ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শিল্পকলায় বাঘের বিচিত্র অভিব্যক্তিময় আলোকচিত্র প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৭ জুলাই ২০১৬

শিল্পকলায় বাঘের বিচিত্র অভিব্যক্তিময় আলোকচিত্র প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাঘ দেখতে যেমন ভয় লাগে তেমনি ভালও লাগে। কেউবা আবার এই অভিজাত প্রাণীটির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন মমতার বন্ধনে। ভয়কে দূর করে বাঘকে ভালবাসা তেমনই এক স্বপ্নচারী তরুণ খান ফাতিম হাসান। তাই তো অসংখ্যবার বাঘের আঁচড় খেয়েও সরে যাননি ওদের কাছ থেকে। বরং বিশ্বব্যাপী বিপন্ন বাঘকে বাঁচাতে হয়েছেন আরও তৎপর । বন্ধুর মতো মিশেছেন বনের রাজার সঙ্গে। সখ্য গড়ে ফ্রেমবন্দী করেছেন বাঘের নানা রূপ-অভিব্যক্তি। সেসব ছবিতে যেমন আছে বাঘের হিংস্রতা তেমনি আছে তাদের দুষ্টুমি করা, খেলাধুলা করা, সাঁতারকাটা, বিম্মিত হওয়াসহ বহুমুখী আবেগ অনুভূতি। অভিব্যক্তিময় এমন ৮০টি আলোকচিত্র নিয়ে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় চলছে প্রদর্শনী। ‘বাঘ রক্ষা করে সুন্দরবন, আর সুন্দরবন রক্ষা করে বাংলাদেশকে’ সেøাগানে অনুষ্ঠিত প্রদর্শনীর শিরোনাম বাঘযাত্রা। আগামী ২৯ জুলাই আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস উদ্যাপনের অংশ হিসেবে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। চিত্রশালার তৃতীয় তলার ৫ নম্বর গ্যালারিটি এখন শুধুই বাঘময়। বড় বড় ফ্রেমবন্দী বাঘগুলো যেন তাকিয়ে থাকে দর্শনার্থীর দিকে। বিচিত্র ভাব-ভঙ্গিমার বাঘগুলো সহজেই টেনে নিয়ে যায় ফ্রেমের সামনে। প্রতিটি ছবিতেই নানাভাবে ফুটে উঠেছে বাঘমামার নানামুখী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। ধরা দিয়েছে ছোট ছোট শিশুবাঘ থেকে শুরু করে বিশাল আকারের পরিণত বাঘের দল। বৃহৎ পরিসরের প্রদর্শনালয়ে আছে কিডস কর্নার নামের বিশেষ স্থান। সেখানে ঠাঁই পেয়েছে শুধুই বাঘশাবকরা। বিচিত্র ভঙ্গিমার অসংখ্য ছবির মধ্যে বিশেষভাবে নজর কাড়ে দুই বাঘের শক্তি প্রদর্শনীর দৃশ্যটি। একটি জলাশয়ের মধ্যে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে ব্যস্ত দুই বাঘ। হলদে শরীরে ডোরাকাটা বাঘ দুটি লেজ উঁচিয়ে পরস্পরের সঙ্গে যুদ্ধে নেমেছে। আরেক ছবিতে জলাশয় থেকে ডাঙায় উঠতে লাফ দিচ্ছে বাঘ। পাশেরটিতে জলে সাঁতার কাটছে। ভূমিতে ছড়িয়ে থাকা টুকরো টুকরো লাল ইটের ওপর একরাশ অহঙ্কার নিয়ে মেলে ধরেছে থাবাটি। আরেকটি ছবিতে সরীসৃপের মতো গাছ বেয়ে উঠে যাচ্ছে । অন্যটিতে গাছের ডাল থেকে ঝাঁপ দিচ্ছে মাটিতে। শুধু তাই নয়, গাছের গুঁড়িতে আঁচড় কেটে তীক্ষè নখকে আরও ধারালো করে নেয়ার দৃশ্যেরও দেখা মেলে। চোখে পড়ে খেলায় মত্ত দুই বাঘশাবকের দুষ্টুমির দৃশ্য। আকাশে উড়ে যাওয়া পাখি দেখে বাঘের বিস্মিত হওয়ার ছবিও ধরা দিয়েছে প্রদর্শনীতে। শিকারের অপেক্ষায় জ্বলে ওঠা চোখে গাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকার ছবিটি মনে করিয়ে দেয় প্রয়োজনে বাঘের হিংস্র হওয়ার কথা। স্নান সেরে বিচিত্র মুখভঙ্গিতে শরীর ঝাঁকানোর পর চারপাশে জলের বিন্দু ছড়িয়ে পড়া ছবিটিও দারুণভাবে টেনে নেয় বাঘ দর্শনার্থীর চোখকে। প্রদর্শনী দেখে মুগ্ধ বেলায়াত হোসেন মামুন নামের এক দর্শনার্থী মন্তব্য খাতায় লিখেছেন, মনে হলো যেন কোন বাঘ পরিবারের মধ্য দিয়ে হেঁটে এলাম। এ এক অপার আনন্দদায়ক অনুভূতি।
×