ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জিডি বুক উদ্বোধন

এখন থেকে ফরম থানায় পাওয়া যাবে ॥ ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশিত: ০৯:০৪, ২৬ জুলাই ২০১৬

এখন থেকে ফরম থানায় পাওয়া যাবে ॥ ডিএমপি কমিশনার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার ফরম এখন ডিএমপির প্রতিটি থানা থেকেই সরবরাহ করা হবে। আবেদনকারীরা বিনামূল্যে এই ফরম সংগ্রহ করতে পারবেন। ফরম সংগ্রহ করে থানায় বসে কিংবা বাসায় পূরণ করে জমা দেয়া যাবে। সোমবার বিকেল চারটায় ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। ডিএমপি কমিশনার বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক ও স্মরণীয় দিন। ডিজিটাল পুলিশিংয়ের অংশ হিসেবে আজ জিডি বুক উদ্বোধন করা হলো। জিডি করতে গিয়ে মানুষের ভোগান্তির অভিযোগ থেকে বের হয়ে আসতে এবং মানুষের সুবিধার কথা চিন্তা করেই এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, সমস্যায় পড়ে পুলিশি সেবা নিতে থানায় আসা মানুষের কাছ থেকে সেবার নামে টাকা নিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কমিশনার বলেন, থানায় যারা আসেন তাদের অধিকাংশই মূলত বিভিন্ন সমস্যা পড়ে পুলিশী সেবার জন্য আসেন। কিন্তু সেবা নেয়ার ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতা, পুলিশী অসহযোগিতা, অর্থ নেয়ারও অভিযোগ শোনা যায়। এসব বন্ধে আমরা দীর্ঘদিন থেকে উপায় খুঁজছিলাম। এই জিডি করার নতুন ফরমেটে আর কোন হয়রানি থাকবে না। সেবার পথ আরও প্রশস্ত হবে। অনেক থানার পাশে রাইটাররা জিডি লিখে দেয়, কলম থাকে না, সাদা কাগজ থাকে না। কিন্তু এখন আর এসবের কিছুই লাগবে না। ভুক্তভোগীরা আসবেন, অভিযোগ লিখবেন, স্বাক্ষর করবেন, ফটোকপিও করতে হবে না। অটো কার্বন কপির মাধ্যমে তার কাজ হয়ে যাবে। জিডির সিরিয়াল নম্বর বসানোর পর ভুক্তভোগীরা একটি কপি নিয়ে চলে যাবেন। অবস্থা ও জিডির গুরুত্ব অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডিএমপি কমিশনার বলেন, কেউ যদি জিডি স্বহস্তে লিখে নিয়েও আসেন কিংবা কম্পিউটারে টাইপ করে নিয়ে আসেন, তাও জিডি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সেক্ষেত্রে জিডি নম্বর লিখতে হবে। থানা পুলিশের সেবার মান আরও বাড়াতে হবে। জনপুলিশের মেলবন্ধন তৈরির ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া কাজে আসবে। কোনভাবে যাতে মানুষের থানার পুলিশী সেবা পাবার ক্ষেত্রে বিড়ম্বনা তৈরি না হয়, সেজন্যই এই নতুন প্রক্রিয়া। আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, পুলিশী সেবার নামে থানার কোন কর্মকর্তা বা যে কেউ টাকা নিলে প্রমাণসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রাথমিকভাবে ডিএমপির প্রতিটি থানায় জিডির ৩৫-৪০ বই দেয়া হয়েছে। প্রতিটি বইয়ে ১০০ জিডি ফরম রয়েছে। জিডি ফরমগুলোতে রয়েছে অটো কার্বন কপির অপশন। এক কপি থানায় থাকবে। অপর কপি জিডিকারী সংগ্রহ করবে। সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির ৪৯ থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত ও ইন্সপেক্টর অপারেশন উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে নতুন জিডি বুক উদ্বোধন করেন। নিউমার্কেট, কলাবাগান ও উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে জিডি বুক হস্তান্তর করেন ডিএমপি কমিশনার। যেসব কারণে জিডি করা যাবে ॥ বিভিন্ন কারণে জিডি করা হয়। যেমন কেউ ভয় দেখালে বা হুমকি দিলে, নিরাপত্তার অভাব বোধ করলে থানায় জিডি করতে পারেন। শুধু তাই নয়, কোন ব্যক্তি বা তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের আশঙ্কা থাকলে জিডি করা যায়। এসবের বাইরেও কোন প্রয়োজনীয়তা কাগজপত্র, যেমন পরিচয়পত্র পাসপোর্ট, চেকবই, লাইসেন্স, শিক্ষাসংক্রান্ত সনদ, দলিল ইত্যাদি হারিয়ে গেলে জিডি করা যায়। এছাড়া কেউ কারো সম্পদের ক্ষতি করলে বা প্রাণনাশের হুমকি দিলে, দলিল হারিয়ে গেলে, বাসার কেউ নিখোঁজ হলে বা পালিয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে জিডির দরকার হয়। জিডি করা জরুরী। কারও পক্ষ থেকে হামলার আশঙ্কা বা ক্ষতি করতে পারে। তাহলেও জিডি করা হবে। এক্ষেত্রে দোষী ব্যক্তিকে শনাক্ত করা সহজ হয়। আইনী সহায়তার জন্য জিডি খুবই কার্যকর একটি পদক্ষেপও বটে।
×