ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ছয় মাসের মধ্যে জেলা পরিষদ নির্বাচন ॥ ডিসিদের জানালেন মন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৮ জুলাই ২০১৬

ছয় মাসের মধ্যে জেলা পরিষদ নির্বাচন ॥ ডিসিদের জানালেন মন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আইন সংশোধন করে আগামী ছয় মাসের মধ্যে জেলা পরিষদ নির্বাচন দেয়া হবে বলে জেলা প্রশাসকদের জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বুধবার জেলা প্রশাসক সম্মেলনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনার পর মন্ত্রী এ কথা জানান। এছাড়া জঙ্গীবাদ ঠেকাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নজর রাখা, মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসা নিষিদ্ধ করা, বিদ্যুত কেন্দ্র ও গ্যাস ক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা কমিয়ে জনগণের ভোগান্তি লাঘবে জেলা প্রশাসকদের আন্তরিক পদক্ষেপ নেয়াসহ বিভিন্ন নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা। চার দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বুধবার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা এ নির্দেশ দেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্মেলনে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে জেলা প্ররিষদের নির্বাচন দেয়া হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আপনারা মানসিক প্রস্তুতি রাখবেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত অধিবেশন শেষে নির্বাচন নিয়ে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে কোন আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে ডিসিদের বলার কিছু নেই। আমরা নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা করব। নির্বাচন নিয়ে কারও কোন অসুবিধা নেই। নির্বাচন নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা কী- জানতে চাইলে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এখনও কিছু আইনের পরিবর্তন দরকার। এটা এ সেশনে (সংসদ অধিবেশন) করতে পারছি না। আইন সংশোধন করে প্রয়োজনে আমরা অর্ডিন্যান্স জারি করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাব। কবে নাগাদ নির্বাচন করা সম্ভব হবে- জানেত চাইলে মন্ত্রী বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে ইনশা আল্লাহ নির্বাচন করে দিতে পারব। এ মন্ত্রণালয়ের পরিধি প্রতিটি গ্রাম, ১৬ কোটি মানুষের সঙ্গে জড়িত। সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন সহায়তা দেয়। উন্নয়ন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রাণ ফিরেছে, গতি এসেছে। এখন গ্রামীণ চাহিদার মাত্রারও পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট চায় না, খাম্বা (বিদ্যুতের খুঁটি) চায়। দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে একজন করে উপ-সহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ দেয়ার প্রস্তাব করেন ডিসিরা। তবে এখনই নিয়োগ দেয়া হবে না বলে জানান মন্ত্রী। আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে ডিসিদের প্রতি কী নির্দেশনা দেয়া হয়েছেÑ জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, মানুষ এ বিষয়ে সচেতন। আরেকটা মজার বিষয় হচ্ছে, আমাদের বিরোধীরা বলেন সরকার গুম করছে। তারা নিজেরাই গুম হচ্ছেন এ বিষয়ে কোন সন্দেহ রইল না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও হয়রানি বন্ধে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বুধবার সচিবালয়ে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিষয়াবলী আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মন্ত্রী। তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতারণার মাধ্যমে মানুষকে যেন হয়রানি করতে না পারে তাই এমএলএম লাইসেন্স প্রদান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে এখন আর এ ব্যবসার পারমিশন দেই না। যুবক ও ডেসটিনির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ায় এ ধরনের কোম্পানির নামও এখন আর শোনা যায় না। আইন অনুযায়ী যারা লাইসেন্স পেয়েছে তারা সীমিত আকারে কার্যক্রম চালাচ্ছে। আগের মতো পত্র-পত্রিকায় খবর ও মানুষের কাছে এমএলএম কোম্পানির প্রতারণার কথাও শোনা যায় না। বিষয়টি জেলা প্রশাসকদের অবগত করার কারণ জানতে চাইলে তোফায়েল আহমেদ বলেন, অনেক সময় লোকালি এ ধরনের এমএলএম কোম্পানি করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ও হয়রানি করা হয়। হয়রানি যাতে না হয় সেজন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলার রফতানির টার্গেট পূরণ করতে আমরা একটি সেøাগান তুলেছিলাম ‘এক জেলায় এক পণ্য’। তারই আলোকে পাটজাত থেকে শুরু করে অপ্রচলিত রফতানি পণ্য চিহ্নিত করতে প্রতিটি জেলাকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও বলা হয়েছে। ভেজালমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে দেশের ৪শ’ ৮১ উপজেলায় কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে বলেও জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকেদর প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, পত্র-পত্রিকায় উঠেছে ব্যবসায়ীরা চলে যাচ্ছে। আমাদের পণ্য ক্রয়কারীরা আসছে না। এগুলো সঠিক নয়। এমনিতেই বিদেশীরা জুলাই-আগস্ট মাসে অবকাশযাপন করে। এ সময় বিদেশীরা কম আসে। তার মধ্যে আমরা যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছি, তাতে মানুষের মাঝে আস্থা ফিরে আসছে। এ পর্যন্ত কোন বিদেশী কোম্পানির কাছ থেকে নেগেটিভ কোন মেসেজ আমরা পাইনি। সকলেই বলছে আমরা বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিচ্ছি। জেলা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের মধ্যে কোন দুশ্চিন্তা নেই। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ॥ বানভাসী মানুষের জন্য ত্রাণের কোন অভাব নেই জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, দুর্গতদের ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার জন্য স্পিডবোট কেনার প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বুধবার সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কার্যঅধিবেশন শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান। বন্যাদুর্গত এলাকায় যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকরা হেলিকপ্টার চেয়েছেন কিনাÑ জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, হেলিকপ্টার চায়নি, তারা বলেছে স্পিডবোট দিন। এজন্য আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্প নিয়েছি। ১৩-১৮ জেলায় রেসকিউ বোট দেব, তার ব্যবস্থা নিচ্ছি। তাৎক্ষণিক যেন ত্রাণের মাল নিয়ে যেতে পারেন। ত্রাণের মাল নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা ছোট ছোট মিনিট্রাক চেয়েছেন। এগুলো ক্রয় করে তাদের হাতে পৌঁছে দেব। বন্যা মোকাবেলায় উদ্যোগগুলো তুলে ধরা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে তিন ধাপে নয়টি জেলায় ১০ হাজার মেট্রিক টন চাল, সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছি, নয়টি জেলায় প্রায় চার হাজার মেট্রিক টন চাল পৌঁছে গেছে। এর মধ্যে জিআর চাল, জিআর ক্যাশ, শুকনা খাবার কেনার নগদ টাকা এবং শুকনা খাবার পৌঁছে দিয়েছি। ত্রাণমন্ত্রী বলেন, পানি বাড়তে শুরু করেছে, আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ইতোমধ্যেই যেসব মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন তাদের সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যতদিন পানি না নামবে আশ্রয় কেন্দ্রে যারা থাকবেন তাদের সেখানেই খাওয়ার ব্যবস্থা করব, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখছি। বিদ্যুত ও জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ॥ বিদ্যুত কেন্দ্র ও গ্যাস ক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞদের আবাসস্থল ও চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও বলা হয়েছে। এছাড়া জ্বালানি তেল ডিপোর নিরাপত্তা বিধানের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়। জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বুধবার বিদ্যুত ও জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনার পর এ কথা জানান বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তিনি বলেন, পেট্রোল পাম্পগুলোতে ভেজাল রোধ, অবৈধ গ্যাস ও বিদ্যুত সংযোগ এবং বকেয়া গ্যাস ও বিদ্যুত বিল আদায়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গ্যাস বিচ্ছিন্নকরণ কমিটির সভা নিয়মিত করার উদ্যোগ নিতেও বলা হয়। এছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ইউনিয়ন পর্যায়ে একজন করে ইলেক্ট্রিশিয়ান পদ সৃষ্টির প্রস্তাবও গ্রহণ করা হয়েছে সম্মেলন থেকে। কৃষি মন্ত্রণালয় ॥ কৃষির উন্নয়নে সরকারের আট সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসকদের জানালো সরকার। বুধবার জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন দুপুরে সচিবালয়ে এ সিদ্ধান্তগুলো জানান কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। সিদ্ধান্তগুলো হলোÑ সিলেট বিভাগের সব অনাবাদি জমি ফসলের আওতায় আনার জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হবে, উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ত সহিষ্ণু বীজ উৎপাদন ও সরবরাহ কার্যক্রম বাড়ানো হবে, কৃষি উৎপাদনে এলাকাভিত্তিক ফসল উৎপাদন ও উদ্ভাবনমূলক কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে, ফসলের নিবিড়তা বাড়াতে ভবিষ্যতে কৃষি সংশ্লিষ্ট বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার জোরদার করা হবে, প্রকল্প প্রণয়নের সময় উৎপাদনের পাশাপাশি প্রক্রিয়াকরণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হবে, সাতক্ষীরা জেলায় আম গবেষণা কেন্দ্রের একটি সাব-সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হবে, বিজ্ঞানসম্মত কৃষি উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে এবং ফসল গবেষণা কেন্দ্র অঞ্চলভিত্তিক স্থাপনের বিষয় সরকার বিবেচনা করছে। সভায় সরকারের এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকদের আন্তরিকতার সঙ্গে উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দেন কৃষিমন্ত্রী। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ॥ জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নিজ নিজ এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর নজর রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এ সময় ডিসিরা জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সরকারকে সব সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বুধবার সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কার্যঅধিবেশন শেষে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছি এখনকার সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হচ্ছে দেশ এখন জঙ্গীবাদের মুখোমুখি। সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, অন্যান্য মন্ত্রণালয় থেকেও নির্দেশনা পাবেন। আমাদের শিক্ষা পরিবারে সরাসরি এক-তৃতীয়াংশ লোক যুক্ত। আমাদের তরুণ ছেলেমেয়েরা এর ভিকটিম হচ্ছে, তাদের জঙ্গী বানানোর টার্গেট করছে। সেজন্য আমাদের আরও হুঁশিয়ার থাকতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন প্রজন্মকে আমরা দেশের জন্য জ্ঞান, শিক্ষা, প্রযুক্তি দিয়ে সততা, নিষ্ঠা, ন্যায়বোধ ও দেশপ্রেম দিয়ে উদ্বুদ্ধ করে ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তারা যদি কেউ বিপথগামী হয়ে এ পথে (জঙ্গী) যায়, তাহলে তাদের জীবন সর্বনাশ, দেশেরও সর্বনাশ হবে। এর জন্য আমরা ইতোমধ্যে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসায় যেসব বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি সেগুলো ডিসিরা যেন কার্যকরী করেন, এ বিষয়ে তারা যেন নজর রাখেন, দৃষ্টি রাখেন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ডিসিদের বলেছি, নিজ নিজ এলাকায় যেন সতর্ক থাকেন, নির্দেশনাগুলো কার্যকরী করছেন কি-না বা করার জন্য কী করা উচিত সে ব্যাপারে সহযোগিতা করুন। জঙ্গীবাদ মোকাবেলা করার জন্য শিক্ষকদের আরও দায়িত্বশীল হিসেবে গড়ে তোলা, আরও নজরদারি করা, সব ছেলেমেয়েকে ভালভাবে চেনা বা বোঝা এবং অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা, সতর্ক রাখা যেন তার সন্তানের ওপর নজর রাখেন, যাতে বিপথগামী না হয়। এসব বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের আরও সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য বলা হয়েছে জানিয়ে নাহিদ বলেন, আমরা আরও কিছু মেকানিজম করে দেব যাতে প্রত্যেক স্কুলে নজরদারি আরও বাড়াতে পারি। ভূমি মন্ত্রণালয় ॥ ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা কমিয়ে জনগণের ভোগান্তি লাঘবে জেলা প্রশাসকদের আন্তরিক পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। বুধবার জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষে ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ সাংবাদিকদের এ কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা কমাতে সরকার আন্তরিক। এ কারণেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ভূমি ডিজিটাইলেজশনের কাজ চলছে। তবে এটা আবেগ বা বক্তৃতার বিষয় নয়। বাস্তবতার নিরিখে কাজ করা কঠিন। অস্ট্রেলিয়ার এ কাজ করতে ২০ বছর লেগেছে, ভারত এখনও ২০ ভাগ শেষ করতে পারেনি। আমরা দ্রুত এ কাজ শেষ করার লক্ষ্যে কাজ করছি। এখানে প্রযুক্তিজ্ঞান ব্যবহার, প্রযুক্তি যন্ত্রপাতি সংগ্রহের ব্যাপার আছে। তবে আমরা দ্রুতই এ কাজ শেষ করব। মন্ত্রী আরও বলেন, ভূমি সংক্রান্ত ভোগান্তি সম্পর্কে আপনারাও জানেন, আমিও জানি। পর্চা এবং খতিয়ান পেতে সাধারণ জনগণকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। জনগণের এসব ভোগান্তি কমাতে জেলা প্রশাসকরা আন্তরিক রয়েছেন। তারপরও এ বিষয়ে তাদের আরও যতœবান হতে বলেছি। ভূমিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ভূমি খাতে যত অনিয়ম রয়েছে তা আগের সরকারগুলোর। বিভিন্ন সামরিক ও গণতান্ত্রিক সরকারের জমানো অনিয়ম জমে এখন কিছু প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা জেলা প্রশাসকদের এ প্রতিবন্ধকতা দূর করার নির্দেশ দিয়েছি। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ॥ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কোরবানির ঈদকে সামনে দেশের মহাসড়কগুলোর পাশে যেন গরুর হাট বসানো না হয়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসকদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বুধবার সচিবালয়ে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়’ সম্পর্কিত আলোচনায় অংশগ্রহণ শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, মহাসড়কের পাশে যেন পশুর হাট না বসে সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মালিগাঁও, ঢাকার যাত্রাবাড়ী ও গাজীপুরের টঙ্গী উপজেলার তুরাগ নদীর তীরে হাট বসে। ডিসিদের আগাম নির্দেশ দেয়া হয়েছে, কোন অবস্থাতেই যেন পশুর হাট না বসে। রাজধানী ঢাকার বাবুবাজারসহ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মহাসড়কের পাশে যেন পশুর হাট না বসে, তাও দেখা হচ্ছে। আমরা কর্পোরেশনকে অনুরোধ করেছি। ওবায়দুল কাদের বলেন, ডিসিদের বলা হয়েছে, কোরবানির পশু বহনে যেন আনফিট গাড়ি রাস্তায় না থাকে, তা উৎসমুখেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মন্ত্রী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মহাসড়কের ১৪৪টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান সংস্কার করা হচ্ছে। ৫০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এছাড়াও পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, ফোরলেন, ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নিয়ে ডিসিদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। যে ২২টি মহাসড়কে ইজিবাইক, নসিমন, করিমন, সিএনজিচালিত অটোরিক্সা চলাচল করে, সেগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কঠোরভাবে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার নির্দেশ দিয়েছি। ঢাকায় মোটরসাইকেলে হেলমেটসহ দুই আরোহী চলাচলের সিদ্ধান্ত নেয়ায় সাফল্য পাওয়া গেছে। সারাদেশে এ অভিযান চলছে, অভিযান জোরদার করতে ডিসিদের বলা হয়েছে। মহাসড়ক যেন দখল হয়ে না যায় তা দেখতেও জেলা প্রশাসকদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
×