ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্নীতির বরপুত্র

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ২৪ জুলাই ২০১৬

দুর্নীতির বরপুত্র

অর্থ পাচারের মতো গুরুতর আর্থিক অপরাধে জড়িয়ে পড়েছিলেন তারা। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে অবস্থান করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছিলেন বিপুল অঙ্কের অর্থ। আবার সেই অর্থ বিদেশে পাচারও হয়েছে। সীমাহীন দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ গুরুতর অপরাধ কর্মে লিপ্ত ছিলেন তিনি এবং তার সহযোগীরা। ক্ষমতার দম্ভ তার নৈতিক অধঃপতন এতটাই ঘটিয়েছিল যে, বখরা না দিলে কারও পক্ষেই ব্যবসা-বাণিজ্য, নির্মাণ কাজসহ অর্থসংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা ছিল সেসময় কঠিন। বিশেষ ভবন বানিয়ে অবৈধ অর্থ আদায়ের সূতিকাগার গড়ে তোলা হয়েছিল। রাজনৈতিক ও ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর অবৈধভাবে অর্থ অর্জনের প্রবণতাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া হয়েছিল। খুব অল্প সময়ে ধনাঢ্যদের শীর্ষ তালিকায় ঠাঁই হয়েছিল তার ও তার ঘনিষ্ঠদের। এসবের মূলে একজনইÑ তারেক রহমান। বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে তারেক রহমানকে খালাস দিয়ে নিম্ন আদালত যে রায় দিয়েছিল সম্প্রতি উচ্চ আদালত তা বাতিল করে দেয়। হাইকোর্টের রায়ে বিএনপির এই শীর্ষ নেতার সাত বছরের জেল ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই প্রথম তার বিরুদ্ধে আনীত কোন মামলায় সাজা হলো। এই অর্থপাচারে সম্পৃক্ত থাকা ও পাচারে সহযোগিতা করার অভিযোগে আরও কয়েকজনের শাস্তি হয়। তারেক রহমান এখনও দৃশ্যত পলাতক আসামি। দেশের সংবিধান অনুযায়ী যে কোন নির্বাচনে অংশ নেয়ার অযোগ্য। এখন তাকে আইন অনুযায়ী নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং পরবর্তী পদক্ষেপগুলো আইনীভাবেই মোকাবেলা করতে হবে। একথা সবার জানা যে, নানা উপায়ে বিদেশে টাকা পাচার করা হয়ে থাকে। অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধেই প্রয়োজনীয় ও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া দরকার। অপরাধীদের দণ্ড নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচার কমে আসবে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এই রায় একটা দৃষ্টান্ত হিসাবে কাজ করবে। আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হয় এই রায় সেটাও প্রমাণ করে। এই কারাদ- ও আর্থিক জরিমানার রায়ে প্রমাণিত হলো এরা দুর্নীতির বরপুত্র। এই রায়ে আরেকটি বিষয় প্রমাণিত হলো, যে যত বড়ই হোক না কেন, আইন অমান্য করলে তাকে আইনের আওতায় আসতেই হবে। তবে সরকারের উচিত হবে সর্বাগ্রে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতে সোপর্দ এবং অন্যান্য মামলার নিষ্পত্তি করা। এই রায় দেশবাসীর মনে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে।
×