ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাক্ষী আবুল কালামের জবানবন্দী

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ সলেমান ও ইদ্রিস আলীর সহায়তায় পাক আর্মি দু’শ’ লোককে হত্যা করে

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২৯ জুলাই ২০১৬

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ সলেমান ও ইদ্রিস আলীর সহায়তায় পাক আর্মি দু’শ’ লোককে হত্যা করে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত শরীয়তপুরের সোলায়মান মোল্লা ওরফে সলেমান মৌলভী ও ইদ্রিস আলী সরদারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের দশম সাক্ষী আবুল কালাম হাওলাদার জবানবন্দী প্রদান করেছেন। জবানবন্দীতে সাক্ষী বলেন, আসামি সোলায়মান মোল্লা ও ইদ্রিস আলী সরদারের সহায়তায় রাজাকাররা ও পাকিস্তানী আর্মিরা মঠের পুরোহিত চন্দ্র মোহন চক্রবর্তীসহ প্রায় ২শ’ জনকে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়া আটককৃত মাহিলাদের ধর্ষণ করা হয়। জবানবন্দী শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য রবিবার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বৃহস্পতিবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। এ সময় ট্রাইব্যুনালে সাক্ষীকে সাক্ষ্যদানে সহায়তা করেন প্রসিকিউটর (সাবেক জেলা জজ) হƒষিকেশ সাহা, প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন, আসামিপক্ষে জেরা করেন এ্যাডভোকেট গাজী এম এইচ তামিম। সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম আবুল কালাম হাওলাদার। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৬১ বছর। আমার ঠিকানা গ্রাম- কাশিপুর, থানা-পালং, জেলা-শরীয়তপুর। আমার বর্তমান ঠিকানা গ্রাম-নীলকান্দি, থানা পালং, জেলা-শরীয়তপুর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি, আমার চাচা রহম আলী হাওলাদার ও চাচাত ভাই শামসুল হক হাওলাদার যৌথভাবে আঙ্গারিয়া বাজারসংলগ্ন নদীর পাড়ে লঞ্চঘাটে চায়ের দোকান পরিচালনা করতাম। ওই সময় আমি রুদ্রকর নীলমনি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রও ছিলাম। বর্তমানে আমি আঙ্গারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত আছি। সাক্ষী বলেন, ১৯৭১ সালের ২২ মে আনুমানিক বেলা ৩টায় আমি আঙ্গারিয়া বাজারে গিয়েছিলাম। সেখানে অবস্থানকালীন আমি সংবাদ পাই যে, আঙ্গারিয়া বাজার লঞ্চঘাটে আর্মিরা এসেছে। ওই সময় আমি দেখতে পাই যে, আঙ্গারিয়া বাজার থেকে পাকিস্তানের সমর্থক কিছু লোকজন নারায়ে তাকবির ধ্বনি দিয়ে আঙ্গারিয়া লঞ্চঘাটের দিকে যাচ্ছে পাকিস্তান আর্মিদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য। এরপর আমি আমাদের দোকানে চলে যাই। এরপর রাজাকার ও পাকিস্তানী আর্মিরা বাজারে আসে। ওই সময় আসামি মোঃ সোলায়মান মোল্লা দুইজন লোককে দেখিয়ে বলে যে, মুক্তি হ্যায়। তখন এক পাকিস্তান আর্মি দুই লোককে গুলি করে হত্যা করে। এ সময় আমি সামাদ সিকদারের বাড়ির পশ্চিম পাশে একটি জঙ্গলে লুকিয়ে থাকি। লুকিয়ে থাকা অবস্থায় কাশাভোগ ও মধ্যপাড়া গ্রাম থেকে অসংখ্য গুলির শব্দ শুনতে পাই। সাক্ষী তার জবানবন্দীতে আরও বলেন, পাকিস্তান আর্মি ও রাজাকাররা কাশাভোগ ও মধ্যপাড়া গ্রামে আনুমানিক ২০০ লোককে গুলি করে হত্যা করেছে।
×