ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পার্বতীপুরে শিক্ষা উপকরণ নিয়ে বাণিজ্য

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ২৪ জুলাই ২০১৬

পার্বতীপুরে শিক্ষা  উপকরণ নিয়ে বাণিজ্য

নিজস্ব সংবাদদাতা, পার্বতীপুর, ২৩ জুলাই ॥ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বরাদ্দকৃত স্লিপের (স্কুল লার্নিং ইকুপমেন্ট) টাকায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা অভিনব ব্যবসা শুরু করেছেন। সূত্র মতে, এই উপজেলায় ২০৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা উপকরণ ক্রয়সহ টুকিটাকি কাজের জন্য বিদ্যালয় প্রতি ৪০ হাজার টাকা হিসাবে ৮২ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই টাকা সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির যৌথ স্বাক্ষরে সোনালী ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে খরচ করতে হবে বিদ্যালয়ভিত্তিক প্রণয়নকৃত বাজেট অনুযায়ী। তবে খরচের ভাউচার অনুমোদনের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে দাখিল করতে হবে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ৭টি ক্লাস্টারের মধ্যে ৫টি ক্লাস্টারের ১৭৮টি বিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষা অফিসাররা শিক্ষক নেতাদের সহযোগিতায় নিজেরাই চড়া দামে উপকরণ সরবরাহ করে ২০ লাখ টাকার মতো উপড়ি আয় করেছেন বলে জানা গেছে। সত্যতা যাচাইয়ের জন্য খয়েরপুকুরহাট ক্লাস্টারের ৩৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকদের কাছে জানতে চাইল। তারা জানান, খয়েরপুকুরহাট ক্লাস্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষা অফিসার তাদের প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করেছেন। সাউন্ড সিস্টেমের কথা বলে ঢাকা থেকে ৩ হাজার ৭৫০ টাকা দিয়ে কডলেসসহ সাউন্ড বক্স কিনে ৮ হাজার টাকা মূল্য ধরে ভ্যাটসহ ৯ হাজার টাকা, হোয়াইট বোর্ড ৯০০ টাকা পরিবর্তে ১ হাজার ৬শ’ টাকা, পেনড্রাইভ ৪শ’ টাকার স্থলে ৭৪০ টাকা, ডিজিটাল মনিটরিং বোর্ড ৯শ’ ৫০ টাকার স্থলে ১৬শ’ ৫০ টাকা ভাউচার মূলে আদায় করা হয়েছে। শিক্ষকরা নিরুপায় হয়ে এ অনিয়ম মেনে নিয়েছেন। এছাড়া নিজেরাই কারিকুলাম বই ছাপিয়ে ১২৫ টাকা, শিক্ষক ডায়েরি তৈরি করে ১২৫ টাকা, আব্রাহাম লিংকনের চিঠি, যোগ্যতা চার্ট এবং শিক্ষকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য চার্ট প্রিন্ট করে ১৮শ’ টাকা আদায় করা হয়। দক্ষিণ মধ্যপাড়া কমিউনিটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি জয়নাল আবেদিন জানান সহকারী শিক্ষা অফিসার আল সিরাজ তার প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করেছেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আখতারুল ইসলাম শনিবার দুপুরে জানান, সহকারী শিক্ষা অফিসারদের টেবিলে সাউন্ড বক্স ও ফাইল কেবিনেটে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষা সামগ্রী দেখে তাদের কাছে জানতে চেয়েছেন এগুলো এখানে কেন? সদুত্তর দিতে না পারায় স্টাফ মিটিং করে সকল সহকারী শিক্ষা অফিসারকে সতর্ক ও শোকজ করা হয়েছে। এডিপিও মোঃ সাইফুজ্জামান ইতোমধ্যেই পার্বতীপুরে এসে অভিযোগ সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন। তিনি বিষয়টি যাচাই করে দেখছেন বলে জানিয়েছেন।
×