ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আতঙ্কে জাপানীরা

জাপানে প্রতিবন্ধী সেবা কেন্দ্রে হামলায় নিহত ১৯

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২৭ জুলাই ২০১৬

জাপানে প্রতিবন্ধী সেবা কেন্দ্রে হামলায় নিহত ১৯

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ জাপানের রাজধানী টোকিওর দক্ষিণ-পশ্চিমের সাগামিহারা শহরের গার্ডেন ফ্যাসিলিটি নামের এক মানসিক প্রতিবন্ধী সেবা কেন্দ্রে ছুরি হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবারের এই হামলায় ১৯ জন নিহত ও অন্তত ৪৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহত অনেকের ঘাড়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। আহতরা অনেকে কথা বলতে পারছে না। খবরে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেশটিতে কোন হামলায় এত সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ঘটেনি। এই ঘটনায় হতাশা ও ক্ষোভে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে জাপানীরা। নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে পুরো জাপান। হামলাকারী সাতোশি ইমাৎসো নামে ২৬ বছর বয়সী একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হামলাকারী এই সেবাকেন্দ্রেরই সাবেক কর্মী। খবর বিবিসি ও এএফপির। স্থানীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, কুড়াল দিয়ে জানালা ভেঙ্গে সেবাকেন্দ্রের ভেতরে ঢোকে ইমাৎসো। নিরাপত্তারক্ষীরা প্রথমে বিষয়টি আঁচ করতে পারেননি। ভেতরে ঢুকেই চালায় তাণ্ডব লোকটি। একে একে ১৯ জনকে হত্যা করে। পরে নিজেই থানায় এসে ধরা দেয় হত্যাকারী। ইমাৎসো পুলিশকে জানায়, খুন করেছি। কারণ প্রতিবন্ধীদের বেঁচে না থাকাই ভাল।শের জিজ্ঞাসাবাদে সাতোশি ইমাৎসো বলেন, আমি আগে ওই সেবাকেন্দ্রে কাজ করতাম। আমাকে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে বরখাস্ত করা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, এই বরখাস্তের জেরেই সেবাকেন্দ্রটিতে হামলা করে থাকতে পারে ইমাৎসো। বস্তুত প্রতিবন্ধীদের মেরে ফেলার দাবিতে কিছুদিন ধরে তৎপর ছিল এই লোকটি। জাপানের পার্লামেন্টে একবার চিঠি দিয়ে ইমাৎসো বলেছিল সরকার অনুমতি দিলে আমি নিজ হাতে প্রতিবন্ধীদের খুন করব। কারণ এদের বেঁচে না থাকাই ভাল। এই সেবাকেন্দ্রটিতে ১৮ থেকে ৭৫ বছর বয়সী ১৪৯ প্রতিবন্ধী থাকে। জাপানে ছুরি বা বন্দুক হামলার ঘটনা বিরল। এই হামলার পর জাপানীদের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ ও হাতাশা দেখা দিয়েছে। হত্যাকারীকে আটক করা হলেও পুরো জাপানে আতঙ্ক বিরাজ করছে। শান্তিপ্রিয় জাপানীরা সারাবিশ্বে ভদ্রতার পরিচয় বহন করলেও মঙ্গলবার এই হামলার পর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রতিবন্ধী কেন্দ্রের পাশের বাসিন্দা নাওকি তানাকা বলেন, মধ্যরাতে পুলিশের গাড়ির হর্ন আর চারদিকে চিৎকার চেঁচামেচিতে ঘুম ভাঙ্গে আমার। আমার ৩০ বছর বয়সে এই ধরনের কোন পরিস্থিতি এখানে দেখিনি। তাই প্রথমে কিছুটা বিচলিত হয়েছিলাম। যখন শুনলাম, আমাদের এই প্রতিবন্ধী শিবিরে খুন হয়েছে তখন তো বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। আমার মনে হচ্ছে এ যেন অন্য এক জাপান।
×