ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গোলটেবিলে বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রশ্ন

জঙ্গীবিরোধী ঐক্য গড়তে বিএনপি-জামায়াতকে লাগবে কেন

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৪ জুলাই ২০১৬

জঙ্গীবিরোধী ঐক্য গড়তে বিএনপি-জামায়াতকে লাগবে কেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ‘ভেজাল আছে’ অভিযোগ তুলে জঙ্গী দমন অভিযানে সাফল্য পেতে প্রশাসনেও শুদ্ধি অভিযান চালাতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা। গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলার বিষয়ে শনিবার সম্মিলিত নাগরিক সমাজ আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে সরকারকে এ পরামর্শ দিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে তারা প্রশ্ন তুলেছেন, জঙ্গীবিরোধী ঐক্যে বিএনপি-জামায়াত কেন আসবে? এদিকে আহমদীয়া মুসলিম জামাত বাংলাদেশ আয়োজিত সভায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, বাংলাদেশ এই মুহূর্তে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। জঙ্গী-সন্ত্রাসীরা দেশের বিরুদ্ধে, মানবতার বিরুদ্ধে, সমাজের বিরুদ্ধে ও ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে। এই যুদ্ধে হারা যাবে না। জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্মিলিত নাগরিক সমাজ আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গবর্নর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুর রশিদ, জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি শফিকুর রহমান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম হামিদ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল হেলাল মোর্শেদ খান, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক একেএম নূর-উন-নবী, ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি একেএমএ হামিদ, অধ্যাপক হান্নানা বেগম ও তৌহিদ রেজা নূর প্রমুখ। ‘সন্ত্রাস জঙ্গীবাদ ও বিপথগামী তারুণ্য : প্রতিরোধ ও প্রতিকার’ শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সম্মিলিত নাগরিক সমাজের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। হতাশা থেকে সমাজের উচ্চবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণীর সন্তানরা জঙ্গীবাদে জড়াচ্ছে বলে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন তিনি। বলেন, এক শ্রেণীর মাদ্রাসা ও দরিদ্র পরিবার থেকে যারা জঙ্গী হয়, তারা হয়ত সে পথে যায় ইহজাগতিক ভবিষ্যৎ সম্পর্কে হতাশা ও বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠন থেকে উজ্জ্বল আখেরাত সম্পর্কে মন্ত্রণার কারণে। আর আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ধনিক শ্রেণীর যুবকরা যায় সম্ভবত অন্য এক ধরনের হতাশার কারণে, যা ওই শ্রেণীর মানুষদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান শিথিল পারিবারিক বন্ধন ও অসৎ সঙ্গ থেকে উৎসরিত। জঙ্গী উস্যুতে বেফাঁস বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যাদের যে দায়িত্ব নয় তাদেরও বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী বক্তব্য রাখতে শোনা যায়। এটি কাম্য নয়। এক্ষেত্রে সমন্বয় প্রয়োজন। ইসলামের অপব্যাখ্যা ও বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে কিছু মানুষকে বিপথগামী করে জঙ্গী করা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। খলীকুজ্জমান বলেন, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত সংঘটিত সন্ত্রাসী কর্মকা-সমূহ দেশীয় জঙ্গীরা ঘটিয়েছে। দেশে জেএমবি ও হিযবুত তাহরির নিষিদ্ধ হলেও এখনও তৎপর রয়েছে। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাদক ও জঙ্গী সংশ্লিষ্টতা ঘটেছে কিনা সে দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনায় ইতিহাস বিকৃতির প্রসঙ্গ তুলে জঙ্গী দমন অভিযানে সাফল্য পেতে প্রশাসনেও শুদ্ধি অভিযান চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনায় মুুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পদেও একজন কীভাবে লুকিয়ে ছিল! এত বড় পদে এরকম একজন যদি থাকতে পারে, তাহলে পুলিশ-টুলিশে তো ভর্তি। গোয়েন্দা ও পুলিশে ভেজাল আছে। সে জন্য জঙ্গীদের জন্য যে গোয়েন্দা ও পুলিশের ব্যবস্থা করা হবে, সেখানে কেউ অসৎ হতে পারবে না। বাংলাদেশের প্রতি দায়বদ্ধতা প্রশ্নাতীত হতে হবে। এরপর তুরস্কের সাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত টেনে এনে শুদ্ধি অভিযানের পরামর্শ দেন কৃষি ব্যাংকের সাবেক এ চেয়ারম্যান। বলেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট একটা বিপ্লব করতে চান, হয়ত উদ্দেশ্য ভাল না। হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে দিচ্ছেন। আমি সেই সাজেশন্স দিচ্ছি না। তবে আমাদেরও একটা পথ বের করতে হবে। পুলিশ, সিভিল সার্ভিস, আর্মি থেকে এরকম হাজার মানুষকে বের করে দিতে হবে। দরকার হলে পেনশন দিয়ে বাড়িতে রাখেন। খেয়ে-পরে বাঁচুক। তারপরও চাকরিতে থাকবে না। সরকার কি এই কাজটি করতে পারবে। সাম্প্রতিক জঙ্গী হামলার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত শব্দবন্ধ ‘জাতীয় ঐক্য’ নিয়েও কথা বলেন ইব্রাহীম খালেদ। বিএনপি-জামায়াত ছাড়া জাতীয় ঐক্য হবে না বলে যারা দাবি করছেন, তাদের সমালোচনাও করেন তিনি। ইব্রাহীম খালেদ বলেন, আমাদের কিছু সুধীজন, একটি মহল বারবার বলছেন, বিএনপি-জামায়াত নাকি ৪০ ভাগ ভোটের অধিকারী। সেই জন্য তাদের বাদ দিয়ে নাকি জাতীয় ঐক্য হবে না। বাঙালী জাতির হাজার বছরের সবচেয়ে কঠিন জাতীয় ঐক্য একাত্তরে হয়েছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, এর পূর্বের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মোট কাস্টিং ভোটের ৭০ ভাগ পেয়েছিল। বাকি ৩০ ভাগ ভোট মুসলিম লীগ ও জামায়াত পেয়েছিল। তখন তো আমরা শুনিনি, দ্বিতীয় বৃহত্তম দলকে সঙ্গে না নিলে জাতীয় ঐক্য হবে না। এই দুই দলকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্য করতে চাইলে কি মুক্তিযুদ্ধ হতো? একাত্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কেন্দ্র করে জাতীয় ঐক্য হয়েছিল মন্তব্য করে এখন কেন বিএনপি-জামায়াতকে লাগবে সে প্রশ্নও তোলেন ইব্রাহীম খালেদ। বলেন, তখন আওয়ামী লীগও না, এক ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে জাতীয় ঐক্য হয়েছিল। তাহলে আজ বিএনপিকে লাগবে কেন? জামায়াতকে কেন প্রয়োজন হবে? গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের অভাবে সন্ত্রাস হচ্ছে’ বলে বিএনপিপন্থিদের অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, সন্ত্রাস ফ্রান্সে হয়েছে, বারবার হচ্ছে। সেখানে কি গণতন্ত্র নেই? মানবাধিকার নেই? গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের মূল জায়গা তো ফ্রান্স। জার্মানি, বেলজিয়াম, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাস হচ্ছে। এই সব জায়গায় কি গণতন্ত্র নেই? তাহলে সন্ত্রাস ও গণতন্ত্রের নেতিবাচক সম্পর্ক খোঁজা হচ্ছে কেন? উল্টোদিকে একদলীয় শাসনের চীন, ভোটাভুটির পর প্রায় একনায়কতন্ত্রের মতো করে চলা সিঙ্গাপুর, একটু অন্য ধরনের দেশ ইরান, যেখানে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নেই বলে আমেরিকা অভিযোগ করে, সেখানে তো সন্ত্রাস হয় না। বিএনপি-জামায়াতকে ক্ষমতায় আনার ‘কৌশল’ থেকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা বলা হচ্ছে বলে দাবি করেন ইব্রাহীম খালেদ। কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনও জাতীয় ঐক্যে বিএনপি-জামায়াতকে রাখা কেন প্রয়োজন- সে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, আজকে আমরা দেখি, রাজনীতির নামে অনেক খেলা চলে। আমরা দেখি, সরকারী রাজনীতি, বিরোধী রাজনীতি, অন্যান্য ছোট দল, শুধু ঐক্যের কথা বলে। কিন্তু কেউ বলে না, এই প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছি; জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে আমি এইভাবে কাজ করব। আপনি আপনার কর্মসূচী জানান। জঙ্গীবাদের উত্থানরোধে আপনার ভূমিকা নাগরিক সমাজকে, মানুষকে জানান। তাহলে হয়ত আমরা একটা পদক্ষেপের ভেতর দিয়ে এগিয়ে যাব। তিনি আরও বলেন, বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় না। শিশুদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিষয়ে শিক্ষা দেয়া হয় না। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস পড়ানো ও জাতীয় সঙ্গীত বাধ্যতামূলক করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলে শিশুরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে, জঙ্গী মনস্ক হবে না। নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ বলেন, জঙ্গীবাদ রাজনীতির একটি সস্তা হাতিয়ার। এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে ব্যবহৃত হচ্ছে। ’৭১-এর পরাজিত শক্তি, ক্ষমতালোভী, উগ্রবাদে বিশ্বাসী এক শ্রেণী ধর্মের নামে জঙ্গীবাদ করছে। যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঝিমিয়ে পড়ে তখন এ জঙ্গী হামলা হয়। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জঙ্গীবাদ রুখতে পারবে না, এজন্য সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারকে সেদিকে নজর রাখতে হবে। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম হামিদ বলেন, প্রলোভনের মাধ্যমে ধর্মের নামে মানুষ হত্যায় যুবকদের ব্যবহার করা হচ্ছে। শিশুদের গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নজরদারিতে রাখতে হবে। এদিকে ব্র্যাক সেন্টারে জঙ্গীবাদের উত্থানে নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক আহমদীয়া মুসলিম জামাত বাংলাদেশ আয়োজিত আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, বাংলাদেশ এই মুহূর্তে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। জঙ্গী-সন্ত্রাসীরা দেশের বিরুদ্ধে, মানবতার বিরুদ্ধে, সমাজের বিরুদ্ধে ও ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে। এই যুদ্ধে হারা যাবে না। অনুষ্ঠানে শিক্ষক নিরাপত্তা বিশ্লেষক, ধর্মীয় নেতাসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিন হাজার বছরের সংস্কৃতি, আট শ’ বছরের ইসলাম আর স্বাধীনতার মধ্য দিয়ে জন্ম নেয়া বাংলাদেশ ধ্বংস করতে চায় জঙ্গীরা। এই যুদ্ধে কারও নিরপেক্ষ থাকার সুযোগ নেই। জঙ্গীরা মানুষের ঐক্যে ভয় পায়। তাই তারা ঈদের জামাত, মেলা, উৎসব ও সিনেমা হলে হামলা চালাচ্ছে। এই যুদ্ধে জিততে হলে শুধু জঙ্গীদের নয়, তাদের পৃষ্ঠপোষকদেরও ধ্বংস করতে হবে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোও এই সমস্যায় হিমশিম খাচ্ছে। গুলশান, শোলাকিয়ায় আমরা হোঁচট খেয়েছি। কিন্তু আমরা হারব না। অন্যদিকে জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ) আয়োজিত আলোচনা সভায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অচিরেই জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং তাদের সম্পত্তি বাজেয়াফত করা হবে। সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড.আব্দুল মান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন স্বাশিপের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু । এছাড়া বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজিত রায় নন্দি, প্রফেসর সাজিদুল ইসলাম, এম এ করিম, অধ্যক্ষ শাহাদাৎ হোসেন রানা, উপাধ্যক্ষ হরিচাঁদ ম-ল সুমন, সাইদুর রহমান পান্না, অধ্যক্ষ সামছুল আলম, এ কে এম ওবাইদুল্লাহ প্রমুখ। মন্ত্রী আরও বলেন, যে আইএস নামধারী জামায়াত ও বিএনপি বর্তমান সরকারের অগ্রযাত্রাকে বিঘিœত করার লক্ষ্যে প্রতিহিংসা ও নাশকতামূলক কাজ করছে, মানুষ হত্যা করছে তাদের এই জঘন্য কর্মকা-ের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক দেশবাসী প্রতিবাদ মুখর হয়েছে। জঙ্গীবাদ নির্মূলে প্রয়োজনে পৃথক ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে। তিনি জঙ্গী তৎপরতার বিরুদ্ধে স্বাশিপের মাসব্যাপী কর্মসূচীর ভূয়সী প্রশংসা করে জঙ্গীবাদ দমনে সকল শিক্ষক সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
×