ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

স্টিভেন ওভারলি

স্মার্টফোন পড়ে গেলেও স্ক্রিন ভাংবে না

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ৩০ জুলাই ২০১৬

স্মার্টফোন পড়ে গেলেও স্ক্রিন ভাংবে না

সেলফি তোলার মাঝপথে আপনার হাত থেকে পড়ে গেল স্মার্টফোন। ভেঙ্গে গেল স্ক্রিন। সেলফি তোলা লাটে উঠল। এখন অবস্থা তো যখন তখন হতেই পারে এবং হয়তো হচ্ছেও কারো কারোর বেলায়। তবে অচিরেই এমন অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। কারণ নিউইয়র্কে গ্লাস প্রস্তুতকারী কোম্পানি ‘কর্নিং’ গরিলা প্লাস নামে এক ধরনের কাচ বের করেছে। প্রতিযোগী কোম্পানিগুলোর কাচের তুলনায় এই গরিলা প্লাম কোমর সমান বা কাঁধ সমান উচ্চতা থেকে পড়ে গেলেও না ভাঙ্গার বা অক্ষুণœ থাকার সম্ভাবনা থাকে চারগুণ। সেই ২০০৭ সাল থেকে কোম্পানির গরিলা প্লাস সামগ্রী স্যামসাং, এ্যাপল, মোটরোলা, এলজি, হিউলেট প্যাকার্ড ও অন্যান্য কোম্পানির পণ্যসহ সাড়ে চারশ’ কোটি ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। কর্নিং বিশ্বব্যাপী পরিচালিত জরীপের উদ্বৃতি দিয়ে জানিয়েছেন যে, গত বছর শতকরা ৮৫ ভাগ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর মোবাইল ফোন অন্তত একবার হাত থেকে পড়ে গেছে এবং একই সময় ৫৫ শতাংশ মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর ফোন পড়ে গেছে তিন বার আরও বেশি। এতে স্ক্রিন ফেটে গেছে অথবা ঘষাঘষি লেগে ঝাপসা হয়ে গেছে। ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় কর্নিং কোমর ও কাঁধ সমান উচ্চতা থেকে এসফলটের মতো কঠিন, অমসৃণ জায়গার ওপর থেকে ফেলেছেন। এটা করতে গিয়ে তিনি ধরেই নেন অনেক সময় পকেটে রাখতে গিয়ে কিংবা ছবি তুলতে গিয়ে পড়ে যায়। কিন্তু পরীক্ষায় দেখা যায় যে, প্রায় ৮০ ভাগ সময় গরিলা প্লাস ৫ প্রায় পাঁচ ফুট উঁচু থেকে পড়েও অক্ষত থাকে। সাধারণ কাচকে গলিত লবণের উষ্ণ স্নানে দিয়ে গরিলা প্লাস তৈরি করা হয়। এই উত্তাপ ৭৫২ ডিগ্রী ফারেন হাইট পর্যন্ত ওঠে। এই প্রক্রিয়া সোডিয়াম আয়ন কাচ থেকে বেরিয়ে যায় এবং লবণের দ্রবণ থেকে পটাশিয়াম আয়ন সেই শূন্যস্থান পূরণ করে। পটাশিয়াম আয়ন আকারে বড় বিধায় সেগুলো কাচের গভীরে চাপের এক স্তর তৈরি করে যা ক্ষতি প্রতিরোধ করে। কর্নিং কোম্পানি ১৬০ বছরের পুরনো। এই দীর্ঘ সময়ের ইতিহাসে গরিলা প্লাস মোটেই এই কোম্পানির প্রথম আবিষ্কার নয়। উল্লেখ করা যেতে পারে যে এই কোম্পানিই টমাস এডিসনের ইনক্যানডেসেন্ট লাইটের কেসিং, তাপ প্রতিরোধক কাচের পাত্র এবং এক সময় পরীক্ষামূলকভাবে টিভি সেটে ব্যবহৃত ক্যাথোড রেটিউব উদ্ভাবন করেছিল। এখন এদের গরিলা প্লাস ৫ চালু হয়েছে। গরিলা প্লাস আগেই উদ্ভাবিত হয়েছে এবং ৭০ শতাংশের বেশি স্মার্টফোন স্ক্রিনে ব্যবহৃত হয়েছে। নব উদ্ভাবিত গরিলা প্লাস ৬ হলো নতুন প্রজন্মের গরিলা প্লাস তা ১.৬ মিটার উঁচু থেকে পড়লেও ৮০ শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে অক্ষুণœ থাকে বা ভাঙ্গে না। বলাবাহুল্য বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোনের মেরামত এবং গ্রাহক অভিযোগের এক নম্বর কারণ হলো ভাঙ্গা বা ফাটা স্ক্রিন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো নতুন ধরনের কাচ গরিলা প্লাস ৫ দিয়ে তাদের ফোনসেটের স্ক্রিন তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র ॥ ওয়াশিংটন পোস্ট
×