ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রিও থেকে অ্যাথলেটিক্স পদক এ বার আসবেই

প্রকাশিত: ২০:১৪, ২৩ জুলাই ২০১৬

রিও থেকে অ্যাথলেটিক্স পদক এ বার আসবেই

অনলাইন ডেস্ক ॥ বিশ্বরেকর্ড ভেঙেও উড়ন্ত শিখ মিলখা সিংহ পারেননি। স্প্রিন্ট কুইন পি টি উষা অল্পের জন্য বঞ্চিত হয়েছিলেন পদক জয় থেকে। স্বাধীনোত্তর ভারতে অলিম্পিক্স অ্যাথলেটিক্সে কোনও পদক পাননি কেউই। রিওতে কি লেখা হবে নতুন ইতিহাস? উষা কয়েক দিন আগে দাবি করেছেন, গোটা তিনেক পদকের আশা করছেন। তাঁর বাজি টিন্টু লুকা, সুধা সিংহ এবং ললিতা বাবর। উষার মতোই আশাবাদী রিওগামী ভারতীয় অ্যাথলেটিক্স দলের চিফ কোচ বাহাদুর সিংহ। ‘‘আমাদের দলের কয়েক জনের সাম্প্রতিক যা আন্তর্জাতিক পারফরম্যান্স তাতে এ বার অলিম্পিক্স পদক আসবেই। বিশ্বের নানা অ্যাথলেটিক্স মিটের রেকর্ডের পাশাপাশি আমাদের দলের কয়েক জনের সময় বা দূরত্ব রেখে দেখেছি। আমি আশাবাদী।’’ বেঙ্গালুরু থেকে ফোনে বলে দিলেন নিজের কেরিয়ারে জোড়া এশিয়াড পদকজয়ী বাহাদুর। টিন্টু-দেবশ্রীদের চিফ কোচের আরও মন্তব্য, ‘‘আমি তো ওদের সবাইকে নিয়ে অনেক দিন ধরে কাজ করছি। এ বারের মতো শক্তিশালী অ্যাথলেটিক্স দল কখনও ভারত থেকে যায়নি অলিম্পিক্সে।’’ অলিম্পিক্সের ইতিহাসে এ বারই সবচেয়ে বড় দল রিওতে পাঠাচ্ছে ভারত। মোট ১২০ জন ভারতীয় ক্রীড়াবিদ নামবেন পনেরোটা ইভেন্টে। চার বছর আগে লন্ডন গেমসে গিয়েছিলেন ৮৩ জন। এ বার ছেলে এবং মেয়েদের হকি দল মিলিয়ে যাচ্ছেন ৩৬ জন। অ্যাথলেটিক্স দলেও আছেন সমসংখ্যক প্রতিযোগী। তাঁদের পিছনে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়েছে দেশে-বিদেশে ট্রেনিংয়ের জন্য। বিকাশ গৌড়ার মতো ছয়-সাত জন অ্যাথলিট তো এখনও বিদেশি ট্রেনিং নিচ্ছেন। মাঝে খবর ছড়ায় বিকাশের চোট লেগেছে। বাহাদুর অবশ্য বিরক্ত গলায় বললেন, ‘‘ওর সম্পর্কে কেউ কিছু জানায়নি আমাকে।’’ অলিম্পিক্সের যে ইভেন্ট ঘিরে সবচেয়ে উত্তেজনা আর আকর্ষণ তৈরি হয় সেই অ্যাথলেটিক্স থেকে পদক আনা কঠিনতম ব্যাপার। এ বার কেন্দ্রীয় সরকার এত টাকা খরচ করেছে বলেই কি বাহাদুর পদকের কথা শুনিয়ে রাখছেন? প্রশ্ন শুনে ফোনেই চটে যান দ্যুতিচাঁদদের কোচ, ‘‘পদক পাবই এ কথা কেউ কোনও দিন জোর দিয়ে বলতে পারে না। উসেইন বোল্ট-ও কি তিনটি ইভেন্টের প্রত্যেকটায় সোনা পাবে জোর দিয়ে বলতে পারবে? আমি তো বারবার বলছি এখানকার পারফরম্যান্সের উপর নির্ভর করে পদকের আশা করছি।’’ বাহাদুর কোন কোন অ্যাথলিটের উপর বাজি ধরছেন? লং জাম্পের অঙ্কিত শর্মা, ট্রিপল জাম্পের রঞ্জিত মাহেশ্বরী, তিন হাজার মিটার ট্রিপলচেজে ললিতা বাবর এবং সুধা সিংহের নাম বললেন তিনি। তবে তাঁর সেরা বাজি ছেলেদের ৪X৪০০ মিটার ভারতীয় পুরুষ রিলে টিম। ‘‘ওরা পদক পেতেই পারে,’’ জোর দিয়ে বললেন বাহাদুর। কিন্তু পিটি উষা বা বাহাদুর যে প্রায় অসম্ভব দাবি করছেন সেটা ভারতীয়দের পাশে বিশ্ব অ্যাথলিটদের বর্তমান র‌্যাঙ্কিং রাখলেই পরিষ্কার হয়ে যায়। র‌্যাঙ্কিং অনুযায়ী ট্রিপল জাম্পার রঞ্জিত মাহেশ্বরী ছাড়া আর কারও উপর সে ভাবে বাজি ধরা বোধহয় সম্ভব নয়। ট্রিপল জাম্পে বিশ্বে এখন সাত নম্বর রঞ্জিত। প্রথম তিনে থাকা এবং রিওতে ব্রোঞ্জ পদকের দাবিদার যিনি সেই মার্কিন অ্যাথলিট লাফাচ্ছেন ১৭.৬৫ মিটার। সেখানে রঞ্জিতের লাফ ১৭.৩০ মিটারের। তাঁকে ঘিরে তিরতিরে একটা আশা করা যেতেই পারে। বাকিদের যা অবস্থা তাতে অতিমানবিক কিছু না করতে পারলে ফাইনালে ওঠা সম্ভব নয়। যেমন সুধা সিংহ এবং ললিতা বাবরের র‌্যাঙ্কিং যথাক্রমে ১৭ এবং ১৮। দুই মেয়ে পদক পেলে সেটা অঘটনই হবে। আর লং জাম্পের অঙ্কিত শর্মা রিওতে নামবেন ২২ নম্বর হিসেবে। ছেলেদের ১৬০০ মিটার রিলেতে ভারতের অবস্থান ১৫ নম্বরে। তাই দেখার রিও থেকে বাহাদুরের দল কতটা বাহাদুরি দেখিয়ে ফিরতে পারে? কারণ দেশে যা-ই করে যান, অলিম্পিক্সের মতো বৃহত্তম মঞ্চে ভারতের বিশাল অ্যাথলেটিক্স দল কী করে তা নিয়ে আগ্রহ দেশজুড়ে। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×