ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পানি কমার পূর্বাভাস ॥ ওষুধ ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট রয়েই গেছে

দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাচ্ছে না বন্যার্তরা- বহু গ্রাম নদীতে

প্রকাশিত: ০৫:২১, ৩০ জুলাই ২০১৬

দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাচ্ছে না বন্যার্তরা- বহু গ্রাম নদীতে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দু’সপ্তাহের বন্যায় পানিবন্দী পরিবারের সংখ্যা সাড়ে তিন লাখে পৌঁছে গেছে। বন্যাকবলিত এলাকার আয়তন ও পানিবন্দী মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি শুক্রবারও অব্যাহত থাকে। তবে বেশকিছু নদীর পানি হ্রাস পেতে শুরু করলেও শুক্রবারও পর্যবেক্ষণাধীন ৯০টি পানি সমতল স্টেশনের মধ্যে ৫৪টির পানি বৃদ্ধি পায়। আর বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত নদীর সংখ্যা বৃহস্পতিবারের তুলনায় বেড়ে গিয়ে ১৯টিতে দাঁড়ায়। দুর্ভোগ থেকে রেহাই পায়নি বানভাসী মানুষ। সেই সঙ্গে ভাঙ্গনের মুখে পড়ে বিলীন হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। বন্যার্ত এলাকাগুলোতে খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের সঙ্কট রয়েই গেছে। তবে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে ত্রাণ তৎপরতা চলছে। বন্যার কারণে বন্ধ হওয়া পাঁচ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু হয়নি। তীব্র স্রোতে শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। দু’পাড়ে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। চার শতাধিক যান পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। এতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা। বন্যাকবলিত এলাকা ও বন্যার্ত মানুষ ॥ বন্যাকবলিত জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে জামালপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, গাইবান্ধা, সুনামগঞ্জ, পঞ্চগড়, ফরিদপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ , রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ। ফরিদপুরের ১১টি ইউনিয়নের ১৫ হাজার পরিবার, লালমনিরহাটের ২৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার পরিবার, সিরাজগঞ্জের ৩১টি ইউনিয়নের সাড়ে সাত হাজার পরিবার, বগুড়ার ৮৭টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার পরিবার, মুন্সীগঞ্জের কয়েক হাজার পরিবার, নীলফামারীর ১৫ হাজার পরিবার, জামালপুর জেলার ৪০টি ইউনিয়নের প্রায় তিন লাখ মানুষ, গাইবান্ধার ২২টি ইউনিয়নের ৭০টি গ্রামের ২০ হাজার পরিবারের দুই লাখ ৪০ হাজার মানুষ, কুড়িগ্রামের ৫৬টি ইউনিয়নের ৭১৯টি গ্রামের সোয়া ছয় লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পূর্বাভাস ॥ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সহকারী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান শুক্রবার সন্ধ্যায় জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সমতল স্থিতিশীল রয়েছে। যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতলের হ্রাস আরম্ভ হতে পারে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীসমূহের পানি সমতলের বৃদ্ধি আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সুরমা ও কুশিয়ারা নদীসমূহের পানি সমতলের হ্রাস আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদ-নদীসংলগ্ন গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ জেলাসমূহের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সামান্য অবনতি হতে পারে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টায় উন্নতি আরম্ভ করতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় গঙ্গা-পদ্মা নদীসংলগ্ন রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলাসমূহের নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীসংলগ্ন কুড়িগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলে ও সুরমা নদীসংলগ্ন সুনামগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকতে পারে। ঢাকার আশপাশের বুড়িগঙ্গা, বালু, শীতলক্ষ্যা প্রভৃতি নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। শুক্রবার ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রাম পয়েন্টে ৮৮ সেন্টিমিটার, ঘাঘট নদীর পানি গাইবান্ধায় ৯০ সে.মি, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ১ সে.মি ও চিলমারী পয়েন্টে ৯৭ সে.মি, যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে ১২১ সে.মি, সারিয়াকান্দি পয়েন্টে ৯৮ সে.মি, সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ৮৭ সে.মি, কাজিপুরে ৮০ ও আরিচায় ৪৬ সে.মি, গুর নদীর পানি সিংড়া পয়েন্টে ১৩ সে.মি, আত্রাই নদীর পানি বাঘাবাড়িতে ৯০ সে.মি, এলাসিনে ধলেশ্বরীর পানি ১২৪ সে.মি, পদ্মার পানি গোয়ালন্দে ৭৭, ভাগ্যকূল পয়েন্টে ৪০ সে.মি ও সুরেশ্বরে ৬ ও তিতাস নদীর পানি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। স্টাফ রিপোর্টার কুড়িগ্রাম থেকে জানান, কুড়িগ্রামে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি নেই। ১২তম দিনে বানভাসীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ছয় লাখে। পানিবন্দী মানুষের ভোগান্তি পৌঁছেছে চরমে। জেলার ৭৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৭টি ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ বন্যার সঙ্গে লড়াই করছে। খাদ্য ও পানির তীব্র সঙ্কটের পাশাপাশি বন্যার্ত মানুষ পড়েছে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। নেই নিরাপদে সন্তান প্রসবের কোন ব্যবস্থা। শুক্রবার চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ছিল বিপদসীমার ৯৭ সেন্টিমিটার উপরে এবং কুড়িগ্রাম সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি ছিল বিপদসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার উপরে। রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। ভারত থেকে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে শুক্রবার সীমান্ত এলাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। চরনতুন বন্দরে অবস্থিত রৌমারী স্থলবন্দর, গবাদিপশুর করিডর ও রাজীবপুরের বালিয়ামারী বর্ডার হাট ডুবে গেছে। ওই সীমান্তে পাঁচটি বিজিবি ক্যাম্পের চারপাশে পানি উঠেছে। ফলে বিজিবি জোয়ানরা এখন পানিবন্দী। রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন তালুকদার জানান, কয়েকটি মিডিয়ায় রৌমারীকে দুর্যোগপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে মর্মে যে রিপোর্ট প্রকাশ করা হচ্ছে তা পুরোপুরি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। প্রকৃতপক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ রকম কোন ঘোষণা দেয়া হয়নি। বন্যা পরিস্থতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। চিলমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলী বীরবিক্রম জানান, চিলমারীতে বুরুজেরপাড় নামক স্থানে শুক্রবার ভোরে কাঁচকোল বাজার সড়ক ভেঙ্গে প্রায় ১০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়। পানির তোড়ে ভেসে গেছে আটটি ঘর। এতে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমির ফসল এবং নতুন করে ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে ব্যাপারীর বাজার এলাকার সঙ্গে কাঁচকোল বাজার এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা। বাড়িঘর ভেসে যাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে ওই পরিবারগুলো। জেলা বন্যা কন্ট্রোলরুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অব্দুল মোত্তালিব মোল্লা জানান, জেলার ৯ উপজেলার ৫৭টি ইউনিয়নের ৭২৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় এক হাজার ১৮৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা পানিতে ডুবে আছে। পানিবন্দী মানুষের সংখ্যা প্রায় ছয় লাখ। এছাড়াও নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২২ হাজার ৬৭৫ জন মানুষ। মৃত গবাদিপশুর সংখ্যা ৭৭টি। ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজ ও কার্লভাটের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯টিতে। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার সংখ্যা ৫২৫ দশমিক ৮ কিলোমিটার। এছাড়াও ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত এবং ২২৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৩ দশমিক ৩০ কিলোমিটার। বাঁধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এ পর্যন্ত বন্যাদুর্গত এলাকায় ৯৭৫ টন চাল, দুই হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার ও ২৮ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক লাখ ৭৮ হাজার ২৯৮ জন কৃষক। সিভিল সার্জন ডাঃ জয়নাল আবেদিন জিল্লুর জানান, দুর্গত এলাকায় ৮৫টি মেডিক্যাল টিম চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য কাজ করছে। পর্যাপ্ত মজুদ আছে স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট। নিজস্ব সংবাদদাতা গাইবান্ধা থেকে জানান, ঘাঘট, জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। জেলার চারটি উপজেলায় এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। জেলার ১১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২৫টি হাই স্কুল বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় সেগুলোতে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, দুই হাজার ৪৪ হেক্টর বিভিন্ন ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গত এলাকার মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য ৬শ’ টন চাল ও ১৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার মোঃ ফজলে রাব্বি মিয়া বৃহস্পতিবার বিকেলে ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ও ফুলছড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং দুর্গত ৫শ’ মানুষের মধ্যে নগদ টাকাসহ ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। স্টাফ রিপোর্টার বগুড়া থেকে জানান, যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বগুড়ার বন্যাকবলিত সারিয়াকান্দি, ধুনট ও সোনাতলা এলাকার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। এসব এলাকায় প্রায় ২০টি পয়েন্টে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ দিয়ে পানি চুইয়ে ভেতরে প্রবেশ করায় লোকজনের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙ্গনও বেড়েছে। এছাড়া নতুন করে বেশকিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের ত্রাণসামগ্রী ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী থেকে জানান, গতিপথ পাল্টে যাওয়া তিস্তা নদীর মূল স্রোতের পথ থমকে গেছে। শুক্রবার নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে পাল্টে যাওয়া নদীর গতিপথে ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চরখড়িবাড়ি ও পূর্ব খড়িবাড়ি মৌজার ১১টি গ্রামের ভেতর দিয়ে এখনও তিস্তার উজানের ঢলের বানের পানি বয়ে যাচ্ছে। ওই সব এলাকায় এখনও ১১শ’ পরিবার পানিবন্দী হয়ে রয়েছে। তিস্তা নদীর পানি কমে আসায় ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের ফরেস্টেরচরের ৪০টি পরিবারের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এদিকে সরকারী ও বেসরকারীভাবে বানভাসী ও নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম। স্টাফ রিপোর্টার মুন্সীগঞ্জ থেকে জানান, মুন্সীগঞ্জে শুক্রবার নিম্নাঞ্চলের আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার পরিবার। পদ্মার তীরের বাড়িঘর জলমগ্ন হওয়া ছাড়াও বহু ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। চর এলাকায় বানভাসী মানুষের কষ্ট বেশি। পদ্মার পানি শুক্রবার ভাগ্যকূল পয়েন্টে বিপদসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছিল। শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি ফেরি চলাচল প্রবল স্রোতের কারণে টানা এক সপ্তাহ ধরে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শুক্রবার শিমুলিয়া প্রান্তে পণ্যবাহী প্রায় ২শ’ ট্রাকসহ দু’পারে প্রায় ৪শ’ যান পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। এতে এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। নিজস্ব সংবাদদাতা রাজবাড়ী থেকে জানান, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি এবং ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দেয়া চারটি ঘাটের মধ্যে দুটি ফেরিঘাটই বন্ধ রয়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া, দেবগ্রাম ও উজানচর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল ইসলাম ম-ল জানান, এ ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকাই পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। পাশাপাশি নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে এলাকার মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছে।
×