ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চাঁপাইয়ে কোরবানির পশু আসা শুরু হয়েছে

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ২৮ জুলাই ২০১৬

চাঁপাইয়ে কোরবানির পশু আসা শুরু হয়েছে

ডি.এম তালেবুন নবী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ কোরবানির পশু আসা শুরু হয়েছে। এসব পশুর মধ্যে গরু প্রধান হলেও অধিক পরিমাণে আসছে রোগাক্রান্ত অচল বয়স্ক মহিষ। এসব রোগাক্রান্ত, অচল, বয়স্ক মহিষ ঠেলে দেয়ার ব্যাপারে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা খুবই আগ্রহ দেখাচ্ছে। পাশাপাশি মদদ রয়েছে বিএসএফের। তাই প্রতিদিন জেলার তিনটি বৈধসহ মোট ১৫টি অবৈধ পথ ধরে হাজার হাজার অচল মহিষ চাঁপাইনবাবগঞ্জে আসছে। সে তুলনায় গরুর সংখ্যা খুবই কম। তবে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে গরুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। একই সূত্র হতে জানা গেছে, গত এক মাসে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পশু চোরাকারবারিরা চাঁপাই সীমান্তপথে ভারত ঘুরে এসেছে। এরা পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, বিহারসহ সেভেন সিস্টারে গিয়েছিল। এখন হচ্ছে ডিল বা চুক্তি। তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরসহ, শিবগঞ্জ, কানসাট, মনাকষা, ভোলাহাট এলাকার হোটেলগুলো ভর্তি পশু চোরাকারবারি দ্বারা। তারা গরু আনার চুক্তিতে স্বাক্ষর করাসহ অভ্যান্তরভাগের নানান সংস্থার সঙ্গে চুকিয়ে নিচ্ছে ‘ম্যানেজ মানি’র পরিমাণ। এ ধরনের চুক্তি বা ম্যানেজ মানির ফয়সালা হবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত। তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তপথে নানান ধরনের ৫০ লাখ পশু নিয়ে আসবে। তাতে তাদের খরচ হবে (ম্যানেজ) প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে একটি সংস্থাকেই দিতে হবে এক কোটি টাকা। এ ধরনের টাকা বণ্টন ও বিতরণের জন্যও ঠিক করা হয়েছে খুবই অভিজ্ঞ মধ্যস্বত্বভোগীদের। এরা একদিকে যেমন পশু আসার পথ নির্বিঘœ ও ঝুঁকিবিহীন করবে, তেমনি কানসাট, ভোলাহাট ও গোদাগাড়ীসংলগ্ন করিডরগুলোতে শুল্ক ফাঁকি দেয়ার বিনিময়ে রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের পকেট ভর্তির ফর্মুলা দেবে। ইতোমধ্যেই চরবাগডাঙ্গা, নারায়ণপুর ও মাসুদপুর সীমান্তের পশু আসার পথে ঝুঁকি ও কণ্টকমুক্ত করতে প্রতি সপ্তাহের প্রতিটি সরকারী ও বেসরকারী সংস্থার ম্যানেজ টাকার পরিমাণ নির্ধারণপূর্বক পরিশোধ করা শুরু করেছে। অনরূপভাবে ভারতীয় এলাকার বিটে বা করিডরে বিএসএফ ম্যানেজ মানি নির্ধারণে ২০ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত বৈঠক হয়েছে ভারতের লালগোলা অঞ্চলে। তবে বিএসএফ প্রতিদিন তাদের ম্যানেজ মানি নিয়ে নেবে। কারণ এ মৌসুমে প্রতি সপ্তাহে প্রতিটি ক্যাম্পে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ লোক বদল করে থাকে বা বদলি করে। তাই বিএসএফ তাদের প্রতিদিনের ম্যানেজ মানি পরিশোধের আওতায় আনছে। এদিকে জেলা শহরের তিনটি সরকারী সংস্থাকে ম্যানেজ করার জন্য নির্ধারিত লোক নিয়োগ হয়েছে। তবে অধিকাংশ বিট ও করিডর ডাককারীরা এবার খুবই প্রভাবশালী। এদের ম্যানেজ বা টিম লিডার হিসেবে কাজ করছে সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি, যাদের নাম এখানে বাতাসে ভাসছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবারও ভারতীয় পশু চোরাইপথে আসা রুটগুলো খুবই জমজমাট থাকবে। এখানে উল্লেখ্য, একটি গরু ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছতে সব খরচ মিলিয়ে মাংসের দাম প্রতি কেজি আড়াই শ’ টাকার বেশি হবে না বলে জানা গেছে। তবে এবার পশুর মধ্যে বাংলাদেশে আসবে সবচেয়ে বেশি বুড়া রোগাক্রান্ত অচল মহিষ আর আসবে কয়েক শ’ উট রাজস্থান থেকে, যার কারণে আশঙ্কা করা হচ্ছে কোরবানির পর এখানকার লোকজন এবার জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যা এড়ানো সম্ভব এসব মহিষ আমদানির পর পশু পালন বিভাগ বড় ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারলে। পশুসম্পদ মন্ত্রণালয় নড়েচড়ে বসলে রোগাক্রান্ত মহিষ আমদানি বন্ধ হতে পারে।
×