ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থ প্রেরণে সতর্কতা অবলম্বন জরুরী

জঙ্গী হামলা ঘটনায় বাংলাদেশ ভ্রমণে প্রভাব পড়েনি

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২৩ জুলাই ২০১৬

জঙ্গী হামলা ঘটনায় বাংলাদেশ ভ্রমণে প্রভাব পড়েনি

মাহফুজুর রহমান, নিউইয়র্ক থেকে ॥ ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ ও ঈদের দিন শোলাকিয়ার ঈদ জামাতের কাছে জঙ্গী হামলার ঘটনায় বাংলাদেশের মতো প্রবাসের লাখ লাখ বাংলাদেশী হতভম্ব হয়েছিলেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে ইসলামের নামে জিম্মি করে মানুষ হত্যার মতো ঘটনা ঘটবে এটা দেশেও যেমন কেউ ভাবেননি প্রবাসীরাও তেমনিই কল্পনা করেননি। দেশের এমন পরিস্থিতির মাঝেই নিউইয়র্কসহ আমেরিকায় শুরু হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গ্রীষ্মের ছুটি- ছুটিকে সামনে রেখে প্রতিবছরের মতো এবারও বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশী পরিবার নিয়ে দেশে বেড়াতে যাবেন আপনজনের সঙ্গে সময় কাটাতে। অনেকেই আবার সুযোগ হওয়াতে কোরবানির ঈদও দেশে করবেন বলেছেন। গুলশান ও শোলাকিয়ার ঘটনার অব্যবহিত পরেই বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিচলিত হয়ে পড়েন অনেকেই। এরই মাঝে স্টেট ডিপার্টমেন্ট আমেরিকার নাগরিকদের বাংলাদেশে ভ্রমণে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ জারি করে। এমন অবস্থায় ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলোও আশঙ্কা করেছিল যে অগ্রিম টিকেট যারা কেটেছেন দেশে যেতে তাদের মধ্যে অনেকেই হয়ত তা বাতিল করবেন। কিন্তু গুলশানের ঘটনার পর দুই-তিন দিনে কেউ কেউ যাত্রা বাতিল করেন বলেও জানা যায় কিন্তু শেষ পর্যন্ত গ্রীষ্মের ছুটিতে দেশে যাওয়ার প্রবণতায় বড় কোন ব্যত্যয় ঘটেনি। জ্যাকসন হাইটস ও অন্যান্য এলাকার বাংলাদেশী ট্র্যাভেল এজেন্সিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বিশেষ সামার সেলের টিকেট অনেক আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। এখন আর সেই সুযোগ নেই, কিন্তু এ মুহূর্তে স্বাভাবিক মূল্যে ১৪/১৫শ’ ডলারে টিকেট কেটেও অনেকেই দেশে যাচ্ছেন। কিন্তু চাহিদা থাকা সত্ত্বেও রিটার্ন টিকেটের দুষ্প্রাপ্যের জন্য অনেকেই দেশে যাবার সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। আর তাই ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলোতে এ মুহূর্তে তেমন ভিড় নেই যাত্রীদের। এদিকে জঙ্গী অর্থায়নে প্রবাসীদের অর্থ প্রবাহ বাংলাদেশ সরকার গুরুত্বের সঙ্গে মনিটরিং করছে গুলশান ট্র্যাজেডির পর। মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের কোন কোন দেশ থেকে বাংলাদেশে জঙ্গীগোষ্ঠীর কাছে অর্থ সরবরাহের তথ্য আগেই ফাঁস হয়েছিল। আমেরিকার কোন কোন জামাতপন্থী সংগঠন এবং জঙ্গীবাদ বিস্তারে ব্যক্তিগতভাবে কেউ কেউ অর্থ দিয়ে সহায়তা করে থাকলেও তারা সরাসরি ব্যাকিং চ্যানেল ব্যবহার করেন না তাদের এই অপকর্মের জন্য। কিন্তু সাধারণ প্রবাসীর অনেকেই দেশে তাদের আত্মীয়স্বজনের কাছে ভালবাসা ও দায়িত্ববোধের কারণে নিয়মিত অর্থ পাঠান। তাদের প্রেরিত অর্থ স্বজনরা কোথায়-কিভাবে ব্যবহার করছেন, তা তারা জানেন না। কিন্তু গুলশান ঘটনার পর এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন জরুরী হয়ে পড়েছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তারা বলছে Ñআপনার প্রেরিত অর্থ যদি কোন দেশবিরোধী কাজে ব্যবহৃত হয় তার দায়দায়িত্বও চলে আসবে আপনার ওপর। আর তাই এ বিষয়ে সবাই সাবধান হয়ে অর্থ পাঠাবেন, এমনটা বলছে অভিজ্ঞমহল।এছাড়াও আমেরিকার প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট বিভাগও সব ইমিগ্র্যান্ট কমিউনিটির রেমিটেন্স প্রবণতা পর্যবেক্ষণ করছে গভীরভাবে। আর তাই বড় অঙ্কের অর্থ পাঠানোর সময় সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত সবার। তা না হলে অযথা হয়রানির মুখোমুখি হতে পারেন যে কেউ।
×