ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার;###;অনিল চন্দ্র দাশের জবানবন্দী

সলেমান মোল্লা ও ইদ্রিস খুঁচিয়ে হত্যা করে গুন ও ললিতকে

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৬ জুলাই ২০১৬

সলেমান মোল্লা ও ইদ্রিস খুঁচিয়ে হত্যা করে গুন ও ললিতকে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত শরীয়তপুরের সোলায়মান মোল্লা ওরফে সলেমান মৌলভী ও ইদ্রিস আলী সরদারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সপ্তম সাক্ষী অনিল চন্দ্র দাশ জবানবন্দী প্রদান করেছেন। জবানবন্দীতে সাক্ষী বলেন, সোলায়মান মোল্লা ও ইদ্রিস আলী সরদারসহ অন্য রাজাকাররা শুক্রানু গুণ ও ললিত মোহন কুণ্ডুকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে দেয়। এছাড়া রাজাকার ও পাকিস্তানী আর্মিরা পালং থানার কাশাভোগ ও মধ্যপাড়া গ্রামে আক্রমণ করে আনুমানিক ২০০ গ্রামবাসীকে হত্যা করে। জবানবন্দী শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষ্যর জন্য আজ মঙ্গলবার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে ময়মনসিংহের পাগলার রাজাকার খলিলুর রহমানকে মানবতাবিরোধী মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এ মামলায় পরবর্তী আদেশের জন্য ২৫ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। সাতক্ষীরার রাজাকার আব্দুল খালেক ম-লের তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ৯ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। এ সময় ট্রাইব্যুনালে সাক্ষীকে সাক্ষ্যদানে সহায়তা করেন প্রসিকিউটর (সাবেক জেলা জজ) হƒষিকেশ সাহা, আসামিপক্ষে জেরা করেন এ্যাডভোকেট গাজী এমএইচ তামিম। প্রসিকিউশনের সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম অনিল চন্দ্র দাশ। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৬১ বছর। আমার ঠিকানা গ্রাম- ধানুকা, থানা- পালং, জেলা- শরীয়তপুর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি তুলাষার উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র ছিলাম। এর পর আমি আর লেখাপড়া করিনি। এর পর আমি ব্যবসা শুরু করি। বর্তমানে আমি সাংসারিক কাজকর্ম করি। ১৯৭১ সালে পালং থানাটি হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা ছিল। সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, ১৯৭১ সালের ২২ মে বিকেল আনুমানিক ৩টার দিকে রাজাকার আসামি মোঃ সোলায়মান, রাজাকার ইদ্রিস আলী সরদারসহ তাদের সঙ্গীয় রাজাকার ও পাকিস্তানী আর্মিরা পালং থানার কাশাভোগ ও মধ্যপাড়া গ্রামে আক্রমণ করে আনুমানিক ২০০ গ্রামবাসীকে হত্যা করে। ওই ঘটনার সময় আমি নিজ বাড়িতে ছিলাম। ওই ঘটনার পর দুই গ্রামের অনেক বাসিন্দা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে আমাদের গ্রামে আসে এবং আমি তাদের কাছ থেকে এ ঘটনার বিষয় জানতে পারি। পরের দিন ২৩ মে বেলা আনুমানিক ১১টার দিকে আসামিদ্বয়সহ তাদের সঙ্গীয় রাজাকার ও পাকিস্তান আর্মি মালোপাড়া আক্রমণ করে ৩০-৩৫ মহিলা ও পুরুষকে আটক করে তাদের মাদারীপুরে এরআর হাওলাদার জুট মিলের আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। আটককৃত মহিলাদের তিন দিন আটক রেখে ধর্ষণ করা হয় আর পুরুষদের হত্যা করা হয়। এর কয়েকদিন পর জানতে পেরে আমি মালোপাড়ায় যাই। ওই ঘটনায় ধর্ষিতা যোগমায়া মালো ও বিজয়া মালো এবং তাদের আত্মীয়স্বজনদের নিকট থেকে ওই ঘটনা বিস্তারিত জানতে পারি। এ ঘটনায় আমাদের এলাকার অধিকাংশ হিন্দু ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
×