ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ২৭ জুলাই ২০১৬

বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে সারাদেশে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে বিভিন্ন নদ-নদীর ৬৫ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে ২০ পয়েন্টের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমেছে ২০ পয়েন্টে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এ কারণে পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগের কোন অন্ত নেই। গাইবান্ধা ॥ ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় গাইবান্ধা জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ঘাঘট নদীর পানি মঙ্গলবার বিপদসীমার ৫৬ সে.মি এবং বালাসী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৫০ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানিতে ডুবে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চরিতাবাড়ি চরের দোলন মিয়া নামের দু’বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বন্যাকবলিত জেলার সাঘাটা, ফুলছড়ি, সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ২২ ইউনিয়নে পানিবন্দী প্রায় তিন লাখ মানুষ বিশুদ্ধ পানি, শুকনা খাবার, গবাদিপশু সংরক্ষণ, পশুখাদ্য সঙ্কট ও পয়ঃনিষ্কাশন সঙ্কটে পড়েছে। সিরাজগঞ্জ ॥ বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিরাজগঞ্জের ৫ উপজেলার চরাঞ্চলের ২৮ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়েছে প্রায় এক লাখ মানুষ। এদিকে জেলার এনায়েতপুরের খুকনীতে বন্যার পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এরা হলোÑ তাঁত ব্যবসায়ী হাজী খোরশেদ আলীর ছেলে আবু হুরায়রা (৩) ও তাঁত শ্রমিক ফুলচান আলীর মেয়ে ফাহিমা খাতুন (২)। তারা সম্পর্কে মামা-ভাগ্নি। নেত্রকোনা ॥ টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের কারণে খালিয়াজুড়ি উপজেলার হাওড়াঞ্চলে বর্ষার পানি হু হু করে বাড়ছে। এরই মধ্যে উপজেলার প্রায় সবকটি গ্রাম পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এদিকে ঝড়ো বাতাসের কারণে সৃষ্ট ঢেউয়ে হাওড় তীরবর্তী গ্রামগুলোতে মারাত্মক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। মেন্দিপুর ইউনিয়নের নূরালীপুর গ্রামের বেশকিছু ঘর ইতোমধ্যে পানিতে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। বগুড়া ু॥ সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সারিয়াকান্দি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। টাঙ্গাইল ॥ কালিহাতী উপজেলার ১৪ গ্রাম যমুনা ও লৌহজং নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। শতাধিক বাড়িঘর ও ফসলি জমি ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন বাড়িঘর ভাঙছে। নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকায় নতুন নতুন জনপদ রয়েছে ভাঙ্গনের চরম হুমকির মুখে। নদীভাঙ্গনে ক্ষতিগস্তরা মানবেতর জীবনযাপন করলেও এখনও কোন সরকারী সাহায্য পায়নি। জামালপুর ॥ যমুনার পানি বিপদসীমার ৮১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জামালপুর জেলার ইসলামপুর ও মেলান্দহ উপজেলার আরও ৪০ গ্রাম নতুন করে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বন্যার কারণে জামালপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা মিলে শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ফরিদপুর ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় গোয়ালন্দ পয়েন্টে ১৭ সে.মি পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফরিদপুর সদরের চারটি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। ওই চারটি ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। মুন্সীগঞ্জ ॥ মুন্সীগঞ্জের পদ্মার পানি বিপদসীমার ১৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। মঙ্গলবার নিম্নাঞ্চলের আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে বহু পরিবার।
×