ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোঃ কামরুল ইসলাম

ড্রোন উড্ডয়ন সমস্যার সমাধান

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ২৩ জুলাই ২০১৬

ড্রোন উড্ডয়ন সমস্যার সমাধান

উড্ডয়ন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা ড্রোন আবিষ্কারের প্রথম থেকেই খুব উদ্বিগ্ন। কারণ একই আকাশে মানুষবিহীন ড্রোন এবং মানুষচালিত বিমান ও হেলিকপ্টার উড়তে থাকলে শতভাগ নিরাপত্তা কখনই হবে না। কোনভাবে যদি ক্ষুদ্র ড্রোন কোন বিমানের ইঞ্জিনে ঢোকে বা কোন হেলিকপ্টারের রোটর ব্লেডে একবার ধাক্কা খায় তাহলে সেটা অনেক বড় ধ্বংসযোগ্য হবে। ‘অটো পাইলট’ প্রযুক্তি উড্ডয়ন জগতে বিপ্লব ঘটালেও প্রথমে এমনটা হয়েছিল। পাইলট তখন বিমান আকাশে নিয়ে একটা নির্দিষ্ট উচ্চতায় এবং দিকে বিমানের গতি ঠিক করে ‘অটো পাইলট’ এর ওপর সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব দেয়া শুরু করে। আর তখনই ঘটতে থাকে বড় বড় দুর্ঘটনা। কারণ শূন্য আকাশে উড্ডয়ন খুব সহজ মনে হলেও শূন্য আকাশের পরিবেশ খুব ঘন ঘন পরিবর্তনশীল। আর তাই পাইলট যখনই নিজের এই পরিবর্তনশীল পরিবেশে উড্ডয়নের দায়িত্ব ‘অটো পাইলট’ কে শতভাগ দিতে গেল তখনই দুর্ঘটনাগুলো ঘটল। অনেক গবেষণার পরে উড্ডয়ন জগতের সকলকে এ বিষয়ে শিক্ষিত করার মাধ্যমে অটোপাইলট আবিষ্কারের ঝুঁকি কমেছে। আকাশে উড্ডয়নের সময় সকল বিমান ও হেলিকটপ্টার একজন আর একজনের সঙ্গে এবং সবাই কন্ট্রোল টাওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা বাধ্যতামূলক। সেই সঙ্গে সকল উড্ডয়নরত বিমান ও হেলিকপ্টার রাডার কর্তৃক মনিটর করা হয়। কিন্তু ড্রোন পাইলট কোনভাবেই ড্রোনের অবস্থান টাওয়ার বা অন্য বিমানকে জানাতে পারে না। ফলে বিমান বা হেলিকপ্টার পাইলট চাইলেও ড্রোনকে নিরাপদ দূরত্বে বা উচ্চতায় রেখে নিরাপদে উড্ডয়ন করতে পারে না। রাডার ডিটেক্ট করতে পারবে এমন কোন ফ্রিকোয়েন্সি সাধারণ ড্রোন থেকে যেহেতু বের হয় না সেহেতু রাডারও এ ব্যাপারে কোন সাহায্য করতে পারে না। আর ড্রোন উড্ডয়নকারীরা সাধারণত হাজার ঝামেলা মোকাবেলা করে তাদের ড্রোন উড্ডয়নের তথ্য কন্ট্রোল টাওয়ারকে পূর্ব থেকে জানাতে চায় না। শুধু আমেরিকাতে ২০১৫ সালে বিমানের পাইলট কর্তৃক আনুমানিক ৭৬৪টি ড্রোন দেখার বা ঝুঁকিপূর্ণ দূরত্বে চলে আসার ঘটনা ঘটে। ‘এমতাবস্থায় আমেরিকার শূন্য আকাশে ড্রোন কোন বিমান ও হেলিকপ্টার উড্ডয়ন নিরাপত্তাজনিত সমস্যা ঘটাতে পারবে না, যদি ড্রোন উড্ডয়নকারীদের সচেতন করা যায় এবং ডিজিটাল নোটিশ এ্যান্ড এ্যাওয়ারনেস সিস্টেম (উ-ঘঅঝ) এর ব্যবহার বাড়ানো যায়।’ একথা বলেন মডেল এ্যারোনেটিক্স একাডেমির সমন্বয় কমিটির সদস্য রিচ্ হ্যানসন। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে মডেল এ্যারোনেটিক্স একাডেমি, ফেডারেল এভিয়েশন অথারিটির সমন্বয়ে ‘উড্ডয়নের পূর্বে জানো’ শীর্ষক এক ক্যাম্পেনের আয়োজন করে, যেখানে ড্রোন উড্ডয়নকারীদের নিরাপত্তার বিষয়ে জ্ঞান দেয়া হয় এবং নিরাপদ উড্ডয়নের কিছু নির্দেশিকা প্রদান করা হয়। ঠিক তার ফলস্বরুপ আমেরিকাতে ২০১৫ সালে ১.১৪ মিলিয়ন ড্রোন বিক্রি হয় যা ২০১৪ সালে ছিল মাত্র ৪,৫০,০০০ ড্রোন। কনজ্যুমার টেকনোলজি এ্যাসোসিয়েশনের ধারণা ২০১৬ সালে এই পরিমাণ দাঁড়াবে ২.৮ মিলিয়ন। অপরদিকে আমেরিকার হাটসন এয়ারপোর্টের নিরাপত্তা ও ঝুঁকি ম্যানেজমেন্ট কর্মকর্তা স্টিভ রঞ্জ বলেন যে ড্রোনে ডিজিটাল নোটিশ এবং এ্যাওয়ারনেস সিস্টেম (উ-ঘঅঝ) সংযোজন করে যদি অপারেটিং রেডিয়াস ঠিক করে দেয়া যায় বা ম্যাপের কোন অংশে কত উচ্চতায় উড্ডয়ন করবে সেটা ঠিক করে দেয়া যায় আর সেই তথ্য সয়ংক্রিয়ভাবে রাডারে দেখাতে থাকে তাহলেই মাত্র নিরাপদ উড্ডয়নের স্বপ্ন পূরণ হবে। নিচের ছবিতে রাডারের স্ক্রিন শট দিয়ে বিষয়টা বোঝানো হলো।
×