ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কোন দল বা শক্তির সঙ্গে কোন সম্পর্ক না থাকার দাবি হিন্দু মহাজোটের

প্রকাশিত: ০২:৩৬, ২৯ জুলাই ২০১৬

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কোন দল বা শক্তির সঙ্গে কোন সম্পর্ক না থাকার দাবি হিন্দু মহাজোটের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কোন দল বা শক্তির সঙ্গে কোন সম্পর্ক না থাকার দাবি করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের দাবি, কোন দিন নিজস্ব ব্যানারে সংগঠনের নাম হিন্দিতে লেখা হয়নি। এসব কাজ যারা করেছে তাদেও সঙ্গে জোটের কোন সম্পর্ক নেই। নেতৃবৃন্দ বলছেন, হিন্দু মহাজোটের সুনাম নষ্ট করার জন্য একটি পক্ষ এটি করতে পারে। হিন্দু মহাজোট রাজনৈতিক নিরপেক্ষ হিন্দু অধিকার আদায়ের সংগঠন। কোন রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তিকে খুশি করা বা কোন রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা হিন্দু মহাজোটের কাজ নয়। শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনের নেতারা। পাশাপাশি আসন্ন দুর্গাপূজায় তিন দিন সরকারী ছুটি ঘোষণা, সংসদে ৬০টি সংরক্ষিত আসন, হিন্দু নেতা ও পুরোহিতদের হুমকিদাতাদের গ্রেফতার সহ সাত দফা দাবি জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলন থেকে। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ২০ জুন ‘দৈনিক জনকণ্ঠ’ পত্রিকায় একটি কলামে অধ্যাপক ড. মুনতাসির মামুন হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব হিসেবে এ্যাড. গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিকের নাম ব্যবহার করে লিখেছেন যে তিনি জামায়াতের রাজনীতির সাথে সংযুক্ত ও রাজাকার গোলাম আযমকে গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেছিলেন। এতে করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার করতে বলেছেন। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট জামায়াত তো দুরের কথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কোন দল বা শক্তির সাথে কোন সম্পর্ক নেই। যদি মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির সঙ্গে কেউ জড়িত থাকে আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। নেতৃবৃন্দ বলেন, অধ্যাপক ড. মুনতাসির মামুন যে ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছেন তার সঙ্গে বর্তমানে হিন্দু মহাজোটের কোন সম্পর্ক নেই। এ্যাড. গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক হিন্দু মহাজোট এর স্ব ঘোষিত মহাসচিব। কারণ হিন্দু মহাজোটের বর্তমান মহাসচিব আনন্দ কুমার বিশ্বাস ও সভাপতি ড. প্রভাস চন্দ্র রায়। ২০১৫ সালের গত ১০ ডিসেম্বর সংগঠনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট এর সম্মেলনে ড. প্রভাস চন্দ্র রায়কে সভাপতি ও প্রভাষক আনন্দ কুমার বিশ্বাস কে মহাসচিব করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট এর কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। এরপর নতুন কমিটি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে যা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হয়। অতএব এ্যাড. গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক এর সাথে যদি জামায়াত এর কোন সম্পর্ক থাকে এই দায় বা তার কোন বক্তব্যের দায় হিন্দু মহাজোট নেবে না। তার কোন বক্তব্য হিন্দু মহাজোটের বক্তব্য হিসাবে গণ্য হবে না। এ দায় ও বক্তব্য সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত। নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি যে বর্তমানে কেউ কেউ হিন্দু নির্যাতনকে কাজে লাগিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করছে। যার কারণে প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। সংগঠনের নাম ব্যবহার করে সংবাদ সম্মেলন ও মানব বন্ধন করে যা ইচ্ছে তাই বক্তব্য দিচ্ছে। আবার কেউ কেউ অতি উৎসাহী হয়ে এই সমস্ত ঘটনার জন্য আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে দায়ী করে বক্তব্য দিচ্ছে যা মিডিয়ায় এসেছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি দাওয়ার মধ্যে রয়েছে, দুর্গাপূজায় ৩ দিন ও রথযাত্রায় ১দিনের ছুটি, সরকারী চাকুরিতে ২০ শতাংশ কোটা, জাতীয় সংসদে ৬০টি সংরক্ষিত আসন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, হিন্দু বিবাহ আইন বাতিলের দাবি জানায় সংগঠনটি। এসব দাবি না মানলে আগামী সেপ্টেম্বও থেকে সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করবে সংগঠনটি। বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের সভাপতি ড. প্রভাস চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রধান সসমন্বয়কারী শ্যামল কুমার রায়, আনন্দ কুমার বিশ্বাস, সুকৃতি কুমার ম-ল, ডিসি রায়, বাদল দত্ত, সুশীল মাহাত, ডা: নিমাই চন্দ্র আর্য, অঞ্জন সরকার, প্রভাষক বিপুল বিশ্বাস, ব্রিটিশ কর্মকার, রামকৃষ্ণ দাস, পলাশ কান্তি দে প্রমুখ।
×