ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিনিয়ত চলছে অতিরিক্ত পণ্যবাহী যানবাহন

সীতাকুণ্ডের লোড কন্ট্রোল কোন কাজে আসছে না

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ৩১ জুলাই ২০১৬

সীতাকুণ্ডের লোড কন্ট্রোল কোন কাজে আসছে না

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকু-ে এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশনকে ঘিরে প্রতিদিন চলছে মোটা অঙ্কের বাণিজ্য। অতিরিক্ত পণ্য নিয়ে এ স্টেশন অতিক্রম করলেও অর্থ বাণিজ্যের কারণে ছাড় দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ডিজিটাল এ কন্ট্রোল স্টেশন তৈরির পর থেকে ইসলাম নামের এক দালাল বিভিন্ন পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গে আঁতাত করে কোটিপতি বনে গেছে। মূলত ডিজিটালাইজড এই কন্ট্রোল স্টেশনের মাধ্যমে অতিরিক্ত মালামাল বোঝাইয়ের বিপরীতে সরকারের রাজস্ব আদায় হওয়ার কথা। কিন্তু তা না হয়ে উল্টো সরকারী অর্থ পুলিশ ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে লোপাট হচ্ছে। শনিবার বড় দারোগাহাট এলাকায় সকাল ৬টা থেকে রাত অবধি মূল সড়কে দুর্ঘটনায় আড়াআড়িভাবে পড়েছিল এক কাভার্ড ভ্যান। সীতাকু- উপজেলার বড় দারোগারহাট এলাকায় পণ্যবাহী যানবাহন পরীক্ষার জন্য এই স্টেশনটি স্থাপন করা হয়। কিন্তু পণ্যবাহী গাড়ি স্টেশনের সামনে দিয়ে না গিয়ে সরাসরি মূল সড়ক দিয়ে পারাপার হচ্ছে। স্টেশনে কর্মরতদের হাত তুলে অর্থ আদায়ের চিত্র প্রতিনিয়ত জনসম্মুখে ঘটলেও দেখার কেউ নেই। মূলত প্রত্যেকটি গাড়িতে পণ্য পরিবহনের নির্দিষ্টমাত্রার ওপর সওজ (সড়ক ও জনপথ) বিভাগ এমনকি বিআরটিএ’র অনুমোদন সংক্রান্ত সার্টিফিকেট থাকার কথা। কিন্তু সেক্ষেত্রে সার্টিফিকেটে যেমন ঘষামাজা করা হচ্ছে তেমনি সার্টিফিকেটবিহীন গাড়িও চলাচল করছে নজরদারির অভাবে। বিআরটিএ’র পক্ষ থেকে মোটরযান অধ্যাদেশের ১৯৮৩ সালের ১৫৪ ধারা অনুযায়ী অতিরিক্ত পণ্য বহনের জন্য মাত্র এক হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। এই স্কেলের পাশ কাটিয়ে ট্রাক, লরি ও কাভার্ড ভ্যান চার থেকে ১৬ টন পর্যন্ত অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন করে রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। অতিরিক্ত পণ্য বোঝাইয়ের কারণে সড়কের ক্ষতি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। ওভারলোডিং গাড়ির সঙ্গে সামঞ্জস্য না হলে রাস্তা দেবে যাবার ঘটনা যেমন ঘটছে তেমনি পথিমধ্যে গাড়ি বিকল হয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। অতিমাত্রায় পণ্য পরিবহনের ফলে নবনির্মিত সেতুগুলোর পাশাপাশি পুরাতন সেতুগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এমনও দেখা গেছে, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়ি রাস্তার বাইরে দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত সপ্তাহে দু’বার অভিযান পরিচালনার পর দেখা গেছে ভারী যানবাহন চলছে এই মাপকাঠির সামনে দিয়ে। ফলে জরিমানা আদায়সহ ভারী যানবাহন থেকে অতিরিক্ত লোড নামিয়ে ফেলার ঘটনা ঘটেছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের তৎপরতার কারণে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমীনের নেতৃত্বে এসব অভিযান পরিচালিত হয়। তিনি বলেন, আইনের মাধ্যমে জরিমানার অঙ্ক পরিবর্তন করা সময়ের ব্যাপার। অভিযানের তথ্য অনুুযায়ী দু’দিনে আইনী দুর্বলতা ও স্বল্প অঙ্কের তথা মাত্র এক হাজার টাকা করে ৩১টি গাড়ি থেকে ৩১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমীন জনকণ্ঠকে জানান, সীতাকু-ের লোড কন্ট্রোল স্টেশন এলাকায় দেখা গেছে, পণ্যবাহী প্রত্যেকটি গাড়িই ওভারলোড। ফলে অতিরিক্ত পণ্য বহনের ক্ষেত্রে জরিমানা আদায় করা হয়েছে তেমনি নিয়মিত মামলাও করা হয়েছে।
×