ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গোসল বিপজ্জনক

কংক্রিটে সয়লাব কুয়াকাটা সৈকত

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ৩০ জুলাই ২০১৬

কংক্রিটে সয়লাব কুয়াকাটা সৈকত

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২৯ জুলাই ॥ কুয়াকাটা সৈকতের পরিধি ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। পূর্ণিমা-অমাবস্যার জোতে চার/পাঁচদিনের অস্বাভাবিক জোয়ারে ডুবে যাচ্ছে সৈকত এরিয়া। প্রতিদিন দুই দফা জোয়ারে সৈকতের বেলাভূমি ভেসে যাচ্ছে। সৈকতের শত শত গাছপালা উপড়ে পড়ছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, এ বছর বর্ষা মৌসুমে অন্তত দুই শ’ মিটার প্রস্থ সৈকত সাগরে ভেসে গেছে। এছাড়া সৈকতের শূন্য পয়েন্টের প্রায় এক শ’ মিটার এলাকাজুড়ে এখন বড় বড় কংক্রিটে সয়লাব হয়ে আছে। পড়ে আছে উপড়ে থাকা শত শত গাছপালা। এসব অপসারণ না করায় জোয়ারের সময় গোসল করতে গিয়ে পর্যটকরা বিপজ্জনক অবস্থার শিকার হচ্ছে। নিজের অজান্তেই আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে। বাণিজ্যিক ফটোগ্রাফাররা জানান, তারা নিজেদের উদ্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ এরিয়ায় বাঁশ পুঁতে লাল কাপড় টানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু কোন প্রশাসনিক উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এমনিতে অস্বাভাবিক জোয়ারে উত্তাল ঢেউয়ে কুয়াকাটা সৈকতের দীর্ঘ বেলাভূমি ল-ভ- হয়ে গেছে। সৈকতে যাওয়ার সড়কটি দীর্ঘ এরিয়াসহ বিদ্যুতের খুঁটি ভেসে গেছে ঢেউয়ে। সৌন্দর্যম-িত স্পটগুলো তছনছ করে দিয়েছে। শত শত নারিকেল, তাল, কড়ই, গেওয়া, ঝাউগাছ ঢেউয়ের তোড়ে উপড়ে গেছে। শাল বাগানের অবশিষ্ট যা ছিল তাও বিলীন হয়ে গেছে। জাতীয় উদ্যানের অধীন ইকোপার্কটির সবকিছু ঢেউয়ের ল-ভ- হয়ে গেছে। মোটকথা চেনা সৈকত এখন অচেনা হয়ে গেছে। তার ওপরে কুয়াকাটায় পর্যটকের এসব সমস্যা লাঘবে দৃশ্যমান কোন কর্মকা- নেই। সাগরের এমন ভয়াল ভাঙ্গনের কারণে চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন বেড়িবাঁধের বাইরের কয়েক শ’ দোকানী। ঝুঁকিতে রয়েছে বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ। বেড়িবাঁধের বাইরের মসজিদ-মন্দিরসহ শত শত স্থায়ী, পাকা-আধাপাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মালিক সাগর তা-বের আতঙ্কে পড়েছেন। পর্যটক-দর্শনার্থী এসব দৃশ্য দেখে চরম উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন। সৈকতে ঝালমুড়ি বিক্রেতা হেলাল প্যাদা বলেন, ‘দেহা দৃষ্টিতে এই বছর এহন পর্যন্ত কমপক্ষে ১০০ ফুট ভাইঙ্গা গ্যাছে।’ কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) দীপক কুমার রায় জানান, গাছপালা যা ভেঙ্গে যায় তা মহিপুর তহসিলের মাধ্যমে কুদ্দুস নামের একজন কেয়ারটেকার সংরক্ষণ করছেন। তবে কুদ্দুসের বিরুদ্ধে ভেঙ্গে পড়া গাছপালা বিক্রি করা এবং নিজের কাজে ব্যবহারের এন্তার অভিযোগ রয়েছে।
×