ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

হোল্ডাররা নন, সাবাইনার সবুজই আকর্ষণ টেস্টের

প্রকাশিত: ১৯:২৬, ২৯ জুলাই ২০১৬

হোল্ডাররা নন, সাবাইনার সবুজই আকর্ষণ টেস্টের

অনলাইন ডেস্ক ॥ ফ্লোরিডায় ক্রিস গেইল। রিও দে জেনেইরোয় উসেইন বোল্ট। দুই তারকা বিদেশে। তবু ওঁদের নিয়েই বেশি ব্যস্ত জামাইকা। দেশের মাটিতে যে আস্ত একটা টেস্ট দল রয়েছে, তা নিয়ে কারও কোনও মাথা ব্যথাই নেই! জামাইকার খবরের কাগজগুলো ওল্টালেই তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। ফ্লোরিডায় সিপিএল-এর ম্যাচ খেলতে গিয়ে ক্রিস গেইল সেখানকার সুন্দরীদের নিয়ে কী বলছেন। বা রিওয় মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য বোল্টকে কী টিপস দিয়েছেন তাঁর মা— এ সব খবর যা ফলাও করে ছাপা হয়েছে, খেলার পাতায় তার সিকি ভাগ জায়গাও পাননি ড্যারেন ব্র্যাভো, কার্লোস ব্রেথওয়েটরা। পাবেনই বা কেন? অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টে ভারতের বিরুদ্ধে যে ভাবে আত্মসমর্পণ করেছেন, তার পর তাঁদের নিয়ে উৎসাহ প্রায় হারিয়েই ফেলেছেন ক্যারিবিয়ানবাসী। বরং বেশি উৎসাহ বিরাট কোহালিদের নিয়ে। কিংসটনে পা দেওয়ার পরই এখানকার ভারতীয় দূতাবাসে নেমন্তন্ন রক্ষা করতে যেতে হয় তাঁদের। সেখানে ভক্তদের অটোগ্রাফ ও সেলফির আবদার মেটাতে মেটাতে প্রায় ক্লান্ত হয়ে যান ভারতীয় ক্রিকেটাররা। দলের সঙ্গে থাকা এক সাপোর্ট স্টাফের টুইট, ‘‘দেশে আছি, না বিদেশে, কিছুক্ষণের জন্য ভুলে গিয়েছিলাম। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটারদের নিয়ে এত উৎসাহ নেই, যা আমাদের ক্রিকেটারদের নিয়ে দেখছি।’’ এই টেস্টে লড়াইয়ে ফিরতে না পারলে যে সিরিজে ফেরাই কঠিন হয়ে পড়বে, তা বুঝতেই পারছেন জেসন হোল্ডাররা। তাই তাঁদের কোচ ফিল সিমন্সের মুখে এখন শুধু লড়াইয়ে ফেরার কথা। সাবাইনা পার্কের সবুজ উইকেট কি সে জন্যই? এর সঙ্গে দুর্ধর্ষ অনুর্ধ ১৯ পেসার আলজারি জোসেফকে দলে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে দুইয়ে দুইয়ে চার করার চেষ্টা চলছে ভারতীয় শিবিরে। কোহালিরা প্রথম দিনই প্র্যাকটিসে নেমে এই উইকেটে দেখতে পেলেন। সাংবাদিক বৈঠকে আসা অমিত মিশ্র বাইশ গজের এই ঘাস নিয়ে বলেন, ‘‘টেস্ট শুরু হতে এখনও দু’দিন বাকি (শনিবার থেকে)। তাই এখানকার গ্রাউন্ডসম্যানরা উইকেটে ঘাস ছাঁটেন কি না, তা দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। তবে প্র্যাকটিস পিচের মতো ঘাস ম্যাচেও থাকবে বলে তো আমার মনে হচ্ছে না।’’ ভারতীয় শিবিরে সাবাইনা পার্কের উইকেট নিয়ে যেমন ধন্দ রয়েছে, তেমনই একটা রেকর্ডও তাঁদের সামনে রয়েছে। গত দু’বছরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখানে ২৬২-র বেশি তুলতে পারেনি। গত বছর জুনে অস্ট্রেলিয়া তো ১১৪-য় তাদের অল আউট করে সিরিজ জিতে নেয়। মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজলউড, মিচেল জনসনরা ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানদের শিরদাঁড়ায় কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিলেন কুড়িটার মধ্যে ১৪ উইকেট নিয়ে। এ বারও সে রকমই উইকেট থাকবে কি না, সেটাই দেখার। থাকলে অবশ্য শামি, ইশান্ত, উমেশদের মুখে হাসি ফুটতে পারে। নীল নকশা বদলালে শার্দুল ঠাকুরের টেস্ট খেলার স্বপ্নও সফল হতে পারে। কিংসটনে এসে প্রথম প্র্যাকটিসে ঋদ্ধিমান সাহাকে কঠোর পরিশ্রম করতে দেখা যায়। প্রথম টেস্টে স্টাম্পের পিছনে দাঁড়িয়ে নজর কেড়ে ছিলেন তিনি। ভিভিয়ান রিচার্ডসও তাঁর প্রশংসা করেন। এর পর যেন আরও তেতে গিয়েছেন বাংলার এই তারকা উইকেটকিপার। ওপেনার শিখর ধবনও নেটে ছিলেন বিধ্বংসী মেজাজে। নেটে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করার পর থ্রো-ডাউনও নেন বেশ খানিকক্ষণ। অ্যান্টিগায় ৮৪ করার পর তিনিও বেশ ‘চার্জড’। অ্যান্টিগা জয় যে পুরো দলকেই তাতিয়ে তুলেছে, তা মিশ্রর কথাতেই স্পষ্ট। তাঁর মতে, ‘‘প্রথম টেস্টে আমরা সব বিভাগেই ভাল করেছি। কিন্তু যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। এখানে ও সব ভুলে গিয়ে মাঠে নামতে হবে। আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলাটা চালিয়ে যেতে হবে।’’ কিন্তু অ্যান্টিগার বাউন্সহীন পাটা উইকেট থেকে এসে সাবাইনা পার্কের সবুজ উইকেটে নেমে কোহালিদের পক্ষে কাজটা সহজ হবে কি না, সেটাই প্রশ্ন। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×