ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

টিআর ও কাবিখা বরাদ্দের অর্ধেক যায় এমপিদের পকেটে ॥ তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২৫ জুলাই ২০১৬

টিআর ও কাবিখা বরাদ্দের অর্ধেক যায় এমপিদের পকেটে ॥ তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, দরিদ্রদের সহায়তার জন্য সরকারী কর্মসূচী টিআর ও কাবিখা (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) বরাদ্দের ৮০ শতাংশই চুরি হয়। ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হলে এর অর্ধেক যায় এমপিদের (সংসদ সদস্য) পকেটে। বাকি ১৫০ কোটি টাকার সিংহভাগ যায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের পকেটে। এ দুর্নীতিকে আমরা চোখ বন্ধ করে প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছি। রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ভবনের সম্মেলন কক্ষে ‘গ্লোবাল সিটিজেনস ফোরাম অন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সামিট ২০১৬’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। পিকেএসএফ সভাপতি ও ডেভেলপমেন্ট সামিট বাংলাদেশের আহ্বায়ক অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মনজুরুল ইসলাম ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আব্দুল মোমেন। স্বাগত বক্তব্য দেন এমিনেন্স এ্যাসোসিয়েটস ফর সোস্যাল ডেভেলপমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শামীম হায়দার তালুকদার। অনুষ্ঠানে হাসানুল হক ইনু বলেন, সব এমপিই হয়ত চুরি করেন না। কিন্তু বেশির ভাগ এমপিই এ কাজটি করেন। এটি বন্ধের জন্য উন্নয়ন বাজেটের অর্থ সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদের বাজেটে দেয়া উচিত। এতে উন্নয়ন বৈষম্য কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি। মন্ত্রী আরও বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন করতে হলে বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। ভিক্ষুকদের নিয়ে দেশের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রত্যেক মানুষকে সক্ষম হতে হবে। তা না হলে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে যতই বরাদ্দ দেয়া হোক; কোন কাজে আসবে না। সভাপতির বক্তব্যে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ বলেন, সমন্বিত প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হলে অর্থনীতিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মকা- বাড়াতে হবে। অর্থনীতিতে মানুষের অংশগ্রহণ যত বাড়বে, বৈষম্য তত দূর হবে। এর ফলে উন্নয়ন টেকসই হবে। তিনি বলেন, শতাংশের দিক থেকে দারিদ্র্য নিরসনে অগ্রগতি হলেও দেশে এখনও সাড়ে তিন কোটি দরিদ্র এবং দুই কোটি অতিদরিদ্র মানুষ রয়েছে। এখন দারিদ্র্যের বহুমাত্রিকতা মাপতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়নে নিজস্ব চিন্তা চেতনা থাকতে হবে। এছাড়া নীতি কৌশল ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় থাকা জরুরী বলেও জানান কাজী খলীকুজ্জমান। অনুষ্ঠানের শুরুতে দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়, তৃণমূল পর্যায়ের সঙ্গে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ, সুশীল সমাজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম, সাংবাদিকদের মেলবন্ধন তৈরির মাধ্যমে এসডিজির বিভিন্ন গুরুত্ব¡পূর্ণ দিক অগ্রাধিকারভিত্তিতে তুলে ধরা ও সুপারিশমালা প্রস্তুত করা। সম্মেলনে মোট নয়টি সেশন থাকবে। এসব সেশনে এসডিজির প্রধান ছয়টি প্রতিপাদ্য তুলে ধরা হবে। এগুলো হলো- দারিদ্র্য ও ক্ষুধার সমাপ্তি, সুস্থ জীবন নিশ্চিত করা এবং সব বয়সের সবার জন্য মঙ্গল প্রচার, সমন্বিত ন্যায়সঙ্গত ও গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ, সকলের জন্য টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা ও তার প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণ, নিরাপদ, প্রাণবন্ত টেকসই শহর ও জনবসতি গঠন এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও তার প্রভাব মোকাবেলায় জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
×