ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হাসানের সিরিয়া যাওয়ার কথা ছিল

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৭ জুলাই ২০১৬

হাসানের সিরিয়া যাওয়ার কথা ছিল

নিয়াজ আহমেদ লাবু ॥ রাজধানীর কল্যাণপুরে জঙ্গী আস্তানায় অভিযান চালিয়ে আটক মোঃ রাকিবুল হাসান রিগেনের (১৯) সিরিয়া যাওয়ার কথা ছিল। এক বছর আগে বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলায় শিবির পরিচালিত রেটিনা কোচিং সেন্টারে যাওয়ার নামে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিরুদ্দেশ হয়। এর এক বছর পর হাসানকে মঙ্গলবার রাজধানীর কল্যাণপুরের তাজ মঞ্জিল নামে জঙ্গী আস্তানায় পুলিশ অভিযান শুরুর ঘণ্টাখানেক পর ৫ তলা থেকে লাফিয়ে পড়ে পালানো সময় তাকে আটক করা হয়। রাত পৌনে ২টার দিকে সেখান থেকে তাকে আহত অবস্থায় আটকের পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতোলে নিয়ে যায় পুলিশ। ভোরের দিকে ‘স্টর্ম টোয়েন্টি সিক্স’ অভিযানে নয় জঙ্গী নিহত হয়। আটককৃত হাসান পুলিশকে জানায়, কল্যাণপুরে ওই ভবনের মেসে সে বাবুর্চির কাজ করত। কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কের গার্লস হাইস্কুলের পাশে ৫৩ নম্বর বাড়ির গায়ে ‘তাজ মঞ্জিল’ নাম লেখা থাকলেও স্থানীয়রা ছয়তলা ওই ভবনকে চেনেন ‘জাহাজ বিল্ডিং’ নামে। বাড়িওয়ালা থাকেন বাড়ির দ্বিতীয়তলায়। প্রতিটি তলায় রয়েছে চারটি করে ফ্ল্যাট। উপরের কয়েকটি ফ্লোর ভাড়া নিয়ে ব্যাচেলররা মেস করে থাকে। আর এই সুযোগে পঞ্চমতলায় জঙ্গী আস্তানা গড়ে তোলে হাসানসহ তার নয় সহযোগী। মঙ্গলবার সকালে ওই ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে পুলিশ বেষ্টিত অবস্থায় হাসানকে শয্যায় শুয়ে থাকতে । তার পায়ে ও মাথায় জখমের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দিচ্ছি হাসান। সে নিচু স্বরে পুলিশের জবাব দিচ্ছিল। হাসান পুলিশকে বলছিল, কল্যাণপুরের ওই ফ্ল্যাটে এক মাস ধরে সে রয়েছেন। শফিক নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে সে সেখানে ঢোকে। ওই ফ্ল্যাটে আরও ১০ জন থাকত। সোয়াতের নেতৃত্বে এই অভিযানে মোট নয়জন নিহত হয়। তারা সবাই জেএমবির সদস্য বলে ধারণা করছেন পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক। হাসান বলে, ওই ফ্ল্যাটে সে শুধু রান্নার কাজ করত। পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথপোকথনের এক পর্যায়ে হাসান বলে, তার সিরিয়া যাওয়ার কথা ছিল। আইএসে যোগ দিতে বিশ্বের অনেক দেশ থেকে অনেকের সিরিয়া যাওয়ার নজির রয়েছে। বাংলাদেশ থেকেও কয়েকজন গেছে বলে সংবাদ মাধ্যমে জেনেছে। হাসানের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে এসআই শাহজাহান টের পেয়ে যান। আশপাশে সাংবাদিক রয়েছেন। তখন পুলিশ সদস্যরা অন্য সবাইকে ওয়ার্ড থেকে বের করে দেন। হাসপাতালের জরুরী বিভাগের প্রধান ফটকেও পুলিশ অবস্থান নেয়। ক্যামেরা নিয়ে কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সে বিভিন্ন সময় বিভিন্নরকম কথা বলছে। একবার বলে সে পড়াশোনা করে। আবার বলছে আমি পড়াশোনা করি না। একবার বলে জেহাদ করতে সিরিয়া যাওয়ার কথা রয়েছে।
×