ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কোন কিছুতেই ভয় পান না নেইমার

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ২৮ জুলাই ২০১৬

কোন কিছুতেই ভয় পান না নেইমার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আবভাবেই বোঝা যায় ভয়ডরহীন নেইমার। কথাবার্তাতেও সেটা স্পষ্ট। তরুণ বয়সেই পেয়ে গেছেন ব্রাজিলের মতো বিশ্বসেরা দলের অধিনায়কত্ব। এবার তার কাঁধে দায়িত্ব দেশকে প্রথমবারের মতো অলিম্পিক ফুটবলের স্বর্ণপদক এনে দেয়া। এই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন নেইমার। এ লক্ষ্যপূরণে তিনি ভয় পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন। অলিম্পিকের আগে নেইমারের লাইফস্টাইল নিয়ে অনেকেই সমালোচনায় মেতে উঠেছেন। এটাকেও পাত্তা দিচ্ছেন না বার্সিলোনা তারকা। তার মতে, তিনি সঠিক পথেই আছেন। আরেক সাক্ষাতকারে নেইমার বলেছেন, বার্সিলোনায় তিনি লিওনেল মেসির জন্য খেলেন। এটা নিয়ে তিনি লজ্জিত নন। আর স্বদেশী উঠতি ফুটবলার গাব্রিয়েলকে ন্যুক্যাম্পে দেখার ইচ্ছার কথা শুনিয়েছেন। অলিম্পিক ফুটবলে ব্রাজিলকে প্রথমবারের মতো শিরোপা এনে দিতে উন্মুখ হয়ে আছেন ২৪ বছর বয়সী নেইমার। তবে দলে নিজের গুরুত্ব ফলাও করে প্রচার করার কোন আগ্রহ নেই তার। এ বিষয়ে সাক্ষাতারে নেইমার বলেন, আমি কখনই নিজের সম্পর্কে কথা বলতে পছন্দ করিনি। কিন্তু আমি বার্সিলোনার উদাহরণ দেব। আমাদের অসাধারণ অনেক খেলোয়াড় আছে। কিন্তু এটা কি অস্বীকার করব আমরা মেসির উপর নির্ভরশীল? অবশ্যই আমরা মেসির উপর নির্ভর করি। তিনি আরও বলেন, মেসির জন্য খেলছি বা সেই দলের প্রধান সত্যটার জন্য আমি লজ্জিত নই। মেসি বিশ্বের সেরা, আমি তার ওপর নির্ভর করতে চাই। ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে একবার দেশের মানুষের প্রত্যাশার চাপ সহ্য করতে হয়েছে নেইমারকে। দলকে সেমিফাইনাল পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন। জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ হয়। চোটের কারণে নেইমার দুঃস্বপ্নের সেই ম্যাচটি খেলতে পারেননি। দুই বছর বাদে আবারও নিজ দেশে প্রত্যাশার চাপ। এবার অলিম্পিকের আসর। রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ব্রাাজিলের অলিম্পিক দুর্নাম ঘোচানোর মিশন। এবার নেইমারকে নিয়ে আক্ষেপ ঘোচাতে চায় সেলেসাওরা। কেউ স্বীকার আর না করুক বিষয়টি রীতিমতো চাপই হয়ে এসেছে নেইমারের দলের জন্য। তবে নেইমার নিজে বিষয়টি মোটেও পাত্তা দিতে চান না। আয়েশী মুডেই থাকতে চান তিনি। নেইমার বলেন, দেখুন, জয়টা কিন্তু দারুণ বিষয়। চাপ থাকবেই। চাপ ফুটবলেরই অংশ। আমি আছি এই চাপ সামলাতে। মাঠে নামার সময় চাপ আপনাকে ঘিরে থাকবেই। এটা খেলারই অংশ। চাপ সামলানোর শক্তিটা তিনি তার বার্সিলোনা সতীর্থ মেসির কাছ থেকেই নিতে চান। অলিম্পিকে ব্রাজিল দলে সতীর্থদের দায়িত্বশীলতাই শক্তির জায়গা বলে মনে করেন নেইমার। বলেন, আমার দলের সবাই খুব তরুণ। কিন্তু আমরা জানি, ঘরের মাঠে, অলিম্পিকের মতো আসরে ব্রাজিলের জার্সি গায়ে চাপানোর দায়িত্বটা কী। নেইমার বলেন, আমি ভয় করি না কিছুতেই। ভয় জয়ের ইচ্ছাটাই নষ্ট করে দেবে। হারাতেও আমার ভয় নেই। কিন্তু সেই হারটা অবশ্যই হতে হবে সম্মানের সঙ্গে, লড়াই করেই। অনেকই নেইমারের লাইফস্টাইল নিয়ে সমালোচনা করলেও এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার বয়স ২৪ বছর। আমার অনেক ভুল থাকতে পারে। আমি শতভাগ পারফেক্ট না। আমি আমার বন্ধুদের সঙ্গে মজা করতে পছন্দ করি। কেন তাদের সঙ্গে আমি পার্টিতে যেতে পারব না? এটা আমার ব্যক্তিগত লাইফ। আমি মনে করি সবকিছু ঠিক আছে। এদিকে পালমেইরাসের ফরোয়ার্ড গাব্রিয়েল জেসুসকে পেতে ইউরোপের অনেক বড় ক্লাবই আগ্রহ দেখাচ্ছে। তবে ব্রাজিলের এই উঠতি তারকাকে নিজের ক্লাব বার্সিলোনায় পেলে খুশি হবেন বলে জানিয়েছেন নেইমার। তিনি বলেন, আমি গাব্রিয়েল জেসুসের সঙ্গে কথা বলেছি। শুধু তার সঙ্গেই নয়, অন্য খেলোয়াড়দেরও বলেছি, বার্সিলোনার হয়ে খেলতে আর শহরটিতে থাকতে কেমন লাগে। সে অসাধারণ এক খেলোয়াড়। আমরা জানি, অনেক ক্লাব তাকে পেতে চাইছে। পালমেইরাস ছাড়ার সঠিক মুহূর্তটা তাকে বুঝতে হবে, আমরা দলে ভাল খেলোয়াড়দের পেতে চাই। নেইমার আরও বলেন, সে বার্সিলোনায় আসলে খুব সুখী হবে। হয়ত আমরা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্লাব। শহরটি আর এর প্রতিদিনের জীবন অসাধারণ বলেই সে সুখী হবে।
×