ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করুন ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৮ জুলাই ২০১৬

অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করুন ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে সরকারের পরিকল্পিত এক শ’ অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা করে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য ‘বেজা’ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বুধবার তার তেজগাঁও কার্যালয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) গবর্নিং বডির সভায় সভাপতিত্বকালে এ আহ্বান জানান। খবর বাসস’র। বৈঠকে সরকারী ও বেসরকারী বিনিয়োগ বাড়ানোর মধ্য দিয়ে দেশের শিল্পোন্নয়ন নিশ্চিত করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ওপরও গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নই তার সরকারের মূল লক্ষ্য। দেশের সার্বিক উন্নয়ন করতে হলে সকল অঞ্চলেরই উন্নয়ন করতে হবে।’ ‘বেজা’ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতাধীন একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ফোরাম, যারা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য দেশে এক শ’ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে। আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের সার্বিক রফতানি ৪০ বিলিয়ন ইউএস ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যে সরকার দেশে এক শ’ অর্থনৈতিক অঞ্চল, বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া এবং সুবিধাবঞ্চিত এলাকাগুলোতে এ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় এক কোটি লোকের নতুন করে কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে ‘সমন্বিত উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য’ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করার উদ্যোগ নিয়েছে। দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করার পূর্বঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, এর বাস্তবায়নে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বৈঠকে তার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে অগ্রগতির তথ্য সভায় উপস্থাপন করেন। অন্যদের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ফজলে কবির, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদসহ সংশ্লিষ্ট সচিবরা সভায় উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, শিল্প উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান নিশ্চিতে সরকারী-বেসরকারী খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপরও জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল (বিবিআইএন) এবং বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও মিয়ানমার (বিসিআইএম-ইকোনমিক করিডর) জোটের কথা তুলে ধরে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কানেকটিভিটি বাড়লে ব্যবসা-বাণিজ্যেরও সম্প্রসারণ হবে।’ প্রধানমন্ত্রী যে এলাকায় যে ফসলের উৎপাদন ভাল হয় সে এলাকায় সেসব কৃষিজাত পণ্যের শিল্প স্থাপনের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। বেজা কতৃর্পক্ষ জানায়, এ পর্যন্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য ৫৯টি এলাকাকে নির্বাচন করা হয়েছে এবং আরও ২২টি এলাকাকে প্রাথমিকভাবে পছন্দ করা হয়েছে, এগুলো চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল উদ্বোধন করেছেন; যেগুলোতে শিল্প স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যে অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন তার মধ্যে পিপিপির মাধ্যমে শিল্প স্থাপিত হচ্ছেÑ চট্টগ্রামে মীরসরাইয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল, মৌলবাজারের ‘শিহট্ট’, বাগেরহাটের মংলা এবং কক্সবাজারের সাবরং টুরিস্ট পার্ক অঞ্চল। এছাড়া ব্যক্তি খাতে ছেড়ে দেয়া অন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো হচ্ছে- নরসিংদীর পলাশ অর্থনৈতিক অঞ্চল, নারায়ণগঞ্জ-সোনারগাঁওয়ের বৈদ্যেরবাজার, গাজীপুরের কোনাবাড়ি, নারায়ণগঞ্জ মেঘনাঘাট, সোনারগাঁও ছোট সিলমান্দি এবং মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় স্থাপিত অর্থনৈতিক অঞ্চল।
×