ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শিল্পাচার্যের জীবন ও কর্ম বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৮ জুলাই ২০১৬

শিল্পাচার্যের জীবন ও কর্ম বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন বাংলাদেশের আধুনিক শিল্পকলা আন্দোলনের পথিকৃৎ। চিত্রশিল্পও যে কোন প্রতিবাদের প্রতিচ্ছবি বা প্রতিরোধের হাতিয়ার অথবা অধিকার-সাম্য-স্বাধীনতার ভাষা হতে পারে তা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন আমাদের দেখিয়েছেন। তার আঁকা প্রতিটি ছবিই একেকটি সময়ের প্রতিনিধিত্ব করে এবং বাস্তব অবস্থাকে আমাদের চোখের সামনে তুলে ধরে। লেখক জাহাঙ্গীর হোসেন তার মেধা ও শ্রম দিয়ে জয়নুল আবেদিনকে এই বইটির মধ্য দিয়ে উপস্থাপন করেছেন এটা আমার খুব ভাল লেগেছে। কিছু কিছু জায়গায় হয়ত এই মহান ব্যক্তিকে পুরোপুরি উপস্থাপন করা হয়নি, আমি আহ্বান করব পরবর্তী সংস্করণে লেখক এ বিষয়ে সংযোজন বা সংশোধন করবেন’- জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে বুধবার বিকেলে ‘শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন : জীবন ও কর্ম’ বইয়ের প্রকাশনানুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত একথা বলেন। আন্তর্জাতিক জাদুঘর পরিষদের সাবেক কিপার জাহাঙ্গীর হোসেন রচিত ‘শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন; জীবন ও কর্ম’ বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষাবিদ ইমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চিত্রশিল্পী হাশেম খান ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত শিল্পাচার্যের সঙ্গে তার প্রথম দেখার স্মৃতিচারণ করে বলেন, ১৯৬০-৬৩ সালের দিকে জয়নুল আবেদিনকে খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। শিল্পাচার্যের সঙ্গে আবার আমার দেখা হয়েছিল স্বাধীনতার পর, তখন আমরা সংবিধান রচনা করছি। তার কাঁথা কালেকশন সংবলিত হয়েছিল আমাদের সংবিধানে। সেই কাঁথা কালেকশনের একটি অংশ তিনি আমাকে স্বাক্ষর করে উপহার দিয়েছিলেন। আমি সযতেœ রেখেছি সেটি। শিল্পাচার্যের অনেক ছবি এখনও অরক্ষিত রয়েছে এমন মন্তব্য করে শিল্পবোদ্ধাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দুর্লভ স্মৃতি ও ছবি বিভিন্নজনের কাছ থেকে সংগ্রহ করে একটি পূর্ণাঙ্গ এ্যালবাম প্রকাশ করা যেতে পারে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্পী হাশেম খান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনÑ এ দুজনকে আমি মহামানব বলি। কেননা দুজনই উঠে এসেছেন কাঁদা মাটি থেকে। দুজনের স্বপ্ন ছিল বাঙালিত্বকে বিশ্বে প্রকাশ ঘটানো। সারা পৃথিবীতে যদি ৭ জন ড্রইং মাস্টারের নাম উচ্চারিত হয়, তার মধ্যে জয়নুল আবেদিন ও কামরুল হাসানের নাম উচ্চারিত হওয়া উচিত। গত বছর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন করা হয়। এতদিন পর যখন তাঁকে নিয়ে একটি বই রচনা করা হলো, আরও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে বইটিতে সংযোজন করা উচিত ছিল। অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, কষ্ট করে হলেও লেখক বইটি লিখেছেন, তার জন্য তাকে ধন্যবাদ। তবে এতে যে ছবিগুলো সাজানো হয়েছে, এগুলো বিষয় অনুযায়ী হওয়া উচিত ছিল। কোন কোন ক্ষেত্রে অন্য বইয়ের হুবহু কপি করা হয়েছে। যা হোক আমি মনে করি লেখক এ বিষয়গুলোকে মাথায় রেখে পরবর্তী সংস্করণে ঠিক করে দেবেন। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, জাদুঘরে সংরক্ষিত প্রায় একশটি ছবি বইটিতে রয়েছে। সব কিছু মিলিয়ে বলা যায় এটা মূল্যবান একটি বই। বইটি পড়লে জয়নুল সম্পর্কে অনেক ধারণা পাওয়া যাবে। বইটিতে জয়নুল আবেদিনের সহধর্মিণীর সাক্ষাতকার ও জয়নুলের হাতে লেখা বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য দলিল পুনঃমুদ্রিত হয়েছে। এটা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। বইটির লেখক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, যেসব বিষয় সংযোজন ও সংশোধন করা প্রয়োজন বইটির পরবর্তী সংস্করণে তা করা হবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে শিল্পী তানজিনা আহমেদ ও স্বপ্নীল সজীবের কণ্ঠে পরিবেশিত হয় উদ্বোধনী সঙ্গীত। এরপর শুরু হয় বইটির মোড়ক উন্মোচন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বইটির প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মাওলা ব্রাদার্সের পরিচালক আহমেদ মাহমুদুল হক। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। ‘শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন; জীবন ও কর্ম’ বইটিতে যে বিষয়গুলো সংযোজন করা হয়েছে তা হচ্ছেÑ ভারতীয় চিত্রকলা ও জয়নুল, জয়নুল জীবনী, ১৯৪৩ এর জয়নুল, জয়নুল স্টাইল, শিক্ষক ও সংগঠক জয়নুল, ব্যক্তি জয়নুল, জয়নুলের আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন, জয়নুল সহধর্মিণীর সাক্ষাতকার, জয়নুলের লেখা ও বলা থেকে উদ্ধৃতি, চিঠিপত্র ও সনদ। ইরানী চলচ্চিত্রকার আব্বাস কিয়ারোস্তমি স্মরণে আলোচনা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ॥ রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় প্রদর্শিত হলো প্রয়াত ইরানী চলচ্চিত্রকার আব্বাস কিয়ারোস্তামির চলচ্চিত্র। বুধবার সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে দেখানো হয় এ চলচ্চিত্রকারের বিখ্যাত সিনেমা ‘টেস্ট অব চেরি’। এ ছবি প্রদর্শনীর আগে আব্বাস কিয়ারোস্তামির জীবন ও কর্ম নিয়ে ছিল আলোচনা। তাকে নিয়ে আলোচনা করেন চলচ্চিত্রকার পরিচালক জাহিদুর রহিম অঞ্জন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের শিক্ষক ফাহমিদুল হক। সদ্য প্রয়াত ইরানী চলচ্চিত্রকার আব্বাস কিয়ারোস্তামি স্মরণে যৌথভাবে এ আয়োজন করেছে চলচ্চিত্রম ফিল সোসাইটি ও শিল্পকলা একাডেমি। আয়োজকেরা জানান, এছাড়া আজ বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় একই মিলনায়তনে দেখানো হবে ‘থ্রু দ্য অলিভ ট্রিজ’, বিকেল পাঁচটায় ‘ক্লোজ-আপ’ ও সন্ধ্যা ৭টায় হোয়্যার ইজ মাই ফ্রেন্ডস হোম’ ছবি।
×