ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্নীতি কমাতে আগামী বছর থেকে অনলাইনে লেনদেন ॥ অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৫ জুলাই ২০১৬

দুর্নীতি কমাতে আগামী বছর থেকে অনলাইনে লেনদেন ॥ অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দুর্নীতি কমাতে আগামী বছর থেকে সবক্ষেত্রে অনলাইনে অর্থ লেনদেন ও ই-টেন্ডার প্রক্রিয়া চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রতিষ্ঠা এবং বিভিন্ন ধরনের আইন-কানুন করেও সরকার দুর্নীতি দমনে খুব একটা এগোতে পারেনি। রবিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ের সুরমা হলরুমে ‘বৈষম্য ও দারিদ্র্য নিরসনে বাজেট ও অন্যান্য নীতি-কাঠামোর ভূমিকা’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এসব মন্তব্য করেন। সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপ (এপিপিজি) এ সংলাপের আয়োজন করে। সাবেক মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি এবং মানবাধিকার সম্পর্কিত সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের চেয়ারপার্সন ডাঃ দীপু মনির সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় চীফ হুইপ ফখরুল ইমামসহ সরকারদলীয় এমপি ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক বিনায়ক সেন। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন এপিপিজি’র সেক্রেটারি জেনারেল শিশির শীল। অর্থমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর ব্যবস্থা হতে পারে অনলাইনে অর্থ লেনদেন ও টেন্ডার প্রক্রিয়া। সরকারের সব ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা চালু করা হলে দুর্নীতি কমানো সম্ভব। তিনি সরকারের সব বিভাগকে যার যার জায়গা থেকে যতটা সম্ভব কাজের ক্ষেত্রে অনলাইন পদ্ধতি চালু করার আহ্বান জানান। অর্থমন্ত্রী নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ইতোপূর্বে তিনি সিলেটের একটি কলেজের সভাপতি ছিলেন। ওই কলেজে আগে যেখানে ভর্তি কার্যক্রম থেকে আয় হতো আট লাখ টাকা, সেখানে যখন অনলাইন পদ্ধতি ভর্তি চালু করা হলো, সেই আয় বেড়ে হলো ৮৩ লাখ টাকা। আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, অনলাইনে লেনদেন হলে চুরি ঠেকানো সম্ভব, চোর ধরা যায় এবং অর্থ যার কাছে যাওয়ার কথা তার কাছেই যায়। ফলে সরকার পরিচালনায় বাজেটের অপচয় হয় না। সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানোর কৌশল নিয়ে তিনি বলেন, আয়করদাতার সংখ্যা এই সরকারের চ?লতি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ২০ লাখে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সংখ্যা এখন ১২ লাখ। তিনি বলেন, রাজস্ব আয়ের তুলনায় দেশের মানুষকে যে সামাজিক সুরক্ষা দেয়া হয়, তা অচিন্তনীয়। ১৯৯৭-৯৮ সাল থেকে মানুষকে সামাজিক সুরক্ষায় আনা হয়েছে। বর্তমানে ৬০ শতাংশ মানুষকে সরকার পক্ষ থেকে সহায়তা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু অর্থমন্ত্রীকে একটি প্রস্তাব দিয়ে বলেন, এক কোটি টাকা কর দিতে পারেন, ?এমন ৩০ হাজার করদাতাকে আগে চিহ্নিত করা হোক। এই প্রস্তাবটিকে স্বাগত জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, এটি চমৎকার প্রস্তাব। কীভাবে এমন করদাতাদের চিহ্নিত করা যায়, সে পদক্ষেপ তিনি নেবেন। শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে মুহিত বলেন, আমাদের প্রাইমারী ও উচ্চশিক্ষার পদ্ধতি ভাল। কিন্তু মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থা ভাল নয় বলে তিনি মনে করেন। এ নিয়ে তিনি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলে জানান অর্থমন্ত্রী। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, দেশের দারিদ্র্যের যে কাঠামো রয়েছে, সেই কাঠামোই দারিদ্র্য নিরসনের প্রথম সমস্যা। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ধনী থেকে দরিদ্র হয়ে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে।
×