ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ছোট দলগুলোকে সমীহ করছে বড়রা

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ২৮ জুলাই ২০১৬

ছোট দলগুলোকে সমীহ করছে বড়রা

রুমেল খান, চট্টগ্রাম থেকে ॥ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলের (বিপিএল) নবম আসরটি শুরু থেকেই জমে উঠেছে। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে প্রথম রাউন্ডের ছয় ম্যাচ। ৬ ম্যাচের পাঁচটিই ড্র হয়েছে এবং সব স্কোরলাইন ১-১, ছোট দলগুলোর কাছে প্রতি ম্যাচেই পয়েন্ট হারিয়েছে বড় দলগুলো। আজ থেকে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলা। এতে বিকেল সাড়ে ৪টায় প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি বনাম শেখ রসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেড। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় অপর ম্যাচে উত্তর বারিধারা ক্লাব মোকাবেলা করবে শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেডের। নিজেদের প্রথম ম্যাচে আগে গোল করেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে অল্পের জন্য জিততে পারেনি রহমতগঞ্জ। তবে তাদের আক্রমণাত্মক ও লড়াকু খেলা প্রশংসা কুড়ায় সবার। আজ রাসেলের বিপক্ষে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর রহমতগঞ্জের কোচ কামাল বাবু, ‘আগে অনেক শুনেছি, তবে এখন আর নিজেদের আন্ডারডগ বা জায়ান্ট কিলার হিসেবে মানতে রাজি নই। আগে লীগের শুরুর দিকে ৩-৪ গোল খেয়ে হেরে শুরু করতাম। আর এখন পয়েন্ট পেয়ে শুরু করছি। আমাদের দ্বিতীয় ম্যাচ শেখ রাসেলের বিপক্ষে। শক্তির বিচারে আমরাই ওদের চেয়ে এগিয়ে। কেননা, আমার দলের ৮০ শতাংশই তরুণ। বাকিরা মাঝারি মানের ও কিছুটা অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। দলটা খেলছে অনেকদিন ধরে একসঙ্গে। তাই টিম কম্বিনেশনটা খুবই ভাল। আর রাসেল শুধু দামী খেলোয়াড় এনে খেলিয়ে দেয়। তারা খেলোয়াড় তৈরি করে না, যেটা আমরা করি।’ দলের ঘাটতি বলতে নির্ভরযোগ্য চার ফুটবলার নেই ইনজুরি ও অন্যান্য কারণে। তারা হলেন নুরুল আবসার, শিমু, অধিনায়ক জাহাঙ্গীর এবং সুমন। এছাড়া দুই বিদেশী জাত্তা মুস্তাফা এবং দাউদা এখনও বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়নি। আগামী শুক্রবার তাদের আসার কথা বলে জানান কামাল। সবশেষে তিনি জানান, ‘রাসেলের বিপক্ষে ম্যাচে আমরা জয়ের লক্ষ্যেই খেলব। দলের খেলোয়াড়দের আত্মবিশ^াস এখন অনেক উঁচুতে।’ ২০১২ লীগের চ্যাম্পিয়ন রাসেলের এবারের শুরুটা ছিল হতাশাজনক। প্রথম ম্যাচেই খর্বশক্তির উত্তর বারিধারার কাছে হেরে হোঁচট খায় তারা। এ প্রসঙ্গে রাসেলের অধিনায়ক আতিকুর রহমান মিশু বলেন, ‘প্রথম ম্যাচে হেরেছি। এই হারের কোন অজুহাত নেই। ওই ম্যাচের পর দলের খেলোয়াড়দের মনোবল ভেঙ্গে পড়েছিল। তবে এখন সেটা কেটে গেছে। সবকিছু আবার নতুন করে শুরু করতে চাই।’ মিশু আরও যোগ করেন, ‘প্রতিপক্ষ হিসেবে রহমতগঞ্জ খুবই ভাল এবং সমীহ জাগানিয়া দল। তারপরও আমরা জেতার জন্যই খেলব।’ পেশাদার লীগের সর্বশেষ দুই আসরের টানা দুইবারের চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেড। লীগ শুরুর ছয়দিন আগেই হেড কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক বরখাস্ত হন। নতুন (আসলে পুরনো) কোচ জোসেফ আফুসি এখনও আসেননি। ফলে হেড কোচকে ছাড়াই খেলে চলেছে দলটি। ওয়েডসন নেই। প্রথম ম্যাচে লাল কার্ড পাওয়ায় এক ম্যাচ নিষিদ্ধ এমেকা। দলের অধিনায়ক ইয়াসিন খানসহ অনেক খেলোয়াড়ই ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত। আপাতত ডাগআউটে দাঁড়াচ্ছেন দলের গোলরক্ষক কোচ মোশারফ হোসেন বাদল। তিনি বলেন, ‘প্রথম ম্যাচে দল প্রত্যাশা মতো খেলতে পারেনি। দলের সমস্যা অনেক। তারপরও চেষ্টা করছি দলকে উজ্জীবিত করতে এবং তাদের ভাল খেলাতে।’ নিজেদের সামর্থ্য সম্পর্কে ভালই জানা উত্তর বারিধারার। এবার প্রিমিয়ার লীগে উঠে আসা দলটি ৬-৭ নম্বরে থাকতে চায়। অথচ প্রথম রাউন্ড শেষে সর্বাধিক তিন পয়েন্ট নিয়ে তারাই এখন আছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ অবস্থানে! এর আগে ২০১৩-১৪ প্রিমিয়ার লীগে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৩-২ এবং বিজিএমসিকে ৩-০ গোলে হারানোর রেকর্ড ছিল বারিধারার। ২০১২-১৩ মৌসুমের ট্রেবল চ্যাম্পিয়ন রাসেলকে হারিয়ে সেই কৃতিত্বকেও ছাড়িয়ে গেছে তারা। বারিধারার কোচ রাশেদ আহমেদ পাপ্পু বলেন, ‘লক্ষ্য ভাল খেলা এবং রেলিগেশন এড়িয়ে পয়েন্ট টেবিলে দলগুলোর মধ্যে মাঝামাঝি অবস্থানে থাকা। আমরা নই, শেখ জামালই বরং চাপে থাকবে। আমরা এই সুযোগটাই নেব। ড্র করাই মূল লক্ষ্য। জেতাটা হবে বোনাস।’ পাপ্পুর মতে, তার দলের মূল শক্তি হচ্ছে তারুণ্য। এই তারুণ্য দিয়েই তারা ভাল খেলে চমক সৃষ্টি অব্যাহত রাখতে চান। ‘আমাদের দলের আত্মবিশ্বাস-মনোবল এখন তুঙ্গে। দলে কিছু ছোটখাটো ইনজুরি থাকলেও সেগুলো সিরিয়াস কিছু নয়।’ পাপ্পুর ভাষ্য। কোন দলের কোচই তার দল পরের ম্যাচে কোন ফরমেশনে খেলবে, তা জানাতে চান না। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম পাপ্পু, ‘আমরা ৩-৫-২ ফরমেশনে খেলব।’
×