ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা আবাহনী ১-০ ফেনী সকার

ঘাম ঝরিয়ে জিতল আবাহনী

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৩০ জুলাই ২০১৬

ঘাম ঝরিয়ে জিতল আবাহনী

স্পোর্টস রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে ॥ লীগ মানেই লম্বা রেসের খেলা। এখানে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা কঠিন। যারা পারে, তারাই সফল হয়। এই সফলতার সংগ্রামে ‘জেবি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ (বিপিএল) ফুটবল আসরে অবতীর্ণ হয়েছে ১২ ক্লাব দল। এই দলগুলোর চারটি শুক্রবার মাঠের লড়াইয়ে নামে পয়েন্ট হাসিলের জন্য। এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচে ফেনী সকার ক্লাবকে ১-০ গোলে হারিয়ে পয়েন্ট হাসিল করে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। শুক্রবার ছুটিরদিন বলেই হয়তো এদিন অন্যদিনের চেয়ে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দর্শক সমাগম হয়েছিল বেশি। এ কদিন ধরে শুধু ভরা থাকতো পূর্ব গ্যালারি। এদিন পশ্চিম গ্যালারিতে কিছু দর্শককে দেখা যায় খেলা উপভোগ করতে। চোট ছিল বলে আবাহনীকে এদিন তাদের নিয়মিত অধিনায়ক-ডিফেন্ডার আরিফুল ইসলামকে ছাড়াই খেলতে হয়। তবে তাদের খেলায় সেটা তেমন প্রভাব ফেলেনি। দলনায়কের দায়িত্ব পালন করেন আরেক ডিফেন্ডার মামুন মিয়া। পুরো ম্যাচটি ছিল দ্রুতগতির এবং আক্রমণাত্মক। ফেনী সকার হারলেও তাদের খেলা ছিল প্রশংসনীয়। উভয়দলই প্রচুর আক্রমণ করে খেলে। কেবল একটি সুযোগ কাজে লাগিয়ে কেল্লাফতে করে ফেলে আবাহনী। সেক্ষেত্রে দুর্ভাগ্যই বলতে হবে দারুণ খেলা ফেনী সকারকে। গত লীগে ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’ খ্যাত ঢাকা আবাহনী দু’বারই হারায় ফেনীকে (৪-০ এবং ৩-০ গোলে)। সর্বশেষ সাক্ষাতে এবারের ফেডারেশন কাপেও গ্রুপ পর্বে আবাহনীই জেতে, ১-০ গোলে। গত লীগে ১১ দলের মধ্যে অষ্টম হয় ফেনী সকার। আর আবাহনী হয়েছিল চতুর্থ। ‘হেনিয়ান’ এবং ‘দ্য রেড এ্যান্ড হোয়াইট’ খ্যাত ফেনী সকার এবারের লীগে নিজেদের প্রথম খেলায় ১-১ গোলে ড্র করে ব্রাদার্সের সঙ্গে। পেশাদার যুগে শুরু হওয়া প্রিমিয়ার লীগের সবচেয়ে বেশি ৪ বারের শিরোপাধারী ঢাকা আবাহনী। তাদের মোট লীগ শিরোপা ১১টি। তবে অনেকদিন ধরেই লীগে সাফল্য পাচ্ছে না তারা। সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ২০১১ সালে। তবে এই মৌসুমের শুরুতেই (গত জুনে) ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দেয় তারা। এবার প্রিমিয়ার লীগেরও শিরোপা পুনরুদ্ধার করতে চায় দলটি। যদিও নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা ১-১ গোলে ড্র করে চট্টগ্রাম আবাহনীর সঙ্গে। ফেনী সকারকে হারিয়ে জয়ের ধারা-অভিযান শুরু করল তারা। ম্যাচ শেষে আবাহনীর অস্ট্রিয়ান কোচ জর্জ কোটান বলেন : জিতেছি। তিন পয়েন্ট পেয়েছি। কিন্তু দলের খেলায় খুশি হতে পারিনি। দলের কিছু খেলোয়াড় তাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারেনি। ৪-৩-৩ ফর্মেশনে খেলেও এক গোলের বেশি করতে পারিনি ফরোয়ার্ডদের ফিনিশিংয়ের অভাবে। গোলটাও পেয়েছি ভাগ্যক্রমে। প্রতিপক্ষ চমৎকার খেলেছে। মিডফিল্ডার হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ^াসকে এখনও মাঠে নামাইনি। ও পুরোপুরি ফিট হলেই মাঠে নামাবো। প্রতিনিয়তই সে উন্নতি করছে। ফেনী সকারের নাইজিরিয়ান কোচ লাডি বাবা লোলা বলেন : ট্রাই আওয়ার বেস্ট। আমরা ভালই খেলেছি। অনেকগুলো আক্রমণ করেছি। কিন্তু জিততে পারিনি। ভাগ্য অনুকূলেও ছিল না। রেফারিং ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। তবে হারলেও হতাশ নই। আশাকরি পরের ম্যাচগুলোতে ভাল খেলব। খেলার শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক স্টাইলে খেলে উভয়দল। করে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণ। তবে আসল কাজটিই করতে ব্যর্থ হচ্ছিল দু’দল। অবশেষে ব্যর্থতার অচলায়তন ভেঙ্গে সফল হয় আবাহনীই। ম্যাচের তখন ৪১ মিনিট। ডিফেন্ডার শাকিল আহমেদ বল নিয়ে ডি-বক্সে বল ফেলেন। ওখানে নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে চিজোবা গোলপোস্ট লক্ষ্য করে যে শট নেন, তা ঠিকমতো ধরতে পারেননি ফেনী সকারের গোলরক্ষক সুজন চৌধুরী। বল তার হাত থেকে ফস্কে যায়। আবাহনীর সুযোগ সন্ধানী মিডফিল্ডার জুয়েল রানা আর দেরি করেননি। শুয়ে পড়ে পায়ে বলের সংযোগ ঘটিয়ে দেন। ব্যাস, বল আশ্রয় নেয় তার কাক্সিক্ষত গন্তব্যে (১-০)। দ্বিতীয়ার্ধেও সমানতালে খেলে যায় সকার-আবাহনী। কিন্তু আর কোন গোল হয়নি। রেফারি ভারত চন্দ্র গৌড় খেলা শেষের বাঁশি বাজালে তিন পয়েন্ট পাওয়ার আনন্দে আবাহনী (২ খেলায় ৪ পয়েন্ট) এবং পয়েন্ট খোয়ানোর বেদনা নিয়ে মাঠ ছাড়ে ফেনী সকার (সমান খেলায় ১ পয়েন্ট)।
×