ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এ্যামনেস্টির দাবি

যৌন নির্যাতন ও অনাহারের শিকার বন্দী তুর্কী সেনারা

প্রকাশিত: ০৪:০০, ২৬ জুলাই ২০১৬

যৌন নির্যাতন ও অনাহারের শিকার বন্দী তুর্কী সেনারা

তুরস্কের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর বন্দী তুর্কি সেনাদের যৌন নির্যাতন এবং অনাহারে রাখা ও কয়েকদিন পর্যন্ত পানি ছাড়া রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটি বলেছে, তুর্কি পুলিশ ওই বন্দীদের খাবার, পানি ও চিকিৎসা সেবা দিতে অস্বীকার করেছে বলে তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে। খবর মিরর ও ডেইলি এক্সপ্রেসের। মানবাধিকার কর্মীরা বলেছেন, ১০ ‘হাজার বন্দীর অনেককেই ঘোড়ার আস্তাবল ও খেলার হলে বন্দী রাখা হয়। এদেরকে নির্যাতন এবং অনেক বন্দীকে চার হাত-পা বেঁধে মানবেতর অবস্থায় রাখা হয়। এ্যামনেস্টি এই বন্দীদের সঙ্গে অনতিবিলম্বে পরিবারের লোকজনের সাক্ষাতের সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এক সপ্তাহ আগে অভ্যুত্থান চেষ্টার পর দেশজুড়ে ব্যাপক ধারপাকড় চলে এবং দেশটিতে তিন মাসের জরুরী অবস্থা জারি করা হয়। অভ্যুত্থান চেষ্টার ঘটনায় ১০৪ জন সৈন্যসহ এ পর্যন্ত দুই শতাধিক লোক নিহত ও এক হাজার ৫০০ লোক আহত হয়েছে। এ্যামনেস্টি বলেছে, আদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ আছে যে, তুর্কি পুলিশ এই বন্দীদের চরম অমানবিক অবস্থায় ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় পর্যন্ত বেঁধে রেখেছে, বন্দীদের খাবার, পানি ও চিকিৎসা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং তাদরে ব্যাপক মারধর ও যৌন নির্যাতনসহ নানা নিপীড়ন করা হয়েছে। এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ইউরোপ বিষয়ক পরিচালক জন ডালহুইসেন বলেছেন, আটক অবস্থায় মারধর ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক। নির্যাতনের হাড় হিম করা ছবি ও ভিডিও তুরস্ক জুড়ে প্রকাশ করার পরও সরকার নির্যাতন নিয়ে রহস্যজনকভাবে নিশ্চুপ রয়েছে। আটক কেন্দ্রগুলোতে বন্দীরা কেমন অবস্থায় রয়েছে তা নিয়ে সেখানে দায়িত্ব পালন করা আইনজীবী, চিকিৎসক ও এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছে এ্যামনেস্টি। তারা বন্দীদের সঙ্গে অমানুষিক নির্যাতন ও দুর্ব্যবহারের কথা শুনেছেন। বিশেষ করে আঙ্কারা পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স স্পোর্টস হল, আঙ্কারা বাসকেন্ট স্পোর্টস হল ও অশ্বচালনা ক্লাবগুলোর আস্তাবলগুলো নির্যাতনের ঘটনা বেশি ঘটে। বন্দীদের পক্ষে কাজ করা আঙ্কারার দুই আইনজীবী এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে বলেছেন, বন্দীরা তাদের জানিয়েছে, তারা দেখেছেন উর্ধতন সামরিক কর্মকর্তারা এবং পুলিশ কর্মকর্তারা ধর্ষণ করছেন। আঙ্কারা পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স স্পোর্টস হলে দায়িত্ব পালন করা এক ব্যক্তি বলেছেন, এক বন্দীর শরীরে যে ক্ষতচিহ্ন ছিল, তা একমাত্র মারধরের কারণেই হওয়া সম্ভব। তিনি আরও বলেছেন, ওই হলে যে ৬৫০ থেকে ৮০০ জন সৈন্য রাখা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৩০০ জনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রায় ৪০ জন এত আঘাত পেয়েছে যে, তারা হাঁটতে পারছিল না এবং দুইজন দাঁড়াতেই পারছিল না। অন্য একটি কেন্দ্রে বন্দী থাকা এক নারীর মুখ ও মাথা থেতলানো ছিল।
×