ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গবেষণায় তথ্য

তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে বেশি লাভবান হচ্ছেন নারী চাষী

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ২৩ জুলাই ২০১৬

তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে বেশি লাভবান হচ্ছেন নারী চাষী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার ও অবাধ তথ্যপ্রবাহের কারণে নারীচাষীরা অধিক লাভবান হচ্ছেন। প্রযুক্তির সুফল ভোগ করছেন এমন নারীদের মধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে আত্মবিশ্বাস। স্মার্টফোন ব্যবহার করে তারা পাচ্ছেন কৃষিসেবাÑ কীটনাশকের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত ফসল কিংবা আকস্মিক কোন রোগে আক্রান্ত ফসলি জমির ছবি নির্দিষ্ট নম্বরে পাঠিয়ে দিলেই মিলছে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ। দেশে এভাবেই বৃদ্ধি পাচ্ছে ফসলের উৎপাদন, পরিবর্তন ঘটছে জীবিকায়নেও। শুক্রবার সকালে রাজধানীতে একটি ইংরেজী দৈনিকের কার্যালয়ে কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে একটি গবেষণার তথ্য উপস্থাপনকালে এ তথ্য জানানো হয়। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এ্যান্ড ওনারশিপ উইথ ইনফরমেশন এ্যান্ড চেঞ্জ (প্রতীক) : দ্য রোল অব পার’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারটি অক্সফাম, রিসার্চ ইনিশিয়েটিভস বাংলাদেশ ও মোনাশ ইউনিভার্সিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আয়োজকরা জানান, গবেষণা কার্যক্রমটি চলবে ৫ থেকে ৭ বছর, যার মূল উদ্দেশ্য চিন্তা জগতের পরিবর্তন। গবেষণার কেন্দ্রীয় লক্ষ্য মনস্তাত্ত্বিক, এর মাধ্যমে মানুষের মানবিক শক্তিকে জাগিয়ে তোলা সম্ভব হবে। সেমিনারে উপস্থাপিত ‘নারীর অংশগ্রহণ এবং তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার : অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারী কাঁকড়া চাষীদের সফলতা ও ভবিষ্যত সম্ভাবনা’ শীর্ষক নিবন্ধে বলা হয়Ñ ২০০৯ সালে আইলা নামক ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে মানুষের জীবন ও জীবিকা, পশুসম্পদ ও কৃষি ব্যবস্থা এবং পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় মানুষের জীবন-জীবিকায় পরিবর্তন ঘটেছে। শ্রমজীবী এবং গৃহকাজে নিয়োজিত অনেক নারীরা প্রযুক্তিগত কৌশল আয়ত্ত করে কাঁকড়া চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তা অনেক পরিবারের মুখ্য আয়ের উৎসে পরিণত হয়েছে। কাঁকড়া চাষে তথ্য ও প্রযুক্তিগত কৌশল আয়ত্ত করার ফলে নারীদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন সুশীলনের প্রকল্প সমন্বয়কারী উজ্জ্বল কুমার কর্মকার। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ হামিদুর রহমান বলেন, দেশের নারীদের নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে এনজিওগুলো পথিকৃৎ। পলিসি লেভেলে যারা কাজ করি প্রকৃতপক্ষে তাদের দৃষ্টি তৃণমূল পর্যায়ে তেমনভাবে পড়ে না। তাই এ গবেষণাটি অত্যন্ত কার্যকর প্রভাব ফেলবে বলে আমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, দানাজাতীয় খাদ্য উৎপাদনে আমরা এমন একটি অবস্থানে পৌঁছেছি, যা টিকিয়ে রাখাই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য। বর্তমানে বিদেশে আলু রফতানি হচ্ছে, দেশ ভুট্টা উৎপাদনেও পূর্বাপরের রেকর্ড অতিক্রম করেছে। এসব কিছুর পেছনে ছিল গবেষণা। তথ্যপ্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মোবাইল এ্যাপস দ্রুতই আমাদের জীবনধারা বদলে দিয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে ‘কৃষকের জানালা’, ‘কৃষকের ঠিকানা’ প্রভৃতি এ্যাপসগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে। সমস্ত উদ্যোগগুলো যদি সমন্বয় করতে পারিÑ যে স্বপ্নের দেশের কথা বলি তা বাস্তবায়ন করতে বেশি সময় লাগবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষক এমএম আকাশ বলেন, মৌলবাদী শক্তি দেশের নারীদের টার্গেট করছে, তাদের মধ্যে উদ্দেশ্যমূলক তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে। নারীদের নিয়ে মৌলবাদী শক্তির সঙ্গে আমাদের প্রতিযোগিতা অব্যাহত। আর এ গবেষণার মাধ্যমে নারীরা তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হবে।
×