ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

৯ সন্ত্রাসী আটক

জেনেভা ক্যাম্পে আকস্মিক অভিযান, বিপুল মাদক উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৬ জুলাই ২০১৬

জেনেভা ক্যাম্পে আকস্মিক অভিযান, বিপুল মাদক উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বহুল আলোচিত জেনেভা ক্যাম্পে আকস্মিক অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য ও অবৈধ মোটরসাইকেলসহ ৯ সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে দুই ঘণ্টাব্যাপী এ অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য অধিদফতর ও আর্মড পুলিশের প্রায় দেড় শতাধিক সদস্য। অভিযানে উদ্ধার করা হয় ১ হাজার পিস ইয়াবা, ২০ কেজি গাঁজা, সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেল। আটক করা হয় ৯ জনকে। তারা হলো সাব্বির, সাখাওয়াত, কোরবান, সোনা মিয়া, আবুল কালাম আজাদ, ইমরান, হোসেন, মিরাজ ও সুজন। তাদের মধ্যে প্রথম চারজন একাধিক মামলার পলাতক আসামি। বাকিরা চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় মাদক পরিদর্শক সাজেদুল আলম বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। আসামিদের আজ মঙ্গলবার রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন অপারেশনে নেতৃত্ব দেয়া মাদক অধিদফতরের পরিদর্শক কামরুল ইসলাম। পুলিশ জানায়, বিহারী ক্যাম্প নামে পরিচিত মোহাম্মদপুরের এই জেনেভা ক্যাম্প মাদক ব্যবসা, অস্ত্র গোলাবারুদের বেচাকেনা ও সন্ত্রাসীদের নিরাপদ ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ভাসমান অপরাধীরাও এখানে মাদকের টানে যাতায়াত করে। এরাই অনেক সময় রাজনৈতিক মিছিল সমাবেশে নাশকতার কাজেও সক্রিয় হয় বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে। বিগত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের প্রাক্কালে বিএনপি জামায়াতের নেতৃত্বে দেশব্যাপী আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াওয়ের মতো নাশকতায় এ ক্যাম্প থেকে রসদ সরবরাহ করা হতো বলে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে ওঠে এসেছে। এ ধরনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যখন অভিযান চালানোর উদ্যোগ নেয়া হতো, তখনই তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন ও হয়রানির অভিযোগ তুলে নস্যাৎ করে দিত। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর মাদকদ্রব্য অধিদফতরের উপ-পরিচালক মুকুল জ্যোতি চাকমা জনকণ্ঠকে বলেন, এই জেনেভা ক্যাম্প হচ্ছে রাজধানীর সবচেয়ে বড় মাদক আস্তানা। এখানে সরাসরি টেকনাফ থেকে ইয়াবা এনে মওজুদ করা হয়। তার সঙ্গে থাকে গাঁজাসহ অন্যান্য নেশার উপাদান। রাজধানীর বিত্তবান পরিবাারের তরুণ-তরুণী ও শিক্ষার্থীরা গাড়ি চালিয়ে এখানে এনে মাদক সেবন ও সংগ্রহ করে। এ ধরনের তথ্য প্রমাণাদি হাতে নিয়েই সোমবার দুপুর দুইটায় এ অভিযান চালানো হয়। তিনি জানান, এত বিশাল ক্যাম্পে এক যোগে অভিযান চালানোটা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। সেজন্যই দেড় শতাধিক আর্মড পুিলশ সদস্যের সহায়তায় এ অভিযান চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জেনেভা ক্যাম্পে অভিযান চালানো হতে পারে এমনটি বিশ্বাস করতে পারেনি এখানকার নেতৃবৃন্দ। অভিযানের প্রাক্কালে কয়েকজন নেতৃস্থানীয় বিহারী এসে আলোচনা ও তদবির চালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এরপরই চলে দুই ঘণ্টাব্যাপী অভিযান। এ সময় ক’জন ক্যাম্পের এক কোণ দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। তাদের হাতে ছিল বিভিন্ন প্যাকেট। অভিযানের সময়ও ক’জনকে মাদকসেবন করতে দেখেছে পুলিশ। তারা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড়ে কেটে পড়ে। মুকুল জ্যোতি চাকমা বলেন, এখন থেকে জেনেভা ক্যাম্পে নিয়মিত অভিযান চালানো হবে। যারা পালিয়ে গেছে তাদের ধরা হবে।
×