল

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসচুসেটস অঙ্গরাজ্যের উত্তর উপকূলীয় শহর সালেম। সময়টা ছিল গ্রীষ্মকালের এক রাত। হাজির ছিলেন স্যাটানিক টেম্পলের নেতৃবৃন্দ। সপ্তদশ শতকে নির্মিত গির্জার একটি কক্ষে তার জড়ো হয়েছিলেন। তারা একটি ভিডিও দেখছিলেন। যেখানে শিশুরা একটি সুদৃশ্য খুঁটি ধরে নাচানাচি করছে। এক ভাঁড়ের মুখের ওপর দিয়ে মাকড়সা হাঁটছে। পেছনে থেকে উচ্চস্বরে অদ্ভুত আওয়াজ আসছে। সব মিলিয়ে এক ভৌতিক পরিবেশ। ভিডিওটি দেখে স্যাটানিক টেম্পলের নেতৃবৃন্দ সায় দিলেন চলবে। স্যাটানিক টেম্পল যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিক অধিকারকর্মীদের একটি সংগঠন। যে ভিডিও নিয়ে তারা কাজ করছিলেন সেটি একটি প্রোমোশনাল ভিডিও। ইভাঞ্জেলিক খ্রীস্টানদের (রক্ষণশীল খ্রীস্টান) পাবলিক স্কুল রয়েছে। সেখানে ধর্মকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পড়ানো হয়। একদেশদর্শী শিক্ষা ব্যবস্থার বিপরীতে স্যাটানিক টেম্পল শিশুদের জন্য চালু করেছে আফটার স্কুল স্যাটান ক্লাব। এই স্কুলের বৈশিষ্ট্য হলো এখানে শিশুদের একটি বিষয়কে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণে দেখতে শিখানো হয়। স্যাটানিক টেম্পলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ডাফ মেসনার বলেন, ‘একটি বিষয়কে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণে দেখা যায় এটি শিশুদের শেখানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারা বিভিন্ন চিন্তার থেকে একটিকে বেছে নিতে পারে।’ সোমবার সালেমের প্রিন্স জর্জ’স কাউন্টিতে এই স্কুলের একটি শাখা খোলা হয়েছে। এর আগে নিউইয়র্ক, বস্টন, মিনিয়াপেলিস, নিউ অর্লিন্স ও পিটসবার্গসহ বিভিন্ন শহরে তারা স্কুল খুলেছে। দেশজুড়ে স্কুল খোলার উদ্দেশ্যেই প্রোমোশনাল ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্র ও গির্জার মধ্যে বিচ্ছেদ চায় স্যাটানিক টেম্পল। স্যাটানিক টেম্পল অবশ্য তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শয়তান পূজা বা প্রেত পূজা শেখায় না। তারা কোন বিশ্বাসের চর্চা সেখানে করে না। অতিপ্রাকৃত কোন বিষয় নিয়েই তারা কাজ করে না। মেসনার বলছেন, তারা স্যাটান শব্দটি রূপক অর্থে ব্যবহার করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তারা মানুষের জন্য যা কিছু ক্ষতিকর এমন সব বিষয় প্রতীকী অর্থে তুলে ধরা হয়েছে। আফটার স্কুল স্যাটান ক্লাবের (এএসএসসি) পাঠ্যক্রমে শিশুদের যুক্তিবোধ বিকাশ, সৃজনশীল শিক্ষা ও সামাজিক দক্ষতা তৈরির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এখানে ভর্তি হতে প্রতিটি শিশুকে একটি সদস্য কার্ড দেয়া হয়। ওই কার্ডে অভিভাবকের অনুমতিসূচক স্বাক্ষর থাকতে হয়। ইভাঞ্জেলিক খ্রীস্টানদের পরিচালিত গুড নিউজ ক্লাবের প্রভাব মোকাবেলা করাই ওই স্কুল প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য। বাচ্চাদের শৈশব থেকে খ্রিষ্টধর্মে শিক্ষিত করে তোলার লক্ষ্য নিয়ে ১৯৩৭ সালে চাইল্ড ইভাঞ্জেলিজম ফেলোশিপ (সিইএফ) গুড নিউজ ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছিল। সাংবিধানিক বাধ্য বাধকতার জন্য গুড নিউজ ক্লাব মূলধারার শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হতে না পারলেও সারাদেশে তাদের সাড়ে তিন হাজারের বেশি স্কুল রয়েছে। এদের প্রভাব রুখতেই কাজ করছে এএসএসসি। Ñওয়াশিংটন পোস্ট
×