ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল ও বুয়েটে মানববন্ধন

জঙ্গীবাদ রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান তিন শীর্ষ বিদ্যাপীঠে

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২৬ জুলাই ২০১৬

জঙ্গীবাদ রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান তিন শীর্ষ বিদ্যাপীঠে

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওযার আহ্বান জানিয়েছে দেশের শীর্ষ তিন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ লক্ষ্যে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও বুয়েটে মানববন্ধন পালিত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। এতে সম্প্রতি জঙ্গী হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধের আহ্বান জানানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে সকাল এগারোটা থেকে বারোটা পর্র্যন্ত মানববন্ধন পালিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলক্ষেত মোড় সংলগ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণতন্ত্র ও মুক্তির তোরণ থেকে শুরু হয়ে স্মৃতি চিরন্তন, ফুলার রোড, চারুকলা অনুষদ, টিএসসির রাজু ভাস্কর্য, বাংলা একাডেমি, চাঁনখারপুল শহীদুল্লাহ হলের গেট থেকে দোয়েল চত্বর হয়ে শিক্ষা ভবন পর্যন্ত ছিল এ মানববন্ধনের ব্যাপ্তি। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকে। একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও অন্যান্য ভবন তালাবদ্ধ রাখা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সিনেট সদস্য, সিন্ডিকেট সদস্য, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরিন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, ঢাবি শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ইমদাদুল হক, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য বাহালুল মজনুন চুন্নু ও ঢাবির বিভিন্ন সমিতি-সংগঠনের নেতারা। অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, জঙ্গীবাদ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব সময় কঠোর মনোভাব পোষণ করে। এখানের কোন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কোন জঙ্গী সংগঠনের সদস্য বা কোন জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে প্রশাসনের কাছে তুলে দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোথাও জঙ্গীবাদী কর্মকা- দেখা গেলে অথবা সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক তা প্রশাসনকে জানানো আমাদের সকলের দায়িত্ব। উপাচার্য আরও বলেন, বাংলাদেশের জঙ্গীবাদী কর্মকা-গুলোর সঙ্গে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জড়িত। তারা নানা কর্মকা-ের মাধ্যমে এ দেশে জঙ্গীবাদ প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ কারণেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গত বছর পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে। আমরা কখনও সন্ত্রাস মেনে নেইনি আর নেবও না। এ সময় তিনি দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে একযোগে জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। সন্ত্রাস নৈরাজ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরুদ্ধে মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। দুপুর বারোটা থেকে ১টা পর্যন্ত বুয়েট শহীদ মিনারে জঙ্গীবাদবিরোধী এই মানববন্ধন পালন করে বুয়েটের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। কর্মসূচীতে অংশ নেন অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, অধ্যাপক মিজানুর রহমান, ড. কায়েস বিন জামান, মুমিনুর রহমান, আইইবির ঢাকা কেন্দ্রের ভাইস চেয়ারম্যান কাজী খাইরুল বাসার, বুয়েট ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ কনক প্রমুখ। জঙ্গীরা দেশ ও জাতির শত্রু উল্লেখ করে তাদের প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছে বুয়েট বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মিজানুর রহমান। গুলশান ও শোলাকিয়ার জঙ্গী হামলার কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, রোজার মাসে গুলশান ও শোলাকিয়ার ঈদ জামাতে হামলা করে জঙ্গীরা এতে আমরা মর্মাহত। বাংলাদেশ একটি ধর্মসহনীয় অসাম্প্রদায়িক দেশ। যারা দেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে তারা দেশ, জাতি, রাষ্ট্রের শত্রু। এদের নিশ্চিহ্ন করতে হবে। এই জঙ্গীবাদী কর্মকা-ের সঙ্গে যারা জড়িত এবং যারা জঙ্গীবাদকে মদদ দিচ্ছে তাদের মূলোৎপাটন করে শাস্তির আওতায় আনার দাবিও জানান তিনি। গুলশান ও শোলাকিয়াসহ সব জঙ্গী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের (ঢামেক) শিক্ষক সমিতি। বেলা ১২টার দিকে ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও’ শিরোনামে এই ব্যানারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢামেক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ আবু ইউসুফ ফকির, সাধারণ সম্পাদক ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) আহ্বায়ক ডাঃ দেবেশ চন্দ্র তালুকদার, ঢামেকের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ ইসমাইল খান, মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুদীপ রঞ্জন দেব। ঢামেক হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ও নার্সরা ওই কর্মসূচীতে যোগ দেন। সব জঙ্গী হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তারা বলেন, ধর্মের নামে এ ধরনের সন্ত্রাসবাদ দেশের মানুষ কখনোই মেনে নেবে না।
×