ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টেস্ট নিয়েই ভাবছেন মুমিনুল

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২৪ জুলাই ২০১৬

টেস্ট নিয়েই ভাবছেন মুমিনুল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এ মুহূর্তে শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্ব ক্রিকেটেই একটি নাম উচ্চারিত হচ্ছে জোরেশোরে। সেই নামটি হচ্ছে বাংলাদেশ ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান। এ বিস্ময় বালক যা করে দেখাচ্ছেন, তেমনটি করতে চান সবাই। বিশ্ব দরবারে নিজের নাম ছড়িয়ে দিতে চান। বাংলাদেশ ক্রিকেটাররাও এর বাইরে নন। মুস্তাফিজের মতো ক্রিকেটাররা আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে দেয়। মুমিনুল হক যেমন শনিবার ফিটনেস ট্রেনিং শেষে বলেই দিলেন, মুস্তাফিজ আত্মবিশ্বাস জাগায়। বিশ্ব ক্রিকেট এখন চোষে বেড়াচ্ছেন মুস্তাফিজ। বাংলাদেশ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের পর মুস্তাফিজই এখন বিশ্বের সব টি২০ টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন। দেশের নামও উজ্জ্বল করছেন। সেই সঙ্গে নিজেকে আরও উঁচুতে নিয়ে যাচ্ছেন। সাকিব ও মুস্তাফিজের প্রসঙ্গ উঠতেই মুমিনুল জানিয়ে দেন, ‘এটা ভাবতেই ভাল লাগে। আগে খেলতেন সাকিব ভাই। এখন মুস্তাফিজ। মুস্তাফিজকে এখন অন্য লেভেলের মনে হয়। দেখতেও ভাল লাগে। নিজের মধ্যেও আত্মবিশ্বাস জেগে ওঠে। ওরা যে রকম পারছে, আমিও সে রকম স্বপ্ন দেখছি..., আমি নিজেও স্বপ্ন দেখি...। এটাই আমার কাছে খুব ভাল লাগে।’ গতবছর জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশ দল সর্বশেষ টেস্ট সিরিজ খেলেছে। এক বছর হয়ে গেল। কিন্তু এরমধ্যে আর কোন টেস্ট খেলা হয়নি। তাই মুমিনুল হকের ধারাবাহিক পারফর্মেন্সও চোখে পড়েনি। অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ রয়েছে। সেই সিরিজে আবার মুমিনুলকে দেখা যাবে। একবছর পর টেস্ট খেলতে নামার আকাক্সক্ষা কি একটু বেশিই হচ্ছে না? মুমিনুল জানালেন, ‘হ্যাঁ আমার কাছে একটু বেশিই কাক্সিক্ষত। কারণ, অনেকদিন হলো খেলার মধ্যে নেই। এটা একটা ব্যাপার হতে পারে। অনেকেই মনে করছেন একটু সমস্যা হবে কিনা। আমি আশাকরি এমন কোন সমস্যা হবে না। কারণ এর মধ্যে আমি বিসিএল ও জাতীয় লীগ খেলেছি। চার দিনের খেলার মধ্য দিয়ে টেস্ট খেলার মতোই টাচে ছিলাম। অন্যরা ওভাবে ছিল না। ওই অনুযায়ী আমি একটু এগিয়ে থাকব।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আমি বছরে তিন-চারটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পাই। মানুষের কি রকম আকাক্সক্ষা তা জানি না। কিন্তু আমার নিজেরটা অনেক বেশি। কারণ একটা বছরে আর কতটাই টেস্ট পাব। ওই সময়ে নিজেকে উজাড় করে দেই পারফর্ম করার জন্যে।’ মুমিনুলকে এখন টেস্ট স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবেই ধরে নেয়া হয়েছে। এতে মুমিনুল কি কষ্ট পান, না গর্ব হয়। মুমিনুল নিজেই বললেন, ‘কষ্টও লাগে না। আবার গর্বও হয় না। এই জিনিসটা আমি নিজে তৈরি করেছি। টেস্টে আমার গড় (৩০ ইনিংসে ৪ শতকসহ ৫৬.০০ গড়ে ১৪৫৬ রান) আল্লাহর রহমতে ভাল। ওইভাবেই আমি আমাকে গড়েছি। এজন্য আমার কাছে অতটা ভালও লাগে না, আবার খারাপও লাগে না। সব সময় খেলার মধ্যে থাকলে ভাল লাগে। এই আর কি।’ ২০১৪ সালের নবেম্বরের পরও টেস্ট ক্রিকেটে দীর্ঘ বিরতি পড়ে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের পর এপ্রিলে আবার টেস্ট খেলা হয়। মুমিনুল ঠিকই বাজিমাত করেন। দুই টেস্টেই পাকিস্তানের বিপক্ষে অর্ধশতক করে দেখান। তাই বিরতি মুমিনুলকে যে ব্যর্থতার মাঝে ফেলে দেয় না, তা বোঝাই যাচ্ছে। মুমিনুল তাই বলেছেন, ‘বিশ্বকাপের অনেকদিন পর আমি পাকিস্তানের সাথে ফিরে দুটা পঞ্চাশ করেছিলাম। অনেকেই বলছিল যে ওই সময়ে ওই রান করা কষ্টকর। বলেছিল, এতদিন পরে বাইরে থাকার পর এভাবে খেলা কঠিন। সাকিব ও তামিম ভাই বলছিল। আসলে কঠিন হলেও আমি ওভাবে চিন্তা করি না। আপনি যখনই খেলেন। সেটা এক বছর পর হোক, বা দশ বছর পর হোক; পারফর্ম না করলে কিন্তু বাদ পড়ে যাব। এমনিতেই আমরা টেস্ট কম খেলি। তাই টেস্টে ফিরে পারফর্ম করতেই হবে। ঘুরেফিরে আমাকে পারফর্ম করতেই হবে।’ মুমিনুল যে টেস্ট ক্রিকেট দিয়েই সব জয় করতে চান, সেটিও বুঝিয়ে দিলেন, ‘অন্য ফরম্যাট নিয়ে আপাতত চিন্তা করছি না। যেভাবে আমাকে টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে ওয়ানডেতে ঢুকতে হলে আমার আগে টেস্টে ভাল খেলতে হবে। ওই জায়গাটা স্ট্রং রেখে আমাকে অন্য ফরম্যাটের কথা চিন্তা করতে হবে। আমার কাছে মনে হয় আমি যদি টেস্টে খুব ভাল পারফর্ম করি তাহলে ভবিষ্যতে কোচ ও নির্বাচকরা যদি চিন্তা করে তাহলে ওয়ানডের কথা বিবেচনা করবে। আগে টেস্ট তারপর...।’ টেস্টে মুমিনুল এতটাই ভাল খেলেছেন যে ডন ব্র্যাডম্যানের পরেই গড়ের দিক দিয়ে মুমিনুলের অবস্থান হয়েছিল। কিন্তু মুমিনুল এখনই ব্র্যাডম্যানের সঙ্গে কোন তুলনা পছন্দ করেন না, ‘না এই জিনিসটা ভাল লাগে না। খারাপ লাগে। এখনই আমি এমন কিছু করিনি যে ওনার সাথে তুলনা করতে হবে।’ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা হবে দেশের মাটিতে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ইতিবাচক ফল বের করা সম্ভব বলেই মনে করছেন মুমিনুল। কারণ, এখন সাকিবের সঙ্গে আছেন মুস্তাফিজও। মুমিনুল তাই বললেন, ‘আমাদের দেশের কন্ডিশনে আমরা খুব ভাল দল। ইংল্যান্ড যদি আমাদের দেশে এসে খেলে তাহলে পজিটিভ ফল কিছু আশা করতে পারি। আমাদের এখন মুস্তাফিজ আছে, সাকিব ভাই আছে। আমাদের একটা ভাল লেগ স্পিনার থাকলে অনেক ভাল হত। ওয়ানডের মতো আমরা টেস্টে অতটা ভাল না। হয়ত একটু সময় লাগবে। এই কন্ডিশনে আমরা আপাতত পারব।’
×