ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গী আব্দুুল্লাহর লাশ নেবে না পরিবার

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ২৯ জুলাই ২০১৬

জঙ্গী আব্দুুল্লাহর লাশ নেবে  না পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ রাজধানীর কল্যাণপুরে নিহত দিনাজপুরের জঙ্গী আব্দুুল্লাহর লাশ গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়েছেন তার বাবা সোহরাব আলী। বৃহস্পতিবার দুপুরে আব্দুল্লাহর (২৩) গ্রামের বাড়ি দাউদপুর ইউনিয়নের বল্লভপুরে তিনি জনকণ্ঠকে এ কথা জানান। সোহরাব আলী বলেন, ছেলের জঙ্গী কর্মকাণ্ডের কথা তার পরিবারের কেউ জানতেন না। ছেলের দেশবিরোধী ও মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি দেশ ও জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেন, তিনি ও তার পরিবার দুঃখিত ও লজ্জিত। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার কল্যাণপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে নিহত হন আব্দুল্লাহসহ নয় জঙ্গী। এদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও এলাকাবাসী ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, আব্দুল্লাহর লাশ তারা এলাকায় ঢুকতে দেবে না। এলাকায় দাফনের ব্যবস্থা হলে তা যে কোন মূল্যে প্রতিহত করা হবে। পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, আব্দুুল্লাহ ১৯৯৩ সালের ১৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করে। সোহরাব আলীর পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সে চতুর্থ। তার পিতা জানান, শৈশবে আব্দুল্লাহ নিজ গ্রাম (বল্লভপুর) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে হিলি হাকিমপুর আনওয়ারুল দারুল কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। সেখানে কিছুদিন থাকার পর সে নওগাঁ জেলার সাপাহার থানার আলাদিপুর কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। সেখান থেকে দাওরা পাস করে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার ‘দেবই কাজিরবাগ আলিম মাদ্রাসায়’ দাখিল শ্রেণীতে ভর্তি হয়। ২০১০ সালে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৫ গ্রেডে পাস করে। পরবর্তীতে একই মাদ্রাসা থেকে ২০১২ সালে আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৫ গ্রেডে পাস করে। আবদুল্লাহর বড় ভাই নুর ইসলাম জানান, পঞ্চম শ্রেণীতে পড়া পর্যন্ত সে মোত্তালেব নামে পরিচিত ছিল। মাদ্রাসায় ভর্তি হওয়ার পর আমাদের মোত্তালেব হয়ে যায় আব্দুল্লাহ। এক বছর আগে থেকে সে পরিবারের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত বন্ধ করে দেয়। কিন্তু মোবাইল ফোনে প্রায়ই কথা বলত সে। এছাড়া তার সঙ্গে আর কোন যোগাযোগ ছিল না। নিহত হওয়ার সাত দিন আগেই আব্দুল্লাহর সঙ্গে তার কথা হয়। তখনও তারা জানত না আব্দুল্লাহ জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। নিহত হওয়ার পর তারা জানতে পারে, সে একজন জঙ্গী সদস্য ছিল। নবাবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ইসমাইল হোসেন জানান, আব্দুল্লাহ নিহত হওয়ার পর উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ২৭ জুলাই তার বাবা সোহরাব আলী ও বড় ভাই নুরুল ইসলামকে আটক করে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, আব্দুল্লাহর বাবা ও ভাইয়েরা রাজমিস্ত্রীর কাজ করে। তারা জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক। তবে এখানে আব্দুল্লাহর কোন কর্মকা- কারও নজরে আসেনি। ছোট থেকেই সে বাইরে ছিল। তার বড় ভাই নুর ইসলাম জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে তাদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। মোত্তালেব মাদ্রাসায় গিয়ে হন আব্দুল্লাহ ॥ এদিকে বিডিনিউজ জানায়, ঢাকার কল্যাণপুরে জঙ্গী আস্তানায় নিহত নয় জঙ্গীর একজন দিনাজপুরের আব্দুল্লাহকে এলাকার মানুষ চেনে মোত্তালেব হোসেন নামে। তার বাবা ও ভাইকে লাশ শনাক্তের জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছে পুলিশ। আব্দুল্লাহর বাড়ি দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার বল্লভপুর গ্রামে। তবে ছোটবেলা থেকে পারিবারিকভাবে তাকে মোত্তালেব হোসেন নামে ডাকা হতো বলে তার বড় ভাই নুরুল ইসলাম জানান। তিনি বলেন, ‘১২ বছর আগে নওগাঁর সাপাহার আলাদি মাদ্রাসায় ভর্তি হওয়ার হুজুররা তার নাম পাল্টে রাখে আব্দুল্লাহ।’
×