স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত শরীয়তপুরের সোলায়মান মোল্লা ওরফে সলেমান মৌলভী ও ইদ্রিস আলী সরদারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের অষ্টম সাক্ষী মোঃ ইসমাইল হোসেন সিকদার জবানবন্দী প্রদান করেছেন। জবানবন্দীতে সাক্ষী বলেন, সোলায়মান মোল্লা আমার বাবা আব্দুস সামাদ সিকদারকে দেখিয়ে বলে, মুক্তি যায় মুক্তি যায়, তখন পাকিস্তানী আর্মিরা বাবাকে বুকে গুলি করে হত্যা করে। জবানবন্দী শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য আজ বুধবার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে মুক্তাগাছার ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ দাখিলের জন্য ১৮ সেপ্টেম্বর দিন নির্ধারণ করেছে ট্রাইব্যুনাল। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। এ সময় ট্রাইব্যুনালে সাক্ষীকে সাক্ষ্যদানে সহায়তা করেন প্রসিকিউটর (সাবেক জেলা জজ) হƒষিকেশ সাহা, প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন, প্রসিকিউটর আবুল কালাম আসামিপক্ষে জেরা করেন এ্যাডভোকেট গাজী এম এইচ তামিম।
সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম মোঃ ইসমাইল হোসেন সিকদার। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৬৫ বছর। আমার ঠিকানা- গ্রাম-চরকাশাভোগ, থানা- পালং, জেলা- শরীয়তপুর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি কৃষি কাজ করতাম। বর্তমানেও আমি কৃষি কাজ করি। ১৯৭১ সালে ২২ মে বিকেল আনুমানিক ৩টার দিকে আমার বাবার সঙ্গে মাঠ থেকে গরু নিয়ে বাড়ির দিকে আসছিলাম। ঐ সময় ঐ রাস্তা দিয়ে পশ্চিম দিক থেকে রাজাকার আসামি মোঃ সোলায়মান মোল্লা ও রাজাকার আসামি ইদ্রিস আলী সরদারসহ কয়েক রাজাকার ও পাকিস্তান আর্মিকে আসতে দেখি। তখন আসামি মোঃ সোলায়মান মোল্লা আমার বাবা মোঃ আব্দুস সামাদ সিকদারকে দেখিয়ে বলে যে, মুক্তি যায়, মুক্তি যায়, (মুক্তিযোদ্ধা যায়, মুক্তিযোদ্ধা যায়)। তখন পাকিস্তান আর্মি আমার বাবাকে বুকে গুলি করে। তখন আমি আমার বাবাকে আহত অবস্থায় আমাদের বাড়িতে নিয়ে যাই। তখন আমার বাবা পানি খেতে চায়। তখন আমি আমার বাবাকে পানি খাওয়াই। এর পর পাকিস্তানী আর্মিদের আমাদের বাড়ির দিকে আসতে দেখি। তখন আমি আমাদের বাড়ির দক্ষিণে চলে যাই।
সাক্ষী আরও বলেন, আমি দক্ষিণ দিকে যাওয়ার পর পূর্ব দিকে কাশাভোগ হিন্দু পাড়ায় দিক থেকে গুলির শব্দ শুনতে পাই। ঐ দিন সন্ধ্যার পর আমি আমাদর বাড়িতে এসে আমার বাবাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই। পরের দিন সকাল আনুমানিক ৮টার দিকে আমার বাবার লাশ দাফন করি। আসামি মোঃ সোলায়মান মোল্লা ও ইদ্রিস আলী সরদার এবং আমি একই এলাকার লোক এবং আমরা একই বাজারে বাজার সদাই করতাম। এ কারণে আমি ঘটনার পূর্ব থেকেই এ দুইজন আসামিকে চিনতাম।