ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চুয়াডাঙ্গায় বাউল আস্তানা পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা, দুজনের চুল কর্তন

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৩১ জুলাই ২০১৬

চুয়াডাঙ্গায় বাউল আস্তানা পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা, দুজনের  চুল কর্তন

সংবাদদাতা, দামুড়হুদা, চুয়াডাঙ্গা, ৩০ জুলাই ॥ দামুড়হুদার হাউলি ইউনিয়নের গোবিন্দপুর মোল্লারচারার ‘বাউল জুলমত শাহ’র আস্তানা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় বাউল জুলমত শাহ (৬৫) ও বাউল রিনুপদ হালদারের (৬০) চুল কেটে এবং পিটিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে। শুক্রবার রাত একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বাউল জুলমত শাহ একই গ্রামের মৃত খোরশেদ ম-লের ছেলে। জানা গেছে, শুক্রবার রাত একটার দিকে দামুড়হুদার গোবিন্দপুরে বাউলদের আশ্রমে ৭/৮ যুবক ঢুকে প্রথমে বাউল জুলমত শাহকে খোঁজে। এরপর তাকে পেয়ে চোখ বেঁধে আশ্রমের ভেতরে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা স্ত্রী মোমেনা বেগম ও গুরুভাই রিনুপদ হালদারেরও হাত-পা এবং চোখ বেঁধে রাখে। তবে সে সময় আশ্রমে থাকা জুলমত শাহর আট বছর বয়সী নাতি রাকিবকে কিছু বলেনি দুর্বৃত্তরা। হাত-পা-মুখ বেঁধে রাখার পাশাপাশি বাউল জুলমত ও রিনুপদ হালদারের চুল কেটে দেয়। এরপর একে একে দুটি বসতঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। আগুনে নগদ ১৭ হাজার টাকা, বই, আসবাবপত্র, ২০০টি কাঁথা ও বালিশ এবং এক বস্তা চাল পুড়ে যায়। অসংখ্য গাছপালা কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা। হামলার শিকার বাউল জুলমত শাহ জানান, দুর্বৃত্তরা তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে দুর্বৃত্তরা সেখানে তা-ব চালায়। খবর পেয়ে শনিবার দুপুর একটার সময় চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ রশীদুল হাসান ও দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। শনিবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ রশীদুল হাসান জনকণ্ঠকে বলেন, আশ্রমে ৭/৮ যুবক ঢুকে বাউলদের চুল কেটে দিয়েছে, দুটি ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। বাউলদের পাঁচ ওয়াকত নামাজ পড়ার কথা বলে এই তা-ব চালায় তারা। এ বিষয়ে মামলা হবে এবং তদন্ত করে দুর্বৃত্তদের ধরা হবে। চুয়াডাঙ্গা জেলা বাউল পরিষদের সভাপতি মনিরুজ্জামান ধিরু বলেন, এ বর্বোরচিত ও জঘন্য ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এক সপ্তাহের মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা না হলে বাউল সম্প্রদায় জেলাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলবে।
×