ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

কণ্ঠশীলনের আবৃত্তি প্রযোজনা মহীয়সী রোকেয়া মঞ্চস্থ

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৩১ জুলাই ২০১৬

কণ্ঠশীলনের আবৃত্তি প্রযোজনা মহীয়সী রোকেয়া মঞ্চস্থ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মঞ্চজুড়ে স্নিগ্ধ আলোকছটা। মৃদু আলোয় চোখে পড়ে সারিবদ্ধ হয়ে বসা শুভ্র বসনের ঘোমটায় আবৃত ১৩ নারীকে। এই আবৃত্তিশিল্পীদের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় নারী জাগরণের এক পথিকৃৎ নারীর জীবনবৃত্তান্ত। কবিতার ছলে উপস্থাপিত হয় রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জীবনের গল্প। শিল্পিত উচ্চারণে প্রকাশিত হয় নারী শিক্ষার প্রসার ও সমাজ সংস্কারে তাঁর অবদানের কথা। আর তাঁকে নিয়ে এই আবৃত্তি প্রযোজনাটি মঞ্চে এনেছে আবৃত্তি সংগঠন কণ্ঠশীলনের একাংশ। মহীয়সী রোকেয়া শীর্ষক প্রযোজনাটি গ্রন্থনার পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন গোলাম সারোয়ার। শনিবার সন্ধ্যায় সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় মহীয়সী রোকেয়া। মঞ্চায়নের পূর্বে রোকেয়া সাখাওয়াতের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শনা খানম ও রোকেয়ার নাতনি অধ্যাপক মাজেদা সাবের। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জীবন ও কর্ম নিয়ে সাজানো হয়েছে প্রযোজনাটি। তাঁরই বিখ্যাত গ্রন্থাবলী অবরোধবাসিনী, মতিচুর, সুলতানার স্বপ্ন, চিঠি-পত্র ও পদ্মরাগ উপন্যাসের বিষয়কে ধারণ করে এগিয়েছে প্রযোজনাটির রূপরেখা। কেবল কথা দিয়ে দর্শক-শ্রোতার কাছে একটি আবৃত্তি উপস্থাপনা তুলে ধরাকে সহজ নয়। সেই দুরূহ কাজটিই সফলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে প্রযোজনাটিতে। আর এই জটিল কাজটিকে আন্তরিকতার সঙ্গে করেছেন সংগঠনের ১৩ জন নারী বাচিকশিল্পী। বিভিন্ন বয়সের হলেও রোকেয়াকে উপলব্ধি করতে গিয়ে, রোকেয়ার ভাষ্যকে একজন নারীর ভাষ্য করার প্রয়াসে প্রযোজনাটিতে অংশগ্রহণকারী ১৩ জন নারী আবৃত্তিশিল্পী হলেন হাসিনা হাসি, ইলা রহমান, রাজিয়া সুলতানা মুক্তা, মিফতাহুল জান্নাত নিপুণ, খাইরুন নাহার স্নিগ্ধ, শিরিন সুলতানা মিথিলা, শাহানা রহমান, আফরিন খান, অনুপমা আলম, রাবেয়া হক, আয়শা বিনতে খালেক, রোখসানা ফেরদৌসী কুইন ও সানজিদা সুলতানা। ওয়াসিম আহমেদের আলোক পরিকল্পনায় সঙ্গীত পরিকল্পনায় ছিলেন অনিন্দ্য মাহদী। মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন মোস্তফা কামাল। গণশিল্পী সংস্থার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন ॥ ‘শিল্প সংস্কৃতি সংগ্রাম আমাদের যুদ্ধ অবিরাম’ সেøাগানে গণমানুষের মুক্তির সংগ্রামকে উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশ গণশিল্পী সংস্থা। সুস্থ সংস্কৃতি চর্চা ও প্রসারের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলা সংগঠনটি অতিক্রম করেছে প্রতিষ্ঠার ৩৩ বছর। এ উপলক্ষে সংগঠনটির আয়োজনে শনিবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো ‘৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও জাতীয় সম্মেলন’ এবং সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দিনব্যাপী বাংলা একাডেমির শামসুর রাহমান মিলনায়তনে এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। শ্রাবণের সকালে আয়োজনের শুরুতেই ছিল উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী কমরেড রাশেদ খান মেনন। বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যকার মামুনুর রশীদ, শিল্পী ও সুরকার সুজেয় শ্যাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, অভিনয়শিল্পী খায়রুল আলম সবুজ, নাট্যকার অধ্যাপক মলয় ভৌমিক এবং লেখক ও গবেষক রেজা শাসসুর রহমান। দিনব্যাপী আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন আয়োজনের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। অনুষ্ঠানের অতিথিরা বলেন, ৩৩ বছর আগে বাংলাদেশ গণশিল্পী সংস্থা সকল অন্ধকার ঘুঁচিয়ে সংস্কৃতির আলোয় আলোকিত একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে যে যাত্রা শুরু করেছিল; সেই আলোকে আরও প্রজ্বলিত করার মহান ব্রত নিয়ে আমাদের এবারের এই আয়োজন। অনুষ্ঠানে সেমিনার পর্বের শুরুতে ‘রাষ্ট্রীয় সঙ্কট নিরসনে সাংস্কৃতিক আন্দোলন’ শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন মিনা মিজানুর রহমান। প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন অনুষ্ঠানের অতিথিরা। সেমিনার শেষে অনুষ্ঠিত হয় সংগঠনটির নতুন কমিটি গঠনের জাতীয় সম্মেলন। এ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির ৫১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠিত হয়। এ নতুন কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন শিল্পী ও সুরকার সুজেয় শ্যাম এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মাহমুদুল হাসান। ব্যাংকিংবিষয়ক দুই বইয়ের প্রকাশনা ॥ প্রকাশিত হলো ব্যাংকিংবিষয়ক দুটি বই। বই দুটি লিখেছেন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক ড. মোঃ লিয়াকত হোসেন মোড়ল। ‘দি ব্যাংকিং সেক্টর অব বাংলাদেশ : এসেইজ অন কনটেম্পোরারি ইস্যুজ’ এবং ‘দি ব্যাংকিং সেক্টর অব বাংলাদেশ : রিফর্মস এন্টিসিডেন্টস এ্যান্ড ইকোনোমিক আউটকামস’ শিরোনামের দুই গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হলো শনিবার। বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বই দুটির মোড়ক উন্মোচনের পাশাপাশি গ্রন্থ দুটি সম্পর্কে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাত। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ ইউসুফ, বাংলাদেশ অর্থনীতির সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ। ও বিআইবিএমের পরিচালক ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জী। সভাপতিত্ব করেন কৃষি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসমাইল। স্বাগত বক্তব্য দেন বই দুটির প্রকাশনা সংস্থা পালক পাবলিশার্সের প্রকাশক ফোরকান আহমদ।
×