ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাগমারায় মা-ছেলে হত্যার হোতা পুলিশের ভাষায় পলাতক

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ৩১ জুলাই ২০১৬

বাগমারায় মা-ছেলে হত্যার হোতা পুলিশের ভাষায় পলাতক

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ বাগমারায় চাঞ্চল্যকর মা-ছেলে জোড়া খুনের তদন্তের অগ্রগতি হয়নি দুই বছরেও। দীর্ঘ সময় পর হত্যাকারীদের মূলহোতা শনাক্ত হলেও গ্রেফতার হয়নি। ফলে নিহতের পরিবার বিচার নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। তাদের অভিযোগ, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীকে এলাকায় দেখা গেলেও গ্রেফতারে প্রশাসনের মাথা ব্যথা নেই। এলাকাবাসী জানান, ২০১৪ সালের ২৪ নবেম্বর রাতে উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের দেউলা গ্রামের নিজবাড়িতে মা আকলিমা ও ছেলে জাহিদকে নির্মমভাবে খুন করা হয়। পরের দিন সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। একই দিন নিহতের বড় ছেলে দুলাল হোসেন বাদী হয়ে বাগমারা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে চাঞ্চল্যকর জোড়া হত্যাকা-টির তদন্ত নানান নাটকীয়তায় মোড় নেয়। মামলার বাদীর অভিযোগ, তদন্ত কর্মকর্তাকে তিন দফা পরিবর্তন করা হয়। তবুও মামলায় তেমন অগ্রগতি হয়নি। জোড়া খুনের ঘটনায় আসামিদের সঙ্গে গোপনে বাণিজ্য করার কারণে প্রকৃত খুনীদের আড়াল করার চেষ্টা চলছে। জানা যায়, হত্যাকা-ের দুই মাস পর গত বছরের ২৩ জানুয়ারি আকলিমার হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনটি উদ্ধার হয় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ডোমদের কাছে। সে সময় এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাসুদ পারভেজ রাজশাহী থেকে চার ডোমকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়। তবে সেখানেও অন্য ঘটনা উঠে আসে। ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে এলে নিহত আকলিমার কাপড়ের মধ্যে থেকে মোবাইলটি পায় ডোমেরা। তবে বিষয়টি না ভেবে লোভে মোবাইল ফোনটি লুকিয়ে ফেলে। সে সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাসুদ পারভেজ জানিয়েছিলেন, হত্যাকা- সম্পর্কে চার ডোমের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবেÑ এমন সন্দেহের কারণেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। এরপরই মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। এরপর মামলার অনেকটা অগ্রগতি ও মূলহোতা চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ নিহত আকলিমা বেগমের মোবাইল ট্র্যাকিং করে পাশের দুর্গাপুর উপজেলা থেকে হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত ভাড়াটে দুই হত্যাকারীকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরে তাদের রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ জানতে পারে হত্যাকা-ে অর্থের যোগানদাতা একই গ্রামের শিক্ষক আবুল হোসেন। শিক্ষক আবুল হোসেন আকলিমার দেবর। আবুলের নামটি পুলিশের কাছে পরিষ্কার হওয়ায় গত বছর শেষের দিকে পুলিশ তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করে। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সে পালিয়ে যায়। তবে পুলিশের চোখে আবুল এখন পলাতক থাকলেও প্রকাশ্যে সে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, আবুল হোসেন পলাতক থাকলেও স্কুল থেকে নিয়মিত বেতন উত্তোলন করছে। শুধু তাই নয়, তার হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরও হচ্ছে নিয়মিত।
×