ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কোন কাজেই আসছে না রাজধানীর বর্জ্য

প্রকাশিত: ০৪:২০, ২৩ জুলাই ২০১৬

কোন কাজেই আসছে না রাজধানীর বর্জ্য

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গ্যাস, বিদ্যুত ও সার তৈরির বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও রূপান্তর প্রক্রিয়ার অভাবে তেমন কোন কাজেই আসছে না রাজধানীর বর্জ্য। সিটি কর্পোরেশন শতকরা ৬০ ভাগ বর্জ্য ফেললেও বাকিগুলো বিভিন্নভাবেই অপব্যবহার কিংবা পরিবেশের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছাই পারে পরিত্যক্ত এ উপাদানগুলোকে সম্পদে পরিণত করতে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের দাবি, আগামী তিন মাসের মধ্যেই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে। ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকার বাসাবাড়ি, অবকাঠামো, বিপণিবিতান, হাটবাজারসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক স্থান থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে আট হাজার টন বর্জ্য তৈরি হয়। প্রাথমিক বাছাইয়ের পর প্লাস্টিক, পলিথিন ও কাগজসহ কিছু সামগ্রী চলে যায় পুনঃপ্রক্রিয়াজাত হতে। কিন্তু বিপুল অংশ থেকে যায় পরিত্যক্ত হিসেবেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অংশই সম্পদে পরিণত হতে পারে। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান বলেন, সিটি কর্পোরেশন যেটা করছে সেটা পরিবেশ সম্মত না। সিটি কর্পোরেশন বা সরকারের নীতি-নির্ধারক যারা তারা যদি এটাকে সেভাবে তুলে ধরতে পারে তাহলে এখন আমরা কুইক রেন্টাল থেকে যে খরচে বিদ্যুত উৎপাদন করছি তারচেয়ে এখান থেকে বিদ্যুত উৎপাদন খরচ কম পড়বে। তাই আমার মনে হয়, বর্জ্য থেকে বিদ্যুত উৎপাদনের বিষয়টা গুরুত্বসহকারে দেখার দরকার। সিটি কর্পোরেশনের মন্তব্য হলো, নাগরিক দুর্ভোগ কমাতে ও পরিবেশ দূষণ রোধ করতে বর্জ্য অপসারণই প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা হাসিবুর রহমান মানিক বলেন, বর্জ্য থেকে আমরা গ্যাস উৎপাদন করতে পারি, এছাড়া অন্যান্য আয়ের উৎস হতে পারে। কিন্তু এটার জন্য বড় প্রকল্প দরকার। এটা করতে গেলে অনেক টাকার দরকার। সরকার যদি সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে সেটা করতে পারবে। বিদেশী সংস্থা এলে তারাও করতে পারবে। ইতোপূর্বে জার্মান ও কানাডাসহ কয়েকটি দেশী-বিদেশী প্রতিষ্ঠান বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য আগ্রহ জানালেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তবে, সম্প্রতি নতুন করে উদ্যোগ নেয়ার কথা জানায় নগর কর্তৃপক্ষ। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন বিপন কুমার সাহা বলেন, একটা পদ্ধতির মাধ্যমে আমাদের এগিয়ে যেতে হয়। আমরা অনেকদূর এগিয়েছি। আশা করছি আমরা দুই-তিন মাসের মধ্যে একটা ফল পাবব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন কমপক্ষে তিন শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের উপাদান রাজধানীর বর্জ্য থেকেই পাওয়া সম্ভব।
×