ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মার্কিন রিপাবলিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের ফিনালে ভাষণে ট্রাম্প

দেশকে নিরাপদ করার অঙ্গীকার

প্রকাশিত: ০৪:১১, ২৩ জুলাই ২০১৬

দেশকে নিরাপদ করার অঙ্গীকার

রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে শেষ হলো তার ১৩ মাসের মনোনয়ন লড়াই। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ড শহরে অনুষ্ঠিত রিপাবলিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের শেষ দিনে তিনি তার সম্ভাব্য প্রশাসনের রূপরেখা তুলে ধরেছেন। ট্রাম্প আমেরিকাকে ফের নিরাপদ করার, অভিবাসী আগমন নিয়ন্ত্রণ, ওবামাকেয়ার বিলুপ্ত, আইনের শাসন, প্রতিষ্ঠা, ন্যাটো ও নাফটাকে অগ্রাহ্য করার কথা বলেছেন। আগামী ৮ আগামী নবেম্বর দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। খবর এএফপি ও এবিসি অনলাইনের। নিউইয়র্ক বিলিয়নিয়ার ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে পার্টির মনোনয়ন গ্রহণ করে বলেন, ‘আমেরিকা এখন সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। এ দেশের মানুষ ভাবতে শুরু করেছে তারা হেরে যাচ্ছে। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন ক্ষমতায় এলে দেশকে পুনরায় নিরাপদ ও অভিবাসীদের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করবেন। ট্রাম্প বলেন, (প্রতিপক্ষ দলে প্রার্থীর দিকে ইঙ্গিত করে) এখন সময় এসেছে হিলারি ক্লিনটনের মৃত্যু, ধ্বংস, সন্ত্রাস ও দুর্বলতার রেকর্ড থেকে দেশকে মুক্ত করার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে হিলারি এসব নজির রেখে গেছেন বলে ট্রাম্প মনে করেন। ট্রাম্প মনে করেন, দেশ এখন যে সঙ্কটে পড়েছে প্রচলিত ধারার রাজনীতি তাকে উদ্ধার করতে পারবে না। তিনি রাজনীতির ধারা পাল্টে ফেলার প্রতি তার অবস্থান তুলে ধরেন। রিপাবলিকান দলের অনেক বড় বড় নেতা জাতীয় কনভেনশনের সমাপনী ভাষণে অনুপস্থিত থেকে ট্রাম্পের প্রতি তাদের অসন্তোষ ব্যক্ত করেন। ভাষণের শুরুতে ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করার জন্য আপনাদের মনোনয়ন আমি বিনয় ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে গ্রহণ মনে করছি। ঐক্যবদ্ধভাবে দলকে আমরা হোয়াইট হাউসে নিয়ে যাবে। আমি আপনাদের যে বার্তাটি দিতে চাই তা হলো দেশে অপরাধ ও সহিংসতা যেভাবে মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে তার অবসান ঘটাতে হবে। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে তা শুরু হবে।’ উপস্থিত রিপাবলিকান নেতাকর্মীরা এ সময়ে ‘ইউএসএ ইউএসএ’ ধ্বনি দিয়ে বক্তৃতাস্থল মুখরিত করে তোলেন। যেমনটা ধারণা করা হয়েছিল এই ভাষণে ট্রাম্প তার প্রশাসনের নীতিমালা কি হতে পারে সে ব্যাপারে বিশদ কিছু বলেননি। ভাষণটি শুনলে মনে হয় ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীই ছিলেন তার আক্রমণের একমাত্র লক্ষ্য। ট্রাম্প বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে হিলারি দেশকে ‘মৃত্যু’ ও ‘ধ্বংস’ ছাড়া আর কিছু দিতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য ১৫ বছর ধরে যুদ্ধ চালানোর কি ফল আমরা পেলাম? ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার অপচয় এবং হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু। পরিস্থিতি ১৫ বছর আগে যা ছিল এখন তার চেয়ে খারাপ।’ নবেম্বরের নির্বাচনে হিলারিকে হারাতেই হবে। দেশে জাতিগত বিভক্তি উস্কে দেয়ার জন্য তিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে দায়ী করেন। ট্রাম্প মনে করেন, আমেরিকা দিনের পর দিন যে রকম অনিরাপদ ও অনিশ্চিত হয়ে উঠছে তার জন্য বহুলাংশে দায়ী ওবামার রাজনৈতিক বাগাড়ম্বর। রিপাবলিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সমাপনী অনুষ্ঠান দলের অনেক সিনিয়র নেতা বয়কট করেছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন, গত নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন পাওয়া মিট রমোনি ও বুশ পরিবারের সদস্যরা। বুশ পরিবারের দুজন সদস্য তিন মেয়াদে দেশটি ১২ বছর শাসন করেন। অভিবাসীদের দেশের জন্য একটি সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, তাদের জন্য একদিকে যেমন হাজার হাজার মার্কিনীর কর্মসংস্থান হচ্ছে না, অন্যদিকে এই অভিবাসীরা বিভিন্ন রকম অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। অনেকে মনে করেন, দলের মধ্যে বিভক্তি আনার জন্য ট্রাম্প প্রায়ই সমালোচনার মুখোমুখি হন। এর একটি জবাব তিনি এই ভাষণের মাধ্যমে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি বুঝিয়েছেন, প্রচলিত ধারার বাইরে বিকল্প ধাঁচের প্রার্থী হিসেবে তিনিই সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী।
×