ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সরানো হচ্ছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিদের

প্রকাশিত: ০২:২৬, ২৯ জুলাই ২০১৬

সরানো হচ্ছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিদের

অনলাইন রিপোর্টার॥ আজ শুক্রবার সকাল ৬টায় প্রায় দুই শ বছরের পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরে নতুন কারাগারে বন্দি স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। পুলিশের একজন জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার বলেন, শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে প্রতিদফায় আটটি প্রিজন ভ্যানে করে বন্দি স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রতিটি বহরের নিরাপত্তায় থাকছে পুলিশ ও র‌্যাবের আরও আটটি গাড়ি। সঙ্গে থাকছে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স। সকাল ৯টা পর্যন্ত চারবারে ৩২টি প্রিজন ভ্যানে করে বন্দিদের নতুন কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান। কারা কর্মকর্তারা জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আড়াই হাজারের বেশি সদস্য বন্দি স্থানান্তর কার্যক্রমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপর রয়েছেন। পুরনো কারাগার এলাকায় নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে। আশপাশের রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ১৭৮৮ সালে স্থাপিত নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কারাগার থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-মাওয়া সড়কের দক্ষিণে রাজেন্দ্রপুরে নতুন কারাগারের অবস্থান। সাড়ে চার হাজার বন্দি ধারণক্ষমতার নতুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার গত ১০ এপ্রিল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারা কর্মকর্তারা জানান, নারী বন্দিসহ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রায় আট হাজার বন্দি ছিলেন এতদিন। এই আট হাজারে মধ্যে ছয় হাজার ৩০০ পুরুষ বন্দি। নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কারাগার থেকে নারী বন্দিদের ইতিমধ্যে কাশিমপুর কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। আর শুক্রবার পুরুষ বন্দিদের নেওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে কেরানীগঞ্জের নতুন কারাগারের কার্যক্রম। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ সুপার জাহাঙ্গীর কবির জানান, বন্দি স্থানান্তরের কাজ এখন শুরু হলেও আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম, প্রয়োজনীয় ফাইলসহ অনেক কিছু আগেই স্থানান্তর করা হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার স্থানান্তরের আশির দশকে আলোচনা শুরু হলেও তার তিন দশক পর ২০০৬ সালে বিষয়টি একনেকে পাসের পর শুরু হয় জমি অধিগ্রহণ। পরের বছর সেপ্টেম্বরে ৪০৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকার এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ব্রিটিশ আমলে তৈরি বাংলাদেশের পুরনো কারাগারগুলোর মতো কেরানীগঞ্জ কারাগারের দেয়াল লাল নয়। তুলনামূলকভাবে খোলামেলা এ কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অন্যগুলোর তুলনায় আধুনিক। ছয়টি ছয়তলা ভবনে হাজতি এবং একই ধরনের দুটি ভবনে কয়েদিদের রাখা হবে এ কারাগারে। এসব ভবনের প্রতি তলায় ৪০টি করে কক্ষ; প্রতিকক্ষে ১৩ জন করে বন্দি রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। চারটি চারতলা ভবন হবে ডেঞ্জার সেল। ৪০০ দুর্ধর্ষ জঙ্গি ও সন্ত্রাসীকে রাখার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে। ডিভিশনপ্রাপ্ত (ভিআইপি) বন্দিদের জন্য ১৬টি বিশেষ কারাকক্ষ। এ কারাগার ঘিরে আছে ১৮ ফুট উচ্চতার সীমানাপ্রাচীর। তার ওপর দুই ফুট বৈদ্যুতিক তারের সেন্সর। প্রতিটি ভবনের রয়েছে আলাদা ছোট প্রাচীর।
×