এমন দিন দূরে নয় যখন মুভি থিয়েটারগুলো পর্দায় ছায়াছবি প্রদর্শনকালে বেআইনীভাবে সে ছবি তুলে নেয়া বন্ধের সহজতর উপায় খুঁজে পাবে। কারণ এ্যাপল কোম্পানিকে সম্প্রতি এক পেটেন্ট দেয়া হয়েছে যাতে করে বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে যে কোন ফোনের ক্যামেরা দূর থেকে অচল করে দেয়া যাবে।
প্রযুক্তিটা এমন যে একটা ডিভাইস থেকে ইনফ্রারেড রশ্মি রেবিয়ে আসবে। তাতে সাংকেতিক উপাত্ত থাকবে। সেই উপাত্তের মধ্যে সাময়িকভাবে ক্যামেরা বন্ধের কমান্ড থাকবে। তার ফলে ফটো ও ভিডিওর কাজটা বন্ধ হয়ে যাবে। এই পেটেন্ট কনসার্ট, মুভি থিয়েটার ও অন্যান্য স্পর্শকাতর জায়গায় পাইরেসি বন্ধের কাজে ব্যবহার করা যাবে। কাছাকাছি ডিভাইসগুলোতে ইনফ্রারেড এমিটারের কমান্ড বয়ে নিয়ে পৌঁছে দেয়ার এই ক্ষমতার কারণে এই প্রযুক্তি অন্যান্য কাজেও ব্যবহার করার সুযোগ আছে। পেটেন্ট ফাইলিংয়ে জাদুঘরেও এই প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ আছে। জাদুঘরের প্রদশর্নীস্থলের কাছে রাখা ইনফ্রারেড এমিটার থেকে রশ্মি তরঙ্গ রেবিয়ে এসে দর্শকের ফোনে পৌঁছে যাবে এবং প্রদর্শিত বস্তু বা চিত্রকর্ম সম্পর্কে আরও অনেক তথ্য পরিবেশন করবে।
ব্যক্তিগত ফোনে দূর থেকে কমান্ড পৌঁছে দেয়ার এমন প্রযুক্তি কিছু কিছু প্রাইভেসি বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উদ্বেগের সঞ্চার ঘটিয়েছে। তাদের আশঙ্কা এই প্রযুক্তি অন্যান্য কাজেও ব্যবহার করা যাবে যা আকাক্সিক্ষত নয়। ইলেকট্রনিক ফ্রন্টিয়ার ফাউন্ডেশন নামে ডিজিটাল এডভোকেসি গ্রুপের মুখপাত্র পার্কার হিগিনস বলেন, এ ধরনের প্রযুক্তির অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। স্থানীয় রাজ্য ও জাতীয় পর্যায়ের সরকারগুলো বেশ আগে থেকেই রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে কোন নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পক্ষে বলে আসছিল এমন প্রযুক্তির ব্যবহার অবশ্য আগেও দেখা গেছে যেমন ফার্গুগনের দাঙ্গার সময় পুলিশ নো-ফ্লাইন জোন ঘোষণা করে মিডিয়াকে বিমান থেকে কোন ছবি নিতে দেয়নি। কিংবা মিসরের কথাই ধরা যাক। সেখানে স্বৈরাচারবিরোধী বিক্ষোভের সময় এক পর্যায়ে সরকার সেলফোন সার্ভিস বন্ধ করে দিয়েছিল। সমালোচনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের এমন পদক্ষেপ নেয়ার প্রবণতা নতুন কিছু নয়।
ইনফ্রারেড ব্যবস্থার অধিকার লাভের জন্য এ্যাপল ২০১১ সালে আবেদন করেছিল। পরে এই প্রতিষ্ঠানকে ৫ বছরের জন্য পেটেন্ট দেয়া হয়। এ সময় এ্যাপল আই বীকনস্ নামে অনুরূপ ধরনের ড্যাটা ট্রান্সমিশন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে শুরু করে। আই বীকনস্ ব্লুট্্রুথের কাজের শক্তি যোগায় এবং ব্যবহারকারীদের তাদের ফোনের মাধ্যমে সাউন্ড সিস্টেম নিয়ন্ত্রণের সুযোগ দেয়। তবে ব্লুট্রুথের তুলনায় ইনফ্রারেডকে আজ সেকেলে বলে মনে হতে পারে।
সূত্র ॥ ওয়াশিংটন পোস্ট ষ অনুবাদ ॥ এনামুল হক
শীর্ষ সংবাদ: