ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শামিমা আক্তার রিমা

গৃহকর্মীকে আয়ত্তে রাখ

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ১ আগস্ট ২০১৬

গৃহকর্মীকে আয়ত্তে রাখ

দীপা-নীরবের সদ্য বিয়ে হয়েছে। বহুজাতিক সংস্থাতে কাজ করা শাশুড়ি বেশিরভাগ সময়ই থাকেন শহরের বাইরে। বাড়িতে থাকে সব সময়ের কাজের লোক রুমা খালা। ছোট থেকে প্রায় কোলে-পিঠে করে নাফিকে মানুষ করেছে ও। সংসারের সব কাজ নিয়ম অনুযায়ী করে ফেলে প্রতিদিন। এতে করে দীপার অনেক সুবিধা হলেও মাঝে মধ্যেই ঠোকাঠুকি লেগে যায় ওদের মধ্যে। এই তো সেদিন ওরা ঠিক করছিল বাইরে থেকে সরমা আনিয়ে ডিনার সারবে, কিন্তু রুমা খালা নারাজ। বাড়িতে খাবার থাকা সত্ত্বেও বাইরের খাবার খেলে নাকি সংসারের অমঙ্গল হয়। নীরবের সঙ্গে দীপার কোন কারণে মনোমালিন্য হলে কখনও রুমা খালা কখনও নীরবের আবার কখনও দীপার পক্ষ নিয়ে কথা বলে। শাশুড়িকে কিছু বললে বলেন, একটু সহ্য করে নাও, এমনিতে ও ভালই। স্বামীও কিছু বলতে দ্বিধা করে, হাজার হোক ছোট বেলার লোক। তাই দীপারই হয়েছে যত জ্বালা। আবার শীলার শাশুড়ি আর কাজের লোক মিলে ওর জীবনটা দুর্বিষহ করে তুলেছে। শুনতে মেগাসিরিয়ালের মতো লাগলেও, স্ক্রিপ্টের মতো লাগলেও সত্যিই ওরা সব সময় শীলার পরিবারের সবার সামনে ছোট করার চক্রান্ত করে। প্রতিদিন কোন না কোন কাজের ভুল ধরে কাজের লোক হামিদা কথা লাগায় শাশুড়িকে। তারপরের দায়িত্বটা শাশুড়ি নিয়ে নেন। স্বামী আর শ্বশুর অত্যন্ত ভাল মানুষ। দু’জনেই ব্যস্ত ডাক্তার। এত ঘোরপ্যাঁচ বোঝেনই না। সারাদিন কাজের পর বাড়ি ফিরলে সাংসারিক অশান্তির কথা বলতে ভালও লাগে না শীলার। আর বিশ্বাস করাবেই বা কী করে? সবার সামনে তো দু’জনেই ভাল ব্যবহার করে ওর সঙ্গে। কিন্তু মানসিক অশান্তি কতদিন সহ্য করা যায়! তাই রিলেশনশিল্প কিছু উপায় : * একদিকে পুরো পরিস্থিতি বদলে ফেলতে যাবেন না। * আপনার সমস্যাগুলো আগে শাশুড়িকে বলুন। তিনি কিছু না করলে তবেই নিজে থেকে কিছু করার কথা ভাবুন। * নিজের মতামতে অটল থাকুন। সব সিদ্ধান্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিন। * মনে রাখবেন, খারাপ ব্যবহার করা বা কথা শুনানো কিন্তু কোন কাজের কথা নয়। * নিজের অপছন্দগুলো নিয়ে সরাসরি কাজের লোকের সঙ্গে কথা বলুন। * স্বামীকে বোঝান এখন আপনিও এই বাড়ির একজন। তাই আপনাকে অপমান করা মানে ওই বাড়ির সবাইকেই অমান্য করা। * উচিত কথা বলতে কখনও পিছপা হবেন না। * কাজের লোকের যে ব্যবহার আপনার অপছন্দ, বাড়ির সবার সামনে সেগুলোকে নিয়ে আলোচনা করুন। * আপনি যে ওই বাড়ির কর্তী মুখে না বললেও আচার-আচরণে বুঝিয়ে দিন। * বাড়ির অন্য কেউ যদি কাজের লোকের পক্ষ নিয়ে আপনাকে কোন অপমানজনক মন্তব্য করেন, সঙ্গে সঙ্গে তার প্রতিবাদ করুন। * রোজ রোজ বাড়িতে এই নিয়ে অশান্তি হলে অন্য কোন লোক রাখার ব্যবস্থা করুন। বাড়ির সবাই প্রাথমিকভাবে আপত্তি করলেও ভাল করে বুঝিয়ে বললে তাঁরা নিশ্চয়ই আপনার সমস্যাটা বুঝতে পারবে। * পাড়ার লোকের কাছে কখনওই কাজের লোকের নিন্দা করতে যাবেন না। এতে আপনাকেই লোক ভুল বুঝবে। পরিবারের সম্মানও নষ্ট হবে। * নিজের বাবা-মাকে কখনওই শ্বাশুরবাড়ির ঝামেলায় জড়াবেন না। * বাড়িতে যিনি সব সময় কাজ করছেন মাঝে মধ্যে তার ছোটখাটো চাহিদা মেনে নিন। এতে সম্পর্কটা সহজ হয়ে যাবে। * বকাবকি করার থাকলে বাড়ির সবার সামনে তা করবেন না। বাড়িতে কাজ করে বলেই ওর কোন সম্মান নেই, এরকম ভেবে ফেলবেন না।
×