ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সোমবার নববধূসহ ফিরেছেন

মায়ের ওপর অভিমান করে মুন্না বাড়ি ছেড়েছিলেন

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ২৬ জুলাই ২০১৬

মায়ের ওপর অভিমান করে মুন্না বাড়ি ছেড়েছিলেন

সাজেদ রহমান, যশোর অফিস ॥ পুলিশের তালিকাভুক্ত ‘কথিত জঙ্গী’ মুন্না নববিবাহিতা স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছেন। দু’সপ্তাহ ধরে জঙ্গী তালিকায় নাম ওঠায় আলোচনায় ছিলেন মুন্না। সোমবার ভোরে ফিরে আসায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এদিন দুপুরে মুন্না যশোর কোতোয়ালি থানায় উপস্থিত হয়ে জানান, বকাঝকা করায় মায়ের ওপর অভিমান করে তিনি দু’বছর আগে বাড়ি ছাড়েন। ঢাকায় চাকরি করে তার জীবন কেটেছে। একদিন আগে ঢাকায় তিনি বিয়ে করেছেন। বিয়ের পরই বউ নিয়ে যশোরে ফিরে এসেছেন। জঙ্গী তৎপরতার সঙ্গে তার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্দেহভাজন এই কথিত জঙ্গী নিখোঁজ কামরুজ্জামান তুহিন ওরফে মুন্না শহরের শংকরপুর গোলপাতা মসজিদ এলাকার আবদুস সোবাহানের ছেলে। সোমবার দুপুরে যশোর কোতোয়ালি থানায় হাজির হয়ে নিখোঁজের পরের ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি। এর আগে গত ১০ জুলাই পরিবারের পক্ষ থেকে মুন্না নিখোঁজের বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। মুন্না জানান, দুই বছর আগে ক্রিকেট খেলা দেখা নিয়ে তার মা বকাবকি করেনÑ ‘তোর মুখ আমি দেখতি চাইনে, তুই বাড়ি থাকলি আমার মরা মুখ দেখপি’। মায়ের এ কথায় অভিমানে ঘর ছাড়েন মুন্না। ২০১৪ সালের জুলাই মাসে ঘর ছাড়ার পর আর বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না তার। ঢাকায় গিয়ে প্রথমে জিনজিরা এলাকায় ডেকোরেটরের দোকানে কাজ নেন। এরপর পুরান ঢাকার ইসলামবাগে মাইশা প্লাস্টিক কোম্পানিতে চাকরি নেন। এভাবে কেটে যায় দু’বছর। সেখানে থাকার সুবাদে একই এলাকার ইয়াসমিন আক্তারের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে মেয়ের পরিবার বিষয়টি জানতে পারে। মেয়ের পরিবার থেকে বলা হয় অভিভাবকরা না এলে বিয়ে হবে না। এরপর গত শনিবার (২৩ জুলাই) মুন্না বাড়িতে যোগাযোগ করে বিয়ের কথা জানান। দুই বছর পর ছেলের সন্ধান পেয়ে মুন্নার স্বজনরা ঢাকায় যান। রবিবার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। মুন্না জানান, বিয়ের জন্য দু’বছর পর বাড়িতে ফোন করেন তিনি। বিয়ে নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে জানতে পারেন পুলিশের সন্দেহভাজন জঙ্গী তালিকায় তার নাম উঠেছে। মুন্না বলেন, ২০০৯ সালে এইচএসসি পাসের পর সরকারী সিটি কলেজে অনার্সে ভর্তি হয়েছিলাম। এরপর আর্থিক অনটনের কারণে লেখাপড়া হয়নি। ২০০৯ সালের পর থেকে আর কলেজে যাইনি। মুন্নার বাবা চা বিক্রেতা আবদুস সোবহান জানান, তার ছেলের সঙ্গে বাড়ির যোগাযোগ না থাকায় সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী তারা থানায় জিডি করেন। কিন্তু পুলিশ তার ছেলেকে জঙ্গী বানিয়ে দিয়েছে। তার ছেলে জঙ্গী নয় বলে তিনি দাবি করেন। তার মা শিরিনা আক্তার কমলা বলেন, ‘সরকার বলেছে যাদের ছেলে নিখোঁজ তাদের থানায় জিডি করতি হবে। না হলি তাদের বাবা-মাকে ধরে নিয়ে আসবে পুলিশ। আমার ছেলে দুই বছর নিখোঁজ ছিল। তাই থানায় জিডি করেছিলাম।
×