ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

জঙ্গী হামলার নীলনক্সা তৈরিতে জড়িতদের তথ্য পাওয়া গেছে

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৬ জুলাই ২০১৬

জঙ্গী হামলার নীলনক্সা তৈরিতে জড়িতদের তথ্য পাওয়া গেছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, গুলশান, শোলাকিয়াসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী ও জঙ্গী হামলার ‘নীলনক্সা’ তৈরিতে যারা কাজ করেছে, তাদের তথ্য পাওয়া গেছে। জঙ্গী ও সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত সবাইকে আমরা চিহ্নিত করেছি। সব ঘটনার পেছনে কারা এবং কিভাবে ঘটিয়েছে, আমাদের কাছে তাদের তথ্য এসে পড়েছে। বিভ্রান্তি ছড়ানো ছাড়া তারা আর কিছুই করতে পারবে না। এদেশে তাদের স্থান হবে না। সোমবার বিকেলে মোহাম্মদপুরে নিউ প্রিয়াঙ্কা কমিউনিটি সেন্টারে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বর্ধিতসভায় তিনি আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জঙ্গী হামলা এবং বাংলাদেশে হামলার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। বিশ্বের অন্য দেশের মতো আমাদের দেশের হামলার প্রেক্ষাপটের মিল নেই। বাংলাদেশ দেশীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছে, এটাও তারই একটা ধারাবাহিকতার অংশ। যতগুলো প্রমাণ আমাদের কাছে আসছে সবই একই সুতোয় গাঁথা। তিনি বলেন, আমরা কোন ধর্ম কিংবা সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত দিই না। তবে কেন এই আত্মঘাতী হামলা? এগুলো অমানুষের কাজ, অধর্মের কাজ। কোন ধর্মে মানুষ হত্যা করার বিধান নেই। একটা গোষ্ঠী যুবসমাজকে বিভ্রান্ত করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের বোঝানোর সময় এসেছে। গুলশানের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা অবাকদৃষ্টিতে দেখলাম, যারা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত তারা এর সঙ্গে জড়িত। এটা আমাদের সামনে একটি ভিন্ন মোটিভ নিয়ে আসছে। তাভেলা সিজার থেকে শুরু করে সব হত্যাকা- কেন ঘটিয়েছে, কিভাবে ঘটিয়েছে- তা আমরা জানতে পেরেছি। তাদের বিরুদ্ধে আজ সমস্ত জাতি ঐক্যবদ্ধ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, দেশের সকল জঙ্গী হামলা ও গুপ্তহত্যার তথ্যউপাত্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে চলে এসেছে। তাদের আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দেয়া হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাস-নাশকতামূলক কর্মকা-ের সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোন সংগঠন জড়িত নয়। এ সকল ঘটনার জন্য দুটি রাজনৈতিক দল দায়ী। একটি হচ্ছে বিএনপি, অপরটি জামায়াত। প্রত্যেকটি ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, যারা ধরা পড়েছে, যারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে- তারা বিএনপি-জামায়াতের লোক। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত সব হত্যাকা-ের সঙ্গে জামায়াত এবং বিএনপির সন্ত্রাসীরা জড়িত। আসলে তারা সরকারের পতন ঘটাতে না পেরে গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। ‘সিঙ্গাপুরে টাকা তারেক রহমান নয়, মামুন পাঠিয়েছে, মামুনের সঙ্গে তারেক রহমানের কোন সম্পর্ক নেই’Ñ মর্মে সম্প্রতি বিএনপির আইনজীবীদের বক্তব্যের সমালোচনা করে হানিফ বলেছেন, তারেক রহমান কি মামুনের বোনজামাই যে উনি (তারেক) মানুষের ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন? বাংলাদেশের মানুষ কি এতই বোকা? একজনের কার্ড দিয়ে টাকা খরচ করছে আবার বলছে তার সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার সুযোগ নেই। বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে হানিফ বলেন, তারেক রহমানের যে রায় হয়েছে আপনারা আইনী লড়াই করে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করুন। এই তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে হয়েছে। তিনি বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের যে বিচারক রায় দিয়েছিল সে আরেক অপরাধী। অপরাধী বলেই সপরিবারে বিদেশে পালিয়ে চলে গেছে। অর্থের বিনিময়ে তারেক রহমানকে খালাস দিয়েছিল। তাই ষড়যন্ত্র করে কোন লাভ নেই। শেখ হাসিনার পাশে বাংলাদেশের মানুষ আছে। যতদিন শেখ হাসিনার পাশে বাংলাদেশের মানুষ থাকবে ততদিন শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকবেন। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ এমপির সভাপতিত্বে বর্ধিতসভায় বক্তব্য রাখেনÑ আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক লে. কর্নেল (অব) ফারুক খান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ। বিএনপির সঙ্গে ঐক্য চাওয়া প্রতারণার শামিল -ড. হাছান ॥ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপিই জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদের মদদদাতা। তাই সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে বিএনপির ঐক্য চাওয়ার বিষয়টি জাতির সঙ্গে প্রতারণার শামিল। সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত ‘চলমান রাজনীতি ও জঙ্গীবাদ নির্মূলে করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অর্থ পাচারের মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের কারাদ- প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, তারেক রহমান আদালতের রায়ে দোষীসাব্যস্ত হয়েছে। আদালত তাকে কারাদ- দিয়েছে। এ নিয়ে বিএনপির আন্দোলনের হুমকি-ধমকি সমীচীন নয়। তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ ইস্যুতে দেশের আলেম-ওলামাসহ ১৬ কোটি মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। যারা নাশকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে চায় তাদের সঙ্গে ঐক্য হতে পারে না। ইসলাম শান্তি, মানবতা ও প্রতিবাদের ধর্ম। এ ধর্ম মানুষ হত্যা কিংবা মানুষের হাত-পায়ের রগ কাটা সমর্থন করে না। তিনি দেশব্যাপী সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদবিরোধী জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক ব্যারিস্টার জাকির আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেনÑ সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক আসাদুজ্জামান দুর্জয়, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম আকাশ, যুবলীগ নেতা শেখ হাফিজুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মাসুম প্রমুখ।
×