ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জমজমের পানি ও লাগেজ পেতে বিড়ম্বনা হবে না

হাজীদের সর্বোচ্চ সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিশেষ উদ্যোগ বিমানের

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ৩০ জুলাই ২০১৬

হাজীদের সর্বোচ্চ সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিশেষ উদ্যোগ বিমানের

আজাদ সুলায়মান ॥ এবার হাজীদের সর্বোচ্চ সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। অতীতের মতো যাতে ঢাকা থেকে মক্কা মদীনা আসা-যাওয়ার সময় কোন ধরনের বিড়ম্বনা বা দুর্ভোগের শিকার না হতে হয় সেজন্য ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে হাজীদের জমজমের পানি ও লাগেজ পরিবেশন নিয়ে চিন্তামুক্ত থাকতে বলেছে বিমানের কাস্টমার সার্ভিস বিভাগ। এ নিয়ে সব ধরনের প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে। গতবারের মতো এবার জমজমের পানি ও লাগেজ পেতে হাজীদের কোন ধরনের ভোগান্তি হবে না বলেও তারা নিশ্চয়তা দিয়েছেন। আগামী ৪ আগস্ট প্রথম হজের উদ্বোধনের দিনই হজযাত্রীরা আকাশ সেবায় নতুনত্বের সাধ পাবেন বলে জানিয়েছেন বিমানের কাস্টমার সার্ভিস বিভাগের প্রধান পরিচালক আতিক সোবহান। তিনি এরই মধ্যে তার বিভাগকে সাজিয়েছেন নবরূপে। চেকইন কাউন্টার থেকে শুরু করে ইমিগ্রেশন, বোডিং রিপোর্টিং, ইন ফ্লাইট সার্ভিসে মোতায়েন করেছেন তরুণ ও পেশাদার মনোভাবের একঝাঁক কর্মী। তাদের দিকনির্দেশনা দিয়ে যার যার দায়িত্ব সম্পর্কে বিশেষভাবে জ্ঞাত করেছেন। যাতে হাজীরা যাত্রীসেবা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র অসন্তোষ প্রকাশ না করেন। আল্লাহর মেহমানদের অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে দ্রুততম সময়ে লাগেজ ডেলিভারি, চেকইন ও খাবার দাবারের বিষয়ে বিশেষ যতেœর বিষয়ে প্রতিটি বিমানকর্মীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, এবার আগের তুলনায় আরও দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে হাজীদের সেবা দেবে বিমানের কাস্টমার সার্ভিস। সেভাবেই জনবল বিন্যস্ত করা হয়েছে বলে ইতোমধ্যেই মন্ত্রণালয়কে নিশ্চিত করেছেন পরিচালক কাস্টমার সার্ভিস। এটা অবশ্যই স্বস্তিদায়ক। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিবছর প্রথম দিকের ফিরতি ফ্লাইটের হাজীরা জেদ্দা বিমানবন্দরে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবার বিমান একদল চৌকস কর্মী পাঠিয়েছে জেদ্দায়। বিশেষ করে হাজীরা বিমান থেকে নেমেই লাগেজের সঙ্গেই জমজমের পানি পেয়ে যাবার বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পরিচালক আতিক সোবহান বলেন, ফেরার পথে বিমানেই হাজীদের জন্য একটি কুপন সরবরাহ করা হবে। বিমানের কেবিন ক্রুরাই এ কুপন সরবরাহ করবেন। বিমানবন্দরে নেমে কুপন দেখালেই হজ ফ্লাইট পরিচালনায় নিয়োজিত কর্মীরা হাজীদের জমজমের পানি পরিবেশন করবেন। এ নিয়ে কোন ধরনের ভোগান্তি হবে না । এ জন্য বিমানের কার্গো হাউসের কাছাকাছি একটি জায়গায় বিশেষ শেড নির্মাণ করা হয়েছে। ৪ আগস্ট ঢাকা থেকে বিমানের উদ্বোধনী ফ্লাইট যখন হজযাত্রী নিয়ে মক্কায় যাবে, ফেরার পথেই সেটাতে করে জমজমের পানি নিয়ে আসা হবে। এতে সব পানি এক সপ্তাহের মধ্যেই ঢাকায় এনে মওজুদ গড়ে তোলার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ওই শেডে পানির মওজুদ গড়ে তোলা হবে। হাজীরা যেদিন ফিরবেন তার আগের দিন সেগুলো চাহিদা মতো মওজুদাগার থেকে শাহজালাল বিমানবন্দরের বেল্ট এরিয়ায় এনে রাখা হবে। তখন প্রত্যেক হাজী একটা করে কুপন দেখিয়ে একটি পানির ক্যান সংগ্রহ করবেন। জানা যায়, বর্তমানে জনবল ও গ্রাউন্ড সার্ভিসের যন্ত্রপাতির প্রচ- সঙ্কটের দরুন মারাত্মভাবে বিঘিœত হচ্ছে যাত্রীসেবা। এ জন্য বিমান বিলম্ব হলেও দ্রুত প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে গত বৃহস্পতিবার কার্গো শাখায় কিছু লোডার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যেই কাস্টমার হজ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য দৈনিক ভিত্তিতে ৬০ জন জনবল (ট্রাফিক হেলপার) নিয়োগ দেয়া হবে। এরা শুধু হাজীদের লাগেজ ও জমজমের পানি পরিবেশনে সার্বক্ষণিক সহায়তা করবেন। একই সঙ্গে হজযাত্রীদের বোর্ডিংকার্ড ইস্যুসহ বিমানবন্দরে অন্যান্য সহযোগিতার জন্য ২৫ জন বিশেষায়িত ট্রাফিক সহকারী নিয়োগ দেয়া হবে। উল্লেখ্য, প্রতিবছর হাজীরা দেশে ফেরার পর লাগেজ ও জমজমের পানির জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে থাকেন। লাগেজ পেতেও নানা বিড়ম্বনার শিকার হন তারা। বিমানবন্দরে হাজীদের দেখাশুনার জন্য বিমানের কোন জনবল থাকে না। লাগেজ আসতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগে। গত বছরও অনেক হাজী জমজমের পানি ছাড়াই বিমানবন্দর ত্যাগ করেছেন।
×