ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বড়পুকুরিয়ায় কয়লাভিত্তিক ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুত ইউনিটের নির্মাণকাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে

নির্ধারিত সময়ের ৪ মাস আগেই বিদ্যুত উৎপাদনের টার্গেট

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ২৫ জুলাই ২০১৬

নির্ধারিত সময়ের ৪ মাস আগেই বিদ্যুত উৎপাদনের টার্গেট

শ আ ম হায়দার, পার্বতীপুর ॥ বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুত কেন্দ্রে ২৭৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার ৩ নম্বর ইউনিট স্থাপনের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ২০১৮ সালের জুলাই মাসের মধ্যে ইউনিটটি উৎপাদনে যাওয়ার কথা। ইতোমধ্যেই নতুন ইউনিটটির ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে উৎপাদনে গেলে বড়পুকুরিয়া ২৫০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ৫২৫ মেগাওয়াটে উন্নীত হবে। এটি বিদ্যুত সেক্টরে সাফল্যের আরেক ধাপ অগ্রগতি। এর ফলে দেশের উত্তর-পশ্চিম জোনের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণসহ লো ভোল্টেজজনিত সমস্যা কমে আসবে। পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়ায় কয়লা খনি থেকে উৎপাদিত কয়লা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে খনিমুখে ২৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুত কেন্দ্র রয়েছে। এখানে রয়েছে ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি বিদ্যুত ইউনিট। এ চত্বরেই ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৩ নম্বর ইউনিট স্থাপিত হচ্ছে। সূত্রমতে, ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩ নম্বর ইউনিটটি বাস্তবায়ন করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জয়েন্ট ভেঞ্চার অব হারবিন ইলেক্ট্র্রিক ইন্টারন্যাশনাল ও সিসিসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গত বছরের জুলাই মাস থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে। সরেজমিন প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের মূল ভবনসংলগ্ন (বয়লার ও মেশিন হাউস) উত্তর পাশে ৩ নম্বর ইউনিটের বয়লার, টারবাইন, চিমনি নির্মাণের পাইলিংসহ সিভিল ওয়ার্ক প্রায় শেষ পর্যায়ে। মেইন ভবন ও বয়লার হাউসের স্টিল স্ট্রাকচার, ২২০ মিটার চিমনি নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ পুরোদমে চলছে। বৃষ্টির মধ্যে ভিজে চীনা প্রকৌশলী, বিউবোর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দেশী শ্রমিকরা কাজে ব্যস্ত। এখানে কথা হয় ৩ নম্বর ইউনিট বাস্তবায়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) চৌধুরী নুরুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি জনকণ্ঠকে জানান, চলতি জুলাই মাসের মধ্যে ৩০ শতাংশ কাজের টার্গেটের বিপরীতে ৪০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রায় এক হাজার দেশী শ্রমিক, ২৫০ জন চীনা প্রকৌশলী ও বিউবোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দিনরাত কাজ করায় তা সম্ভব হয়েছে। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত ৯০ শতাংশ যন্ত্রপাতিও প্রকল্প এলাকায় চলে এসেছে। অবশিষ্ট ১০ শতাংশ যন্ত্রপাতি আগামী মাসে প্রকল্প এলাকায় চলে আসবে। ২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে ইউনিটটি উৎপাদনে যাওয়ার কথা থাকলেও যে গতিতে কাজ চলছে তাতে নির্ধারিত সময়ের কমপক্ষে চার মাস আগেই প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে ইউনিটটি উৎপাদনে যাবে বলে তিনি আশা করছেন। এতে উৎপাদিত বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে যোগ হয়ে ট্রান্সমিশন লস কমাবে। ৩ নম্বর ইউনিটটি চালু রাখতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় দুই হাজার টন হিসাবে বছরে প্রায় সাত লাখ টন কয়লার প্রয়োজন হবে। এতে বড়পুকুরিয়া খনির কয়লার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে বলে তিনি মনে করেন। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে এক হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা ও ৮৫২ কোটি টাকা দেশীয় মুদ্রা রয়েছে। এতে প্রতি কিলোওয়াট স্থাপন ব্যয় হবে প্রায় এক হাজার ২০০ মার্কিন ডলার। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পিডিবির চুক্তি স্বাক্ষর হয় ২০১৩ সালের ৪ জুলাই। চুক্তি কার্যকর হয় ২০১৫ সালের ১৫ জুলাই এবং চুক্তি কার্যকরের পর পরই প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়। চুক্তি কার্যকরের দিন থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ তিন বছর ধরা হয়েছে।
×